বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বনিকপাড়ায় ১৫১ প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজার বড় আয়োজন

হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা ঘিরে  চলছে শেষ মুহুর্তের পস্তুতি। প্রতিমা তৈরি শেষে মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। শেষ মুহুর্তের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও আয়োজকরা। বাগেরহাটও ব্যতিক্রম নয়, জেলায় এবার ৬৬৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ১৬৮টি মন্ডপে পূজা হবে চিতলমারী উপজেলায় এছাড়া বাগেরহাট সদর উপজেলায় ১১৬টি, মোল্লাহাটে ৮৪টি, মোরেলগঞ্জে ৭৭টি, ফকিরহাটে ৬৮টি, কচুয়ায় ৪৪, রামপালে ৪১, মোংলায় ৩৭ এবং শরণখোলায় ২৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের দুর্গাপূজায় ১৫১ প্রতিমা নিয়ে জেলার সব থেকে বড় আয়োজন হচ্ছে সদর উপজেলার চুলকাঠি বনিকপাড়া মন্ডপে। বনিকপাড়ার এই মন্ডপ ঘীরে উৎসাহ উদ্দিপনা বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
বুধবার (২৮ সেপ্টম্বর) বিকেলে বনিকপাড়া মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মন্ডপের বাইরের গেট ও সাজসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। মূল মন্ডপের ভিতরে প্রবেশ করতেই দুই পাশে বিভিন্ন নামের দেব-দেবীর প্রতিমার সারি। সর্বশেষ মূল মন্ডপে রয়েছে মা দুর্গা ও তার সহযোগী দেবীদের প্রতিমা। দুই মাস ধরে ৪ জন কারিগর  রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী অবলম্বনে  তৈরী করেছে ১৫১ টি প্রতিমা। কারিগর তাদের নিপূণ হাতে প্রতিমা ফুটিয়ে তুলেছেন ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য। মূল পূজা শুরু না হলেও, এখনই বিভিন্ন স্থান থেকে জেলার সব থেকে বড় এই আয়োজন দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন।
খুলনা বিএল কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ডলি দত্ত বলেন, এত বড় আয়োজন  আমরা আগে কখনও দেখিনি। খুব ভাল লাগছে আমাদের।
দেবী দত্ত নামের স্থানীয় এক গৃহবধু বলেন, শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলিমরাও আসছেন এই প্রতিমা দেখতে। স্থানীয় সবাই এক সাথে মিলে আমরা এই উৎসব উদযাপন করি।এবার ১৫১টি প্রতিমার কথা শুনে দূরদুরান্ত— থেকে অনেকে খোজ নিচ্ছেন আসার জন্য।
রবিউল ইসলাম বলেন, এতবড় আয়োজন এখানে আগে কখনও হয়নি। আশাকরি অনেক লোক আসবে, আমরা বেশ আনন্দিত জাকজমক আয়োজন দেখে।
প্রতিমার তৈরির কারিগর গনেশ সরকার বলেন, ১৫১টি প্রতিমার মাধ্যমে আমরা রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আশাকরি দর্শনার্থী ও ভক্তদের ভাল লাগবে।
বনিকপাড়া সার্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি দিপংকর কুমার সাধু বলেন, করোনার কারণে দুই বছর দুর্গাপূজায় আমরা ঠিকঠাক আয়োজন করতে পারিনি। এবার মনের মত আয়োজন করেছি। জেলার মধ্যে এটাই বড় আয়োজন। আমাদের সবধরনের প্রস্ততি শেষ, আশাকরি অনেক লোকজনের সমাগম হবে।
এদিকে সনাতন ধর্মালম্বীরা যাতে নিরাপদ ও নির্ভিঘ্নে দূর্গা পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য কাজ করছে জেলা পুলিশ। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিটি মন্ডপে আনসার সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এর পাশাপশি মন্ডপ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকও থাকার কথা রয়েছে। তবে প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ মন্ডপে সিসি ক্যামেরা নেই।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে বিসর্জন প্রদান অর্থ্যাৎ দশমী পর্যন্ত আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আশাকরি সবাই মিলে উৎসব মুখর পরিবেশে দূর্গাপূজা উদযাপন করতে পারব।
১ অক্টোবর শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দশমী ও বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গা মহোৎসব শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বার্তা/এন

বনিকপাড়ায় ১৫১ প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজার বড় আয়োজন

প্রকাশের সময় : ০৪:০৬:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা ঘিরে  চলছে শেষ মুহুর্তের পস্তুতি। প্রতিমা তৈরি শেষে মন্ডপে মন্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। শেষ মুহুর্তের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও আয়োজকরা। বাগেরহাটও ব্যতিক্রম নয়, জেলায় এবার ৬৬৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ১৬৮টি মন্ডপে পূজা হবে চিতলমারী উপজেলায় এছাড়া বাগেরহাট সদর উপজেলায় ১১৬টি, মোল্লাহাটে ৮৪টি, মোরেলগঞ্জে ৭৭টি, ফকিরহাটে ৬৮টি, কচুয়ায় ৪৪, রামপালে ৪১, মোংলায় ৩৭ এবং শরণখোলায় ২৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের দুর্গাপূজায় ১৫১ প্রতিমা নিয়ে জেলার সব থেকে বড় আয়োজন হচ্ছে সদর উপজেলার চুলকাঠি বনিকপাড়া মন্ডপে। বনিকপাড়ার এই মন্ডপ ঘীরে উৎসাহ উদ্দিপনা বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
বুধবার (২৮ সেপ্টম্বর) বিকেলে বনিকপাড়া মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মন্ডপের বাইরের গেট ও সাজসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। মূল মন্ডপের ভিতরে প্রবেশ করতেই দুই পাশে বিভিন্ন নামের দেব-দেবীর প্রতিমার সারি। সর্বশেষ মূল মন্ডপে রয়েছে মা দুর্গা ও তার সহযোগী দেবীদের প্রতিমা। দুই মাস ধরে ৪ জন কারিগর  রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী অবলম্বনে  তৈরী করেছে ১৫১ টি প্রতিমা। কারিগর তাদের নিপূণ হাতে প্রতিমা ফুটিয়ে তুলেছেন ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য। মূল পূজা শুরু না হলেও, এখনই বিভিন্ন স্থান থেকে জেলার সব থেকে বড় এই আয়োজন দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন।
খুলনা বিএল কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ডলি দত্ত বলেন, এত বড় আয়োজন  আমরা আগে কখনও দেখিনি। খুব ভাল লাগছে আমাদের।
দেবী দত্ত নামের স্থানীয় এক গৃহবধু বলেন, শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলিমরাও আসছেন এই প্রতিমা দেখতে। স্থানীয় সবাই এক সাথে মিলে আমরা এই উৎসব উদযাপন করি।এবার ১৫১টি প্রতিমার কথা শুনে দূরদুরান্ত— থেকে অনেকে খোজ নিচ্ছেন আসার জন্য।
রবিউল ইসলাম বলেন, এতবড় আয়োজন এখানে আগে কখনও হয়নি। আশাকরি অনেক লোক আসবে, আমরা বেশ আনন্দিত জাকজমক আয়োজন দেখে।
প্রতিমার তৈরির কারিগর গনেশ সরকার বলেন, ১৫১টি প্রতিমার মাধ্যমে আমরা রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনী ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আশাকরি দর্শনার্থী ও ভক্তদের ভাল লাগবে।
বনিকপাড়া সার্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি দিপংকর কুমার সাধু বলেন, করোনার কারণে দুই বছর দুর্গাপূজায় আমরা ঠিকঠাক আয়োজন করতে পারিনি। এবার মনের মত আয়োজন করেছি। জেলার মধ্যে এটাই বড় আয়োজন। আমাদের সবধরনের প্রস্ততি শেষ, আশাকরি অনেক লোকজনের সমাগম হবে।
এদিকে সনাতন ধর্মালম্বীরা যাতে নিরাপদ ও নির্ভিঘ্নে দূর্গা পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য কাজ করছে জেলা পুলিশ। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিটি মন্ডপে আনসার সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এর পাশাপশি মন্ডপ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকও থাকার কথা রয়েছে। তবে প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ মন্ডপে সিসি ক্যামেরা নেই।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে বিসর্জন প্রদান অর্থ্যাৎ দশমী পর্যন্ত আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আশাকরি সবাই মিলে উৎসব মুখর পরিবেশে দূর্গাপূজা উদযাপন করতে পারব।
১ অক্টোবর শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দশমী ও বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গা মহোৎসব শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বার্তা/এন