শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন, ৭দিনেও মেলেনি প্রেমিকের দেখা

ময়মনসিংহের নান্দাইলে আলীউর(৩২) নামে এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে টানা সাত দিন ধরে অনশন করছে এক তরুণী(১৯)।

আলীউল নান্দাইল উপজেলার ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চামারুল্লাহ গ্রামের মোঃ শাহেদ আলীর পুত্র। আলীউল পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।

সরজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায়, বিয়ের দাবীতে অনশন করা যুবতী একই উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। সে উপজেলা সদরের একটি কলেজ থেকে গতবছর এইচ.এস.সি. পাশ করেছে।

বিয়ের দাবীতে অনশণ করা তরুণী গণমাধ্যমকে জানায়, সাত দিন ধরে প্রেমিক আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিলো। গত চার মাস পূর্বে রং-নাম্বারে ও ফেইসবুক এর মাধ্যম পরিচয় হয় একে অপরের সাথে। পরিচয় থেকে প্রেম।

এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে করে আলীউল ও তরুণী।

এই ঘটনার পর থেকেই মেয়েটি আলীউল কে বারবার বিয়ে করার তাগিত দিতে থাকলে। এক পর্যায়ে একাধিক বার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত চার মাসে প্রতারক প্রেমিক আলীউর একাধিকার ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয় বলে জানায় ভিকটিম তরুণী।

সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অন্তরঙ্গ সময় কাটায় আলীউল ও তরুণী। ভুক্তভোগী তরুণী আরও জানায়, গত ২৫ তারিখের ময়মনসিংহ থেকে আসার ক’দিন পর থেকেই হঠাৎ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে আলীউর।

এমনকি ফোনেও তরুণীকে ব্লক করে । তারপর গত ১৭ আগষ্ট বিয়ের দাবীতে আলীউলের বাড়িতে এসেছিলাম। তখন আলীউরের পরিবারের লোকজন ও আরও কিছু লোকজন আমাকে জোর পূর্বক আলীউলের বাড়ি থেকে  তাড়িয়ে দেয় এবং আমার হাতে থাকা মোবাইল, যার মধ্যে আমার ও আলীউলের অনেক ছবি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো।

আমার ফোনটি আলীউল এর লোকজন জোর করে আমার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। আলীউর বাড়িতে আসলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে বলে আলীউলের পরিবার আমাকে জানায়। কিন্তু বেশ কয়েকদিন চলে গেলেও আলীউর বা তার পরিবারের লোকজন আমার সাথে কোন যোগাযোগ না করায়।

আমি গত ৩০ আগষ্ট থেকে আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম, চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূইয়ার নেতৃত্বে, স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিউর রহমান সেজু, ইউপি সদস্য শিহাব উদ্দিন রাসেল, ইউপি সদস্য খসরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ প্রায় হাজার খানেক মানুষের উপস্থিতিতে আলীউরের বাড়িতে সালিশ দরবার হয়।

সালিশ দরবারে উপস্থিত ছিল না অভিযুক্ত প্রতারক প্রেমিক আলীউর। সালিশ দরবারে উপস্থিত আলীউল এর বাবা সহ সকলের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় ভিকটিম তরুণীকে  ৫০ শতাংশ জমি সাফ-কাবলা লিখে দিয়ে বিয়ে করতে হবে আলীউরকে। শুক্রবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলীউরের কোন সন্ধান পাচ্ছে না বলে জানায় আলীউল এর বাবা শাহেদ আলী।

ফলে গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রেমিক আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিল উক্ত তরুণী। আলীউরের বড় ভাই আজিজুল ইসলাম জানান, দরবারিরা বাড়িতে এসে সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে কোথায় কি করেছে সেটা তো আমরা জানি না। তার সাথে যোগাযোগও করতে পারছি না।

মেয়েটি গত কাল পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করছিল। এ বিষয়ে আলীউল এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আলীউলের মুঠোফোনে কল দিলে আলীউল এর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়াযায়।
এবিষয়ে চন্ডিপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূইয়া জানান, বিষয়টি এখনো সমাধান হয়নি।

এবিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, ছেলের বড় ভাই থানায় অভিযোগ দিলে, গত কাল রাতে ১০.৩০ মিনিটের সময় মেয়েটিকে শাহেদ আলীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে, পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন, ৭দিনেও মেলেনি প্রেমিকের দেখা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩১:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

ময়মনসিংহের নান্দাইলে আলীউর(৩২) নামে এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে টানা সাত দিন ধরে অনশন করছে এক তরুণী(১৯)।

আলীউল নান্দাইল উপজেলার ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চামারুল্লাহ গ্রামের মোঃ শাহেদ আলীর পুত্র। আলীউল পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।

সরজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায়, বিয়ের দাবীতে অনশন করা যুবতী একই উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। সে উপজেলা সদরের একটি কলেজ থেকে গতবছর এইচ.এস.সি. পাশ করেছে।

বিয়ের দাবীতে অনশণ করা তরুণী গণমাধ্যমকে জানায়, সাত দিন ধরে প্রেমিক আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিলো। গত চার মাস পূর্বে রং-নাম্বারে ও ফেইসবুক এর মাধ্যম পরিচয় হয় একে অপরের সাথে। পরিচয় থেকে প্রেম।

এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে করে আলীউল ও তরুণী।

এই ঘটনার পর থেকেই মেয়েটি আলীউল কে বারবার বিয়ে করার তাগিত দিতে থাকলে। এক পর্যায়ে একাধিক বার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত চার মাসে প্রতারক প্রেমিক আলীউর একাধিকার ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয় বলে জানায় ভিকটিম তরুণী।

সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই ময়মনসিংহ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে অন্তরঙ্গ সময় কাটায় আলীউল ও তরুণী। ভুক্তভোগী তরুণী আরও জানায়, গত ২৫ তারিখের ময়মনসিংহ থেকে আসার ক’দিন পর থেকেই হঠাৎ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে আলীউর।

এমনকি ফোনেও তরুণীকে ব্লক করে । তারপর গত ১৭ আগষ্ট বিয়ের দাবীতে আলীউলের বাড়িতে এসেছিলাম। তখন আলীউরের পরিবারের লোকজন ও আরও কিছু লোকজন আমাকে জোর পূর্বক আলীউলের বাড়ি থেকে  তাড়িয়ে দেয় এবং আমার হাতে থাকা মোবাইল, যার মধ্যে আমার ও আলীউলের অনেক ছবি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো।

আমার ফোনটি আলীউল এর লোকজন জোর করে আমার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। আলীউর বাড়িতে আসলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে বলে আলীউলের পরিবার আমাকে জানায়। কিন্তু বেশ কয়েকদিন চলে গেলেও আলীউর বা তার পরিবারের লোকজন আমার সাথে কোন যোগাযোগ না করায়।

আমি গত ৩০ আগষ্ট থেকে আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম, চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূইয়ার নেতৃত্বে, স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিউর রহমান সেজু, ইউপি সদস্য শিহাব উদ্দিন রাসেল, ইউপি সদস্য খসরু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ প্রায় হাজার খানেক মানুষের উপস্থিতিতে আলীউরের বাড়িতে সালিশ দরবার হয়।

সালিশ দরবারে উপস্থিত ছিল না অভিযুক্ত প্রতারক প্রেমিক আলীউর। সালিশ দরবারে উপস্থিত আলীউল এর বাবা সহ সকলের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় ভিকটিম তরুণীকে  ৫০ শতাংশ জমি সাফ-কাবলা লিখে দিয়ে বিয়ে করতে হবে আলীউরকে। শুক্রবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলীউরের কোন সন্ধান পাচ্ছে না বলে জানায় আলীউল এর বাবা শাহেদ আলী।

ফলে গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রেমিক আলীউরের বাড়িতে অবস্থান করছিল উক্ত তরুণী। আলীউরের বড় ভাই আজিজুল ইসলাম জানান, দরবারিরা বাড়িতে এসে সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে কোথায় কি করেছে সেটা তো আমরা জানি না। তার সাথে যোগাযোগও করতে পারছি না।

মেয়েটি গত কাল পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করছিল। এ বিষয়ে আলীউল এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আলীউলের মুঠোফোনে কল দিলে আলীউল এর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়াযায়।
এবিষয়ে চন্ডিপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দীন ভূইয়া জানান, বিষয়টি এখনো সমাধান হয়নি।

এবিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, ছেলের বড় ভাই থানায় অভিযোগ দিলে, গত কাল রাতে ১০.৩০ মিনিটের সময় মেয়েটিকে শাহেদ আলীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে, পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।