শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপুরে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ!

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার মাকরাইল নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই শিক্ষা প্রতিস্টানে সরেজমিন ঘুরে এ অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের চিত্র দেখা গেছে। ওই দিন ঘটনাস্থল থেকেই অনিয়মের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রাজীব উল আহসান ও সংশ্লিস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সাব কন্ট্রাক্টর কিবরিয়া’র কে অবহিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নির্মাণাধীন প্রতিষ্টানের অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার ৩দিন পেরিয়ে গেলেও কোন সুফল মিলেনি। তবে এখনও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
নিম্নমানের বিটবালু, ২নম্বর ইট,বালু ও সিমেন্টের পরিমাণ কম দিয়ে নির্মাণ কাজ করছেন প্রতিষ্টানের ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার। নিম্নমানের কাজের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্মাণাধীন কাজে থাকা একাধিক রাজ মিস্ত্রিও স্বীকার করেণ। তবে তাঁদেরকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে,সেই মোতাবেক কাজ করছেন বলেও জানান। কোন ইস্টিমেট আছে কিনা জানতে চাইলে রাজ মিস্ত্রীরা সাব ঠিকাদারকে মুঠোফোন ধরিয়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সেই শেণিকক্ষ নির্মাণ কাজটি পান প্রতিবেশী কলমাকান্দা উপজেলার ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার। নির্মাণ কাজের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষার্দ্ধে তড়িগড়ি করে কাজ শুরু করেণ ঠিকাদার। শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জায়গাটি প্রায় হাটু পানি। সেই পানির মধ্যেই ১০ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনি দিয়ে কাজ শুরু করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের করা হচ্ছে। ওই শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ বন্ধ করে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা উচিত। ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হচ্ছে। কাজও প্রায় শুরুর দিকে।
মাকরাইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলামের কাছে নিম্ন মানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস দপ্তরী আইয়ুব আলী কাজের ভালোমন্দ দেখভাল করে থাকেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা সমিতির সভাপতি বারমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে রিসিভ না হওয়ায় কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার মুঠোফোনে বলেন, মাকরাইল স্কুলের চলমান কাজটি আমিই পাইয়ে এনে দিয়েছি। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি থাকায় কাজ শুরু করার কথা ছিল না। জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর চাপে কাজ শুরু করেছি। তবে আপনার এদিকে নজর না দিলেও চলতো। জেলা থেকে শুরু করে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর এলাকার অনেক সাংবাদিকের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। আমার এলাকার সাংবাদিকরা আমার পারমিশন ছাড়া একটি কাজও করেনা।
নেত্রকোণা জেলার এস এ ই শিক্ষা প্রকৌশলী শামিউল বশীর মুঠোফোনে জানান,নির্দিষ্ট লেভেল থেকে ১৮ ইন্সি নিচে যাওয়ার কথা। তবে নির্মাণাধীন জায়গাটি প্লেনলেনে ইস্টিমেট করা। তবে গর্তের জায়গাটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ভরাট করে দিবে। পিঁছনে একটি গাইডওয়াল করে দিবে। আমি দুটি উপজেলা দেখভাল করছি। আমি অবশ্যই সরেজমিন পরিদর্শন করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান বলেন, নিম্নমানের কাজের বিষয়টির খোঁজ নিবো। প্রতিস্টানটি এমপিওভুক্ত নয়। তারপরও আপনি আরো খোঁজ নেন। পরে বিষয়টি আমি আরো দেখবো। ইঞ্জিনিয়ার এর ফোনে যোগাযোগ করেণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

দুর্গাপুরে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ!

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার মাকরাইল নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই শিক্ষা প্রতিস্টানে সরেজমিন ঘুরে এ অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের চিত্র দেখা গেছে। ওই দিন ঘটনাস্থল থেকেই অনিয়মের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রাজীব উল আহসান ও সংশ্লিস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সাব কন্ট্রাক্টর কিবরিয়া’র কে অবহিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নির্মাণাধীন প্রতিষ্টানের অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার ৩দিন পেরিয়ে গেলেও কোন সুফল মিলেনি। তবে এখনও কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
নিম্নমানের বিটবালু, ২নম্বর ইট,বালু ও সিমেন্টের পরিমাণ কম দিয়ে নির্মাণ কাজ করছেন প্রতিষ্টানের ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার। নিম্নমানের কাজের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্মাণাধীন কাজে থাকা একাধিক রাজ মিস্ত্রিও স্বীকার করেণ। তবে তাঁদেরকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে,সেই মোতাবেক কাজ করছেন বলেও জানান। কোন ইস্টিমেট আছে কিনা জানতে চাইলে রাজ মিস্ত্রীরা সাব ঠিকাদারকে মুঠোফোন ধরিয়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সেই শেণিকক্ষ নির্মাণ কাজটি পান প্রতিবেশী কলমাকান্দা উপজেলার ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার। নির্মাণ কাজের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষার্দ্ধে তড়িগড়ি করে কাজ শুরু করেণ ঠিকাদার। শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জায়গাটি প্রায় হাটু পানি। সেই পানির মধ্যেই ১০ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনি দিয়ে কাজ শুরু করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের করা হচ্ছে। ওই শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ বন্ধ করে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা উচিত। ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হচ্ছে। কাজও প্রায় শুরুর দিকে।
মাকরাইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলামের কাছে নিম্ন মানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস দপ্তরী আইয়ুব আলী কাজের ভালোমন্দ দেখভাল করে থাকেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা সমিতির সভাপতি বারমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে রিসিভ না হওয়ায় কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ঠিকাদার শ্রী আরাধন সরকার মুঠোফোনে বলেন, মাকরাইল স্কুলের চলমান কাজটি আমিই পাইয়ে এনে দিয়েছি। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি থাকায় কাজ শুরু করার কথা ছিল না। জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর চাপে কাজ শুরু করেছি। তবে আপনার এদিকে নজর না দিলেও চলতো। জেলা থেকে শুরু করে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর এলাকার অনেক সাংবাদিকের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। আমার এলাকার সাংবাদিকরা আমার পারমিশন ছাড়া একটি কাজও করেনা।
নেত্রকোণা জেলার এস এ ই শিক্ষা প্রকৌশলী শামিউল বশীর মুঠোফোনে জানান,নির্দিষ্ট লেভেল থেকে ১৮ ইন্সি নিচে যাওয়ার কথা। তবে নির্মাণাধীন জায়গাটি প্লেনলেনে ইস্টিমেট করা। তবে গর্তের জায়গাটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ভরাট করে দিবে। পিঁছনে একটি গাইডওয়াল করে দিবে। আমি দুটি উপজেলা দেখভাল করছি। আমি অবশ্যই সরেজমিন পরিদর্শন করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান বলেন, নিম্নমানের কাজের বিষয়টির খোঁজ নিবো। প্রতিস্টানটি এমপিওভুক্ত নয়। তারপরও আপনি আরো খোঁজ নেন। পরে বিষয়টি আমি আরো দেখবো। ইঞ্জিনিয়ার এর ফোনে যোগাযোগ করেণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।