শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, খাদ্য সহায়তা পায়নি রাজবাড়ীর জেলেরা

মা ইলিশ রক্ষায় আজ শুক্রবার (৭ অক্টোবর) থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামি ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই নিষেধাজ্ঞা। সারাদেশের নদীসহ রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতেও ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর ৮৫ কিলোমিটার অংশে থাকবে প্রশাসনের কড়া নজরদারি। এসব বিষয়ে জেলেদের সচেতন করতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে। মাছ ধরা বন্ধ ঘোষনায় রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার জেলে মধ্যরাত থেকে বেকার হয়ে পড়েছে। দুচিন্তার ভাজ পড়েছে প্রতিটি জেলের কপালে। জেলেদের কাঁধে ঝুলছে ঋনের বোঝা, কিভাবে চলবে সংসার। খাদ্য সহায়তা না পেয়ে এবং বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
রাজবাড়ী জেলা মৎস অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুরাতন তালিকা অনুযায়ী রাজবাড়ীতে ১০ হাজার ২৯০ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে এসব জেলের জন্য সরকার ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে নতুন করা তালিকায় জেলেদের সংখ্যা আরও বাড়বে। এ বছর এখনো চুড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়নি। তবে ৬ হাজার জেলের খাদ্য সহায়তার চাহিদা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা বরাট ইউনিয়নের পদ্মা পারের জেলে, আনিচ কাজী, মজিবার, হারুন শেখ, রুবেল শিকদার, নাজিরুদ্দিন সরদার, সমেস বাবুসহ অনেকেই বলেন, রাজবাড়ী এলাকা পুরো পদ্মা নদীতে প্রায় ২০ হাজারেরও অধিক জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। গত দেড় দুই মাস হলো নদীতে তেমন মাছ পাওয়া যায়নি, কিস্তি উঠিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে। তার উপর আবার এ নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় চরম বিপদের মধ্যে পড়তে হয় তাদের। একদিকে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ, অন্যদিকে সংসারের অভাব-অনাটন, সব মিলিয়ে প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার এ সময় তাদের দিন কাটে দুশ্চিন্তায়। গত বছর তবু ২০ কেজি করে চাল পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।
রাজবাড়ী জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, মাছ ধরা বন্ধে নদীতে সার্বক্ষনিক নজরদারী থাকবে। গত বছর ৪হাজার ৭০০ জেলেকে ৯৪ মেট্রিকটন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ বছর তালিকা চুড়ান্ত না হলেও ৬হাজার জেলের জন্য খাদ্য সহায়তার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে সেটা পেয়ে যাব। মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ট্রাস্কফোর্স কমিটি, জনপ্রতিনিধি, জেলে পাড়ায়, নদীতে, ঘাটে, বাজারে সভা করেছেন। এছাড়া প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এবং অভিযান সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান করার লক্ষ্যে রাজবাড়ীর ৩ উপজেলা গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩২৩ জন জেলেকে বকনা বাছুর (গরু) দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ওই তিন উপজেলায় প্রায় ৯০জন জেলেকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হবে।
বার্তা/এন

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা, খাদ্য সহায়তা পায়নি রাজবাড়ীর জেলেরা

প্রকাশের সময় : ০৯:২৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২
মা ইলিশ রক্ষায় আজ শুক্রবার (৭ অক্টোবর) থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামি ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই নিষেধাজ্ঞা। সারাদেশের নদীসহ রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতেও ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর ৮৫ কিলোমিটার অংশে থাকবে প্রশাসনের কড়া নজরদারি। এসব বিষয়ে জেলেদের সচেতন করতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে। মাছ ধরা বন্ধ ঘোষনায় রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার জেলে মধ্যরাত থেকে বেকার হয়ে পড়েছে। দুচিন্তার ভাজ পড়েছে প্রতিটি জেলের কপালে। জেলেদের কাঁধে ঝুলছে ঋনের বোঝা, কিভাবে চলবে সংসার। খাদ্য সহায়তা না পেয়ে এবং বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
রাজবাড়ী জেলা মৎস অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুরাতন তালিকা অনুযায়ী রাজবাড়ীতে ১০ হাজার ২৯০ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে এসব জেলের জন্য সরকার ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে নতুন করা তালিকায় জেলেদের সংখ্যা আরও বাড়বে। এ বছর এখনো চুড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়নি। তবে ৬ হাজার জেলের খাদ্য সহায়তার চাহিদা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা বরাট ইউনিয়নের পদ্মা পারের জেলে, আনিচ কাজী, মজিবার, হারুন শেখ, রুবেল শিকদার, নাজিরুদ্দিন সরদার, সমেস বাবুসহ অনেকেই বলেন, রাজবাড়ী এলাকা পুরো পদ্মা নদীতে প্রায় ২০ হাজারেরও অধিক জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। গত দেড় দুই মাস হলো নদীতে তেমন মাছ পাওয়া যায়নি, কিস্তি উঠিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে। তার উপর আবার এ নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় চরম বিপদের মধ্যে পড়তে হয় তাদের। একদিকে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ, অন্যদিকে সংসারের অভাব-অনাটন, সব মিলিয়ে প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার এ সময় তাদের দিন কাটে দুশ্চিন্তায়। গত বছর তবু ২০ কেজি করে চাল পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।
রাজবাড়ী জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, মাছ ধরা বন্ধে নদীতে সার্বক্ষনিক নজরদারী থাকবে। গত বছর ৪হাজার ৭০০ জেলেকে ৯৪ মেট্রিকটন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ বছর তালিকা চুড়ান্ত না হলেও ৬হাজার জেলের জন্য খাদ্য সহায়তার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে সেটা পেয়ে যাব। মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ট্রাস্কফোর্স কমিটি, জনপ্রতিনিধি, জেলে পাড়ায়, নদীতে, ঘাটে, বাজারে সভা করেছেন। এছাড়া প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এবং অভিযান সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান করার লক্ষ্যে রাজবাড়ীর ৩ উপজেলা গোয়ালন্দ, কালুখালী ও পাংশায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩২৩ জন জেলেকে বকনা বাছুর (গরু) দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ওই তিন উপজেলায় প্রায় ৯০জন জেলেকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হবে।
বার্তা/এন