শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বেতন বাড়ছে জিপি-পিপিদের

বড়, মাঝারি ও ছোট এই তিন ক্যাটাগরিতে জেলাগুলোকে ভাগ করে সরকারি আইন কর্মকর্তাদের (পিপি ও জিপি) বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের চতুর্থ অধিবেশন শেষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান। আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এই কার্য-অধিবেশন হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, আগে পিপি ও জিপিদের বেতন ছিল দুই হাজার ও তিন হাজার টাকা। এখন আমরা প্রস্তাব যেটা আছে সেটা হলো ৬৪ জেলাকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। বড় জেলা, মাঝারি জেলা ও ছোট জেলা। আমরা প্রস্তাব করেছি বড় জেলার যিনি পিপি হবেন, তার বেতন হবে ৫০ হাজার টাকা। মাঝারি জেলার পিপির বেতন হবে ৪৫ হাজার টাকা, ছোট জেলার ৪০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, সহকারী পিপি, অতিরিক্ত পিপি ও অতিরিক্ত জিপি থাকবেন সেটাও নির্ণয় করা হবে, কী কী কোর্ট আছে সেটার ওপর নির্ভর করে। সেজন্য ২৬৭ কোটি টাকা আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চেয়েছি, তারা বরাদ্দ দিতে রাজি হয়েছে।

‘আমার মনে হয় আগামী নির্বাচনের পর যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা অবশ্যই বিবেচনা করবেন। কারণ জিপি-পিপিদের দায়িত্ববান হওয়ার জন্য এবং তাদের একটা সম্মানজনক অবস্থানে আনার জন্য এই বেতন কাটামো বদলানো অত্যন্ত প্রয়োজন।’

বহু আগে থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় জিপি-পিপিদের নিয়োগ দেওয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাই প্রথম পিপিদের বেতন বাড়িয়ে ১৫ হাজার ও ১২ হাজার টাকা করি। সেক্ষেত্রে আমরা একটি বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি এ ব্যাপারে একটু ধীর গতিতে যাচ্ছিলাম, কারণ আমার টার্গেট ছিল ৫০ হাজার টাকা। কারণ তখন বিজ্ঞ পিপিরা বলেছিলেন এটাতেই রাজি হয়ে যেতে, তাই তখন আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।’

জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর কারণ তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে সম্পূর্ণ পিপি সার্ভিসটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস হবে না। ৩০ শতাংশ থাকবে ফর ডেজিগনেটেড পারপাজেস। বিশেষ বিশেষ কাজে তাদের নিয়োজিত করা হবে।’

‘সেটার নিয়োগ হবে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। আমি এটা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’ এটা কি আগামী নির্বাচনের পরে করা হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করবো এখনই করার জন্য।’

‘জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও তাদের সম্মান রক্ষা ও তাদের কাছ থেকে দায়িত্ব আদায় যথেষ্ট হবে। বলছি না এটাই সবচেয়ে যথেষ্ট, ইট ইজ ভেরি গুড ফার্স্ট স্টেপ’ বলেন আনিসুল হক।

ডিসিদের সঙ্গে অধিবেশনে মামলাজট কমাতে সরকারের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেছেন জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, লিগ্যাল এইড সার্ভিস নিয়ে বলেছি। একটি বিষয় তুলে ধরেছি, সেটা হলো কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের কম্পাউন্ডেবল এবং নন কম্পাউন্ডেবল যে ধারাগুলো রয়েছে। কম্পাউন্টেবল ধারায় যে বিজ্ঞ বিচারকরা মামলা করতে আসবেন, তাদের উৎসাহিত করবেন, তারা যাতে আদালতের বাইরেই নিষ্পত্তি করে আসেন। এই নিষ্পত্তির ওপর আদালত যদি একটা অর্ডার দিয়ে দেন তবে সেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’

উপাত্ত সংরক্ষণ আইনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একটি আইন যেভাবে পাস হয় সেভাবে আমরা এটি জাতীয় সংসদে নেবো। তার মানে এই নয় যে, এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের কথা শোনা হবে না। এটা নিয়ে যখন সেমিনার হয় তখন আমি বলেছিলাম এটি কন্ট্রোল করার জন্য না এটা প্রটেক্ট করার জন্য। সেই নীতি অনুযায়ী ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট হবে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনে যাচাই করে যাতে মামলা নেওয়া হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা না হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ বিষয়ে বেস্ট প্র্যাকটিসের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। যদি প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আমরা সংশোধনও করতে পারি।’

তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বেতন বাড়ছে জিপি-পিপিদের

প্রকাশের সময় : ০৩:২৩:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

বড়, মাঝারি ও ছোট এই তিন ক্যাটাগরিতে জেলাগুলোকে ভাগ করে সরকারি আইন কর্মকর্তাদের (পিপি ও জিপি) বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের চতুর্থ অধিবেশন শেষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান। আইন ও বিচার বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এই কার্য-অধিবেশন হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, আগে পিপি ও জিপিদের বেতন ছিল দুই হাজার ও তিন হাজার টাকা। এখন আমরা প্রস্তাব যেটা আছে সেটা হলো ৬৪ জেলাকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। বড় জেলা, মাঝারি জেলা ও ছোট জেলা। আমরা প্রস্তাব করেছি বড় জেলার যিনি পিপি হবেন, তার বেতন হবে ৫০ হাজার টাকা। মাঝারি জেলার পিপির বেতন হবে ৪৫ হাজার টাকা, ছোট জেলার ৪০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, সহকারী পিপি, অতিরিক্ত পিপি ও অতিরিক্ত জিপি থাকবেন সেটাও নির্ণয় করা হবে, কী কী কোর্ট আছে সেটার ওপর নির্ভর করে। সেজন্য ২৬৭ কোটি টাকা আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চেয়েছি, তারা বরাদ্দ দিতে রাজি হয়েছে।

‘আমার মনে হয় আগামী নির্বাচনের পর যে সরকারই আসুক না কেন, তারা এটা অবশ্যই বিবেচনা করবেন। কারণ জিপি-পিপিদের দায়িত্ববান হওয়ার জন্য এবং তাদের একটা সম্মানজনক অবস্থানে আনার জন্য এই বেতন কাটামো বদলানো অত্যন্ত প্রয়োজন।’

বহু আগে থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় জিপি-পিপিদের নিয়োগ দেওয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাই প্রথম পিপিদের বেতন বাড়িয়ে ১৫ হাজার ও ১২ হাজার টাকা করি। সেক্ষেত্রে আমরা একটি বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি এ ব্যাপারে একটু ধীর গতিতে যাচ্ছিলাম, কারণ আমার টার্গেট ছিল ৫০ হাজার টাকা। কারণ তখন বিজ্ঞ পিপিরা বলেছিলেন এটাতেই রাজি হয়ে যেতে, তাই তখন আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।’

জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর কারণ তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে সম্পূর্ণ পিপি সার্ভিসটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস হবে না। ৩০ শতাংশ থাকবে ফর ডেজিগনেটেড পারপাজেস। বিশেষ বিশেষ কাজে তাদের নিয়োজিত করা হবে।’

‘সেটার নিয়োগ হবে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। আমি এটা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’ এটা কি আগামী নির্বাচনের পরে করা হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করবো এখনই করার জন্য।’

‘জিপি-পিপিদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও তাদের সম্মান রক্ষা ও তাদের কাছ থেকে দায়িত্ব আদায় যথেষ্ট হবে। বলছি না এটাই সবচেয়ে যথেষ্ট, ইট ইজ ভেরি গুড ফার্স্ট স্টেপ’ বলেন আনিসুল হক।

ডিসিদের সঙ্গে অধিবেশনে মামলাজট কমাতে সরকারের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেছেন জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি, লিগ্যাল এইড সার্ভিস নিয়ে বলেছি। একটি বিষয় তুলে ধরেছি, সেটা হলো কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের কম্পাউন্ডেবল এবং নন কম্পাউন্ডেবল যে ধারাগুলো রয়েছে। কম্পাউন্টেবল ধারায় যে বিজ্ঞ বিচারকরা মামলা করতে আসবেন, তাদের উৎসাহিত করবেন, তারা যাতে আদালতের বাইরেই নিষ্পত্তি করে আসেন। এই নিষ্পত্তির ওপর আদালত যদি একটা অর্ডার দিয়ে দেন তবে সেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’

উপাত্ত সংরক্ষণ আইনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একটি আইন যেভাবে পাস হয় সেভাবে আমরা এটি জাতীয় সংসদে নেবো। তার মানে এই নয় যে, এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের কথা শোনা হবে না। এটা নিয়ে যখন সেমিনার হয় তখন আমি বলেছিলাম এটি কন্ট্রোল করার জন্য না এটা প্রটেক্ট করার জন্য। সেই নীতি অনুযায়ী ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট হবে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইনে যাচাই করে যাতে মামলা নেওয়া হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা না হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ বিষয়ে বেস্ট প্র্যাকটিসের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। যদি প্রয়োজন হয় তবে অবশ্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আমরা সংশোধনও করতে পারি।’