মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার: মির্জা ফখরুল

ছবি-সংগৃহীত

আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন কঠিন দুঃসময় চলছে উল্লেখ করে বলেছেন দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, যেদিকে তাকাই শুধু চুরি আর চুরি। রাস্তাঘাট-ব্রিজ করতেও চুরি হয়। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা- এমনকি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিতেও টাকা দিতে হয়। এই সরকার সব খেয়ে ফেলেছে, কিছু বাকি রাখেনি। এই সরকার সর্বভুক সরকারে পরিণত হয়েছে। সব খেয়ে ফেলে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্ভিক্ষ নিয়ে মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন কঠিন দুঃসময়। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে মানুষ কোথায় যাবে। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার। ১৯৭৪ সালেও শেখ হাসিনার বাবার আমলে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াতে চেয়েছিল এই সরকার। এখন চালের কেজি ৬০ টাকা। ডাল, ডিম, চিনিসহ শাক-সবজির দামও আকাশচুম্বী।

সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেখছি- আপনারা চিতল মাছ খান, বিদেশে যান, এসি রুমে থাকেন। শুধু মুখে বড় বড় কথা বলেন।

সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের একটাই দাবি সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তার আগেই আমাদের এমপিরা পদত্যাগ করবে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের পছন্দ এবং মনের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচন করবেন। নতুন পার্লামেন্ট গঠন করা হবে।

ফখরুল বলেন, সবার অংশগ্রহণ ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করা হবে- সেই সরকার হবে জাতীয় সরকার। সেই সরকার বাংলাদেশে যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, দেশে অর্থনৈতিক যে দুরবস্থা দেখা দিয়েছে, রাজনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে সেসব আবার মেরামতের জন্য জাতীয় সরকার কাজ করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দলের যে কয়েকজন এমপি রয়েছে তাদের দল যখনই নির্দেশ দেবে সংসদ থেকে পদত্যাগ করবে। এ জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত। ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন বাংলাদেশে আর করতে দেবো না, সেটা হবেও না। সোজা কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অধীনে কোনও নির্বাচন হবে না- বাংলাদেশে এটা আমাদের সাফ কথা।

‘জঙ্গিবাদের উত্থান ও আগুন সন্ত্রাসের রক্ষা নেই’ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের উত্তরে তিনি বলেন, এটা আর একটা চক্রান্ত। কিন্তু দেশের মানুষ আর সেটা বরদাস্ত করবে না। বন্দুক, রিভলভার, লাঠি যাই আসুক সব ভেঙে চুরমার করে দেবে এ দেশের মানুষ। আজকে জেগে ওঠার সময় এসেছে। এ দেশের মানুষ জেগে উঠবে। এ দেশের মানুষ আর একবার যুদ্ধ করবে। আর একবার দেশ স্বাধীন হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলীয় ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদেরও হয়রানি করতে ছাড়েনি। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যাবে না।

রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জামান শামুর সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এ ছাড়াও, সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

জনপ্রিয়

দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার: মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন কঠিন দুঃসময় চলছে উল্লেখ করে বলেছেন দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, যেদিকে তাকাই শুধু চুরি আর চুরি। রাস্তাঘাট-ব্রিজ করতেও চুরি হয়। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা- এমনকি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিতেও টাকা দিতে হয়। এই সরকার সব খেয়ে ফেলেছে, কিছু বাকি রাখেনি। এই সরকার সর্বভুক সরকারে পরিণত হয়েছে। সব খেয়ে ফেলে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্ভিক্ষ নিয়ে মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন কঠিন দুঃসময়। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে মানুষ কোথায় যাবে। দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার। ১৯৭৪ সালেও শেখ হাসিনার বাবার আমলে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াতে চেয়েছিল এই সরকার। এখন চালের কেজি ৬০ টাকা। ডাল, ডিম, চিনিসহ শাক-সবজির দামও আকাশচুম্বী।

সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেখছি- আপনারা চিতল মাছ খান, বিদেশে যান, এসি রুমে থাকেন। শুধু মুখে বড় বড় কথা বলেন।

সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের একটাই দাবি সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তার আগেই আমাদের এমপিরা পদত্যাগ করবে। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের পছন্দ এবং মনের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচন করবেন। নতুন পার্লামেন্ট গঠন করা হবে।

ফখরুল বলেন, সবার অংশগ্রহণ ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করা হবে- সেই সরকার হবে জাতীয় সরকার। সেই সরকার বাংলাদেশে যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, দেশে অর্থনৈতিক যে দুরবস্থা দেখা দিয়েছে, রাজনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে সেসব আবার মেরামতের জন্য জাতীয় সরকার কাজ করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দলের যে কয়েকজন এমপি রয়েছে তাদের দল যখনই নির্দেশ দেবে সংসদ থেকে পদত্যাগ করবে। এ জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত। ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন বাংলাদেশে আর করতে দেবো না, সেটা হবেও না। সোজা কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অধীনে কোনও নির্বাচন হবে না- বাংলাদেশে এটা আমাদের সাফ কথা।

‘জঙ্গিবাদের উত্থান ও আগুন সন্ত্রাসের রক্ষা নেই’ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের উত্তরে তিনি বলেন, এটা আর একটা চক্রান্ত। কিন্তু দেশের মানুষ আর সেটা বরদাস্ত করবে না। বন্দুক, রিভলভার, লাঠি যাই আসুক সব ভেঙে চুরমার করে দেবে এ দেশের মানুষ। আজকে জেগে ওঠার সময় এসেছে। এ দেশের মানুষ জেগে উঠবে। এ দেশের মানুষ আর একবার যুদ্ধ করবে। আর একবার দেশ স্বাধীন হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলীয় ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদেরও হয়রানি করতে ছাড়েনি। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যাবে না।

রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শামসুজ্জামান শামুর সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এ ছাড়াও, সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।