বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যশোর ১১ স্তরের স্টেডিয়াম, ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হবে দ্রুত: প্রধানমন্ত্রী

ঐতিহাসিক যশোর জেলা স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুতই সেখানে হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর স্টেডিয়ামের অবস্থা খুব খারাপ। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এটাকে আমরা ১১ স্তর বিশিষ্ঠ স্টেডিয়াম করে দেবো।’

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘অভয়নগরে ইপিজেট করে দিচ্ছে। সেখানে ৫০০ একর জমি নেয়া হয়েছে। সেখানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। যুব সমাজের জন্য আমরা অনেক কিছু করেছি। শুধু চাকরি খুজলে হবে না। কর্মস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়া যাবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কেউ বেকার থাকবে না। কেউ কিছু না কিছু করতে পারবে। আমরা সেটা করে দিয়েছি।’

‘যশোর থেকে ঢাকায় যাওয়ার সব সড়ক মহাসড়ক হবে। ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে যশোর আসার সরাসরি রেল লাইন হবে। যাতায়াত সহজ হবে। বাণিজ্যে যাতে সুবিধা হয়, এজন্য আমরা সবকিছু করে দিচ্ছি।’

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিলো বিএনপি। তারা বিদেশ থেকে পুরাতন কাপড় এনে দিতো। আমরা দিয়েছিলাম কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দিয়েছিলো। জিয়া মারা যাওয়ার পর বলা হলো ভাঙা সুটকেস ছাড়া কিছু নেই। কিন্তু তারা পরে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এজন্য তাদের সাজা হয়েছে। আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।’

খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শধু জনগণের টাকা মারেনি, এতিমের টাকা মেরেছে। যারা এতিমের টাকা মারে তারা জনগণকে কি দিতে পারে? আমরা দেশকে মধ্যম আয়োর দেশে রুপান্ত করেছি। উন্নয়শীল দেশে রুপান্তর করেছি।’

রিজার্ভ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দা। তবে আমরা সবকিছু ঠিক রেখেছি। অনেকে বলছে রিজার্ভ নেই। ব্যাংকে টাকা নেই। আমি গতকালও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছের কোনো সংকট নেই। বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। কোনো সমস্যা নেই। বাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখলে হবে না। তা চুরি করে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রির্জাভ কোথায় যায়নি। জনগণের জন্য ব্যয় হয়েছে। যুদ্ধ চলছে। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। ৩০০ টাকার গম এখন ৬০০ টাকা হয়েছে। তাও আমরা মানুষের জন্য নিয়ে এসেছি। পৃথিবীর সব দেশে পয়সা দিয়ে কিনে টিকা নিতে হয়েছে। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশে টাকা দিয়ে কিনে টিকা নিতে হয়েছে। আমরা আমাদের দেশের মানুষকে বিনামূল্যে করোনা টিকা দিয়েছি।’

‘বিএনপি প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে রেখেছিলো। আমরা ২০ ভাগে নিয়ে এসেছি। আমরা আরো কমিয়ে আনতে কাজ করছি। করোনার সময় আমরা মানুষকে নগদ টাকা দিয়েছি। বিনা পয়সায় খাদ্য দিচ্ছি। বিশ্বের সাথে আমাদের দেশেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমরা কম দামে, বিনামূল্যে খাদ্য দিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোরের উন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। আমরা গ্রাম পর্যান্ত ব্রাডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। যশোরে আইটি পার্ক করেছি। যেখানে এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ মানুষের কর্মস্থান হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ আসছে।’

‘বেনাপোল স্থলবন্দরে এক সময় ট্রাক রাখা যেতো না। আমরা ডিজিটাল করে দিয়েছি। অনেক উন্নত করেছি। পদ্মাসেতু করেছি। মধুমতি সেতু করেছি। পদ্মাসেতু হওয়াতে কত সহজে আপনারা ঢাকায় যেতে পারেন। সবজি সহজে ঢাকায় যেতে পারে।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের ৮২ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

‘আমরা যশোরে স্টেডিয়াম করে দেবো। তবে আমাকে কথা দিতে হবে, বিশেষ করে যুবক ও তরুণদের। তোমরা খেলাধুলা করবে, লেখাপড়া করবে। কোনোভাবেই মাদকের সাথে জড়ানো যাবে না। জঙ্গিবাদের সাথে যুক্ত হওয়া যাবে না। আমরা যশোর স্টেডিয়াম ১১ স্তর বিশিষ্ঠ করে দিবো। ইতোমধ্যে এই জরাজীর্ণ স্টেডিয়ামের জন্য ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

যশোরে আমার নাড়ির টান আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নানা জহিরুল হক এই যশোরে চাকরি করতেন। আমার মার বয়স যখন ৩ বছর, তখন তিনি মারা যান। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় নানাকে টুঙ্গিপাড়ায় নেওয়া যায়নি। এজন্য তাকে যশোরে দাফন করা হয়। যশোরে আমার নাড়ির টান আছে। তার নামে একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করে দিচ্ছি। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকের কর্মস্থান হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেউ ভূমিহীন থাকবে না। কিন্তু তিনি তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। আমরা তার কাজ করছি। আমরা বিনা পয়সায় ৩৫ লাখ ঠিকানাহীন মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। তাদের জীবন পাল্টে যাচ্ছে। জাতির পিতার আকঙ্খা আমরা পূরণ করছি।’

যশোর ১১ স্তরের স্টেডিয়াম, ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হবে দ্রুত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৯:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২

ঐতিহাসিক যশোর জেলা স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুতই সেখানে হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর স্টেডিয়ামের অবস্থা খুব খারাপ। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এটাকে আমরা ১১ স্তর বিশিষ্ঠ স্টেডিয়াম করে দেবো।’

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘অভয়নগরে ইপিজেট করে দিচ্ছে। সেখানে ৫০০ একর জমি নেয়া হয়েছে। সেখানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। যুব সমাজের জন্য আমরা অনেক কিছু করেছি। শুধু চাকরি খুজলে হবে না। কর্মস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়া যাবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কেউ বেকার থাকবে না। কেউ কিছু না কিছু করতে পারবে। আমরা সেটা করে দিয়েছি।’

‘যশোর থেকে ঢাকায় যাওয়ার সব সড়ক মহাসড়ক হবে। ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে যশোর আসার সরাসরি রেল লাইন হবে। যাতায়াত সহজ হবে। বাণিজ্যে যাতে সুবিধা হয়, এজন্য আমরা সবকিছু করে দিচ্ছি।’

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিলো বিএনপি। তারা বিদেশ থেকে পুরাতন কাপড় এনে দিতো। আমরা দিয়েছিলাম কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দিয়েছিলো। জিয়া মারা যাওয়ার পর বলা হলো ভাঙা সুটকেস ছাড়া কিছু নেই। কিন্তু তারা পরে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এজন্য তাদের সাজা হয়েছে। আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।’

খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শধু জনগণের টাকা মারেনি, এতিমের টাকা মেরেছে। যারা এতিমের টাকা মারে তারা জনগণকে কি দিতে পারে? আমরা দেশকে মধ্যম আয়োর দেশে রুপান্ত করেছি। উন্নয়শীল দেশে রুপান্তর করেছি।’

রিজার্ভ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দা। তবে আমরা সবকিছু ঠিক রেখেছি। অনেকে বলছে রিজার্ভ নেই। ব্যাংকে টাকা নেই। আমি গতকালও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছের কোনো সংকট নেই। বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। কোনো সমস্যা নেই। বাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখলে হবে না। তা চুরি করে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রির্জাভ কোথায় যায়নি। জনগণের জন্য ব্যয় হয়েছে। যুদ্ধ চলছে। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। ৩০০ টাকার গম এখন ৬০০ টাকা হয়েছে। তাও আমরা মানুষের জন্য নিয়ে এসেছি। পৃথিবীর সব দেশে পয়সা দিয়ে কিনে টিকা নিতে হয়েছে। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশে টাকা দিয়ে কিনে টিকা নিতে হয়েছে। আমরা আমাদের দেশের মানুষকে বিনামূল্যে করোনা টিকা দিয়েছি।’

‘বিএনপি প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে রেখেছিলো। আমরা ২০ ভাগে নিয়ে এসেছি। আমরা আরো কমিয়ে আনতে কাজ করছি। করোনার সময় আমরা মানুষকে নগদ টাকা দিয়েছি। বিনা পয়সায় খাদ্য দিচ্ছি। বিশ্বের সাথে আমাদের দেশেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমরা কম দামে, বিনামূল্যে খাদ্য দিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোরের উন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। আমরা গ্রাম পর্যান্ত ব্রাডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। যশোরে আইটি পার্ক করেছি। যেখানে এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ মানুষের কর্মস্থান হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ আসছে।’

‘বেনাপোল স্থলবন্দরে এক সময় ট্রাক রাখা যেতো না। আমরা ডিজিটাল করে দিয়েছি। অনেক উন্নত করেছি। পদ্মাসেতু করেছি। মধুমতি সেতু করেছি। পদ্মাসেতু হওয়াতে কত সহজে আপনারা ঢাকায় যেতে পারেন। সবজি সহজে ঢাকায় যেতে পারে।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের ৮২ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

‘আমরা যশোরে স্টেডিয়াম করে দেবো। তবে আমাকে কথা দিতে হবে, বিশেষ করে যুবক ও তরুণদের। তোমরা খেলাধুলা করবে, লেখাপড়া করবে। কোনোভাবেই মাদকের সাথে জড়ানো যাবে না। জঙ্গিবাদের সাথে যুক্ত হওয়া যাবে না। আমরা যশোর স্টেডিয়াম ১১ স্তর বিশিষ্ঠ করে দিবো। ইতোমধ্যে এই জরাজীর্ণ স্টেডিয়ামের জন্য ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

যশোরে আমার নাড়ির টান আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নানা জহিরুল হক এই যশোরে চাকরি করতেন। আমার মার বয়স যখন ৩ বছর, তখন তিনি মারা যান। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় নানাকে টুঙ্গিপাড়ায় নেওয়া যায়নি। এজন্য তাকে যশোরে দাফন করা হয়। যশোরে আমার নাড়ির টান আছে। তার নামে একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করে দিচ্ছি। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকের কর্মস্থান হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেউ ভূমিহীন থাকবে না। কিন্তু তিনি তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। আমরা তার কাজ করছি। আমরা বিনা পয়সায় ৩৫ লাখ ঠিকানাহীন মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। তাদের জীবন পাল্টে যাচ্ছে। জাতির পিতার আকঙ্খা আমরা পূরণ করছি।’