বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

যশোরের গুরুত্বপূর্ণ খবরা খবর

যশোরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের সইতে না পেরে এক গৃহবধূ ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের সইতে না পেরে এক গৃহবধূ ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাবার সাথে মোবাইলে কথা বলতে বলতে শনিবার দুপুর বারটার দিকে উপজেলার রাজঘাট রেলক্রসিংয়ের পাশে খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। নিহত গৃহবধুর নাম সুমাইয়া বেগম (২২)। তিনি উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের আলী হোসেন চুন্নির ছেলে রকি শেখের স্ত্রী এবং খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে। নিহতের পিতা মহিরুল ইসলাম বাবলু জানান, গত তিন বৎসর পুর্বে রকির সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। আমি তাদের এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। গত বছর গলায় ছুরি দিয়ে আমার মেয়েকে রকি মেরে ফেলতে গিয়েছিলো। আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি এবং মামলা করি। পরে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন আমার বাড়ি এসে আলোচনা করে মামলা মিমাংসা করে মেয়েকে আবার নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন অব্যাহতভাবে নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সে ট্রেনে কেটে আত্মহত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, সুমাইয়া আত্মহত্যার আগে আমার সাথে মোবাইলে কথা বলছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা বলছিল। তখন প্রায় দুপুর বারটা বাজে। আমি তাকে মোবাইলে বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ করছিলাম। সে আমাকে বলেছিলো বাবা তোমার নাতীকে দেখে রেখো। তখন মোবাইলে আমি ট্রেন আসার শব্দ শুনছিলাম। হঠাৎ একটি শব্দ শুনলাম। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটুপর জানতে পারি সে ট্রেনে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা করেছে। জানতে চাইলে যশোর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন,‘ শুনেছি একজন গৃহবধূ রাজঘাট এলাকায খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের সামনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে জেনে পরবর্তি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।#
মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা
নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে মানবসেবার পাশাপাশি ৩৪টি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করায় মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা বেগম। ভূমি-গৃহহীন আনোয়ারা বেগমকে এই সম্মাননা দিয়েছেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশন।
দুপুরে যশোরের নওয়াপাড়ায় আনোয়ারার অস্থায়ী নিবাসে তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ।
এসময় ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ বলেন, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বা ভালো কাজ করতে গেলে ত্রুটি-বিচ্যুতি বা ভুলভ্রান্তি থাকবেই। এগুলোকে উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ধৈর্যচ্যুত হয়ে লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে এলে দেশের ক্ষতি হবে, দেশ পিছিয়ে পড়বে। তাই আমাদের সমালোচনার পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য ভালো কাজের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
আরশাদ পারভেজ আরো বলেন,কাজের স্বীকৃতিই বড় কথা, আর এই স্বীকৃতি পেলে কাজের অনুপ্রেরণা বাড়ে। ‘আবু কাজেম ফাউন্ডেশন’ এর মতো অনেক সংগঠন আছে বিধায়ই মানুষ এখনো মানবিক কাজের স্পৃহা পায়।
এ সময় আনোয়ারা ও তার গোষ্ঠীকে সহায়তার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ
আনোয়ারা বর্তমানে অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর এলাকার ক্লিনিকপাড়ায় ভাড়া বাসায় জীবন কাটাচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সী অনোয়ারার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে যশোরে। মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃভূমি নারায়নগঞ্জ ছেড়েছেন তিনি। ঘরছাড়া আনোয়ারা পেশাগত কারণে নওয়াপাড়া আসেন। এরপর তিনি এখানে বসবাস শুরু করেন। প্রায় ১১ জনের একটি গোষ্ঠি তার সঙ্গে যুক্ত হয়। তিনি ছিলেন দলনেতা। করোনাকালে পেশায় ভাটা পড়ে। একে একে অনেকেই তাকে ছেড়ে চলে যায়। কলারোয়ার মনিরা (৩০), অভয়নগরের কাদিরপাড়ার ইতি (২৭),বউবাজারের মিরা (২৫), শংকরপাশার রঙিলা (৪০) এখনও তার সঙ্গে রয়েছেন। যা আয় করেন, তাই দিয়ে সংসারের ঘানি টানেন,ওষুধ কিনে খান। আর প্রতি মাসে কিছু টাকা জমান। সে টাকা দিয়েই ধর্মীয় কাজে অংশ নেন।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার বসবাসের কোন জায়গা-জমি নেই। পরের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘর ছাড়া আর কিছুই চাই না।’
তিনি বলেন, যেকোনো মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলে কাজের স্পৃহা আরও বেড়ে যায়। কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীদের ইতিবাচক বাধার সম্মুখীনও হতে হয়। তাই বলে নিজের দায়িত্ব থেকে কখনো সরে আসি-নি। করোনাকালীন সময়ে ওই ভয়াল পরিবেশে কাজ করেছি মানুষের জন্য। মৃত্যুভয় মানুষের কল্যাণে ছুটে গিয়েছি। দেরীতে হলেও আজ এই মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলাম।#
যশোর রামনগরে মারপিটের ঘটনায় মামলা
পূর্বশত্রুতার জের ধরে যশোর শহরতলীর রামনগরে (মোল্লাপাড়া) গৃহবধু আলেয়া বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে জখম ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। ওই গৃহ বধুর স্বামী মহিদুল ইসলাম (৫০) শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) একই পরিবারের তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে রামনগর গ্রামের নিছলার তিন ছেলে ফুরার, আসালাম ও হোসেন।
মামলায় মহিদুল ইসলাম বলেছেন, আসামিদের বাড়ি ও আমাদের বাড়ি একই গ্রামে। আসামিরা আমার পূর্বপরিচিত। আসামিদের সাথে আগে থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ চলে আসছে। ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আসামি ফুরার আমার স্ত্রী আলেয়া বেগমকে তাদের বাড়ি ডেকে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রী আলেয়া বেগম সরল বিশ্বাসে আসামিদের বাড়ি গেলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আসামিরা আলেয়া বেগমকে বাঁশের লাঠি লোহার রড ও ধারালো দা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে জখম করে। আমার স্ত্রী প্রানে বাঁচার জন্য চিৎকার দিলে ছেলে জাহাঙ্গির হোসেন রক্ষা করতে যায়। আসামরিা ছেলেকেও মারপিট করে জখম করে। আসামিরা আমার স্ত্রীর পরনের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় আসামিরা আমার স্ত্রীর কানে থাকা আট আনা ওজনের সোনার দুল টান দিয়ে ছিড়ে নেয়। ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা পরিবারের লোকজনকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি স্ত্রী ছেলেকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।#
রাজগঞ্জ ভাসমান সেতুতে বিএসপির চড়ইভাতি অনুষ্ঠিত
বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের (বিএসপি) চড়–ইভাতি শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মণিরামপুর রাজগঞ্জের ভাসমান সেতুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতি এবং বিভিন্ন খেলাধূলায় উপভোগ্য এ চড়–ইভাতিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পুরষ্কারপ্রাপ্ত কবি ও প্রাবন্ধিক হোসেনউদ্দিন হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, বিশিষ্ট কলামিস্ট আমিরুল ইসলাম রন্টু।
চড়–ইভাতি উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কবি মোস্তফা কামাল দাদুর সভাপতিত্বে বিভিন্ন পর্যায়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দোতনা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি. ড. শাহনাজ পারভীন, মুক্তেশ^রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ডা. মোকাররম হোসেন, দোতনা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার সোহেল, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী রকিবুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এডিএম রতন, কবি জাহানারা খান কোহিনূর, বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আহমদ রাজু, সহসভাপতি আমির হোসেন মিলন, নূরজাহান আরা নীতি, সহ-সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া সুলতানা চাপা, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসনাত সজল, কোষাধ্যক্ষ আবুল হাসান তুহিন, অফিস সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আহমেদ মাহাবুব ফারুক, রাজপথিক, কাজী নূর, রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. আহাদ আলী, কবি হোসেন উদ্দিন, কবি মশিয়ার রহমান খান, আব্দুর রশিদ খান, আলমগীর হোসেন হিমেল, মুস্তাক মোহাম্মদ প্রমুখ।
বিএসপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মুন্না পরিচালনায় চড়–ইভাতিতে বিভিন্ন শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
চড়–ইভাতির শুরুতেই ফুল দিয়ে সবাইকে বরণ করেন বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম রন্টু। এরপর বাঙালির ঐতিহ্যের কলাপাতায় খেজুরের রসের পায়েস দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয় এবং পুরষ্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় চড়–ইভাতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হোসেনউদ্দিন হোসেন বলেন, বাঙালি ও সাহিত্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে চড়–ইভাতি। জীবনের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে কোলাহল থেকে বেরিয়ে এসে এরকম চড়–ইভাতি করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সঠিক সংস্কৃতির নির্দেশনা দেয়ার জন্য অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।#
জনপ্রিয়

যশোরের গুরুত্বপূর্ণ খবরা খবর

প্রকাশের সময় : ০৯:৫২:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

যশোরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের সইতে না পেরে এক গৃহবধূ ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের সইতে না পেরে এক গৃহবধূ ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাবার সাথে মোবাইলে কথা বলতে বলতে শনিবার দুপুর বারটার দিকে উপজেলার রাজঘাট রেলক্রসিংয়ের পাশে খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের নীচে ঝাঁপদিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। নিহত গৃহবধুর নাম সুমাইয়া বেগম (২২)। তিনি উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের আলী হোসেন চুন্নির ছেলে রকি শেখের স্ত্রী এবং খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে। নিহতের পিতা মহিরুল ইসলাম বাবলু জানান, গত তিন বৎসর পুর্বে রকির সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। আমি তাদের এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। গত বছর গলায় ছুরি দিয়ে আমার মেয়েকে রকি মেরে ফেলতে গিয়েছিলো। আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি এবং মামলা করি। পরে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন আমার বাড়ি এসে আলোচনা করে মামলা মিমাংসা করে মেয়েকে আবার নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন অব্যাহতভাবে নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সে ট্রেনে কেটে আত্মহত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, সুমাইয়া আত্মহত্যার আগে আমার সাথে মোবাইলে কথা বলছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা বলছিল। তখন প্রায় দুপুর বারটা বাজে। আমি তাকে মোবাইলে বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ করছিলাম। সে আমাকে বলেছিলো বাবা তোমার নাতীকে দেখে রেখো। তখন মোবাইলে আমি ট্রেন আসার শব্দ শুনছিলাম। হঠাৎ একটি শব্দ শুনলাম। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটুপর জানতে পারি সে ট্রেনে ঝাঁপদিয়ে আত্মহত্যা করেছে। জানতে চাইলে যশোর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন,‘ শুনেছি একজন গৃহবধূ রাজঘাট এলাকায খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের সামনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে জেনে পরবর্তি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।#
মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা
নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে মানবসেবার পাশাপাশি ৩৪টি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করায় মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা বেগম। ভূমি-গৃহহীন আনোয়ারা বেগমকে এই সম্মাননা দিয়েছেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশন।
দুপুরে যশোরের নওয়াপাড়ায় আনোয়ারার অস্থায়ী নিবাসে তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ।
এসময় ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ বলেন, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বা ভালো কাজ করতে গেলে ত্রুটি-বিচ্যুতি বা ভুলভ্রান্তি থাকবেই। এগুলোকে উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ধৈর্যচ্যুত হয়ে লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে এলে দেশের ক্ষতি হবে, দেশ পিছিয়ে পড়বে। তাই আমাদের সমালোচনার পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য ভালো কাজের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
আরশাদ পারভেজ আরো বলেন,কাজের স্বীকৃতিই বড় কথা, আর এই স্বীকৃতি পেলে কাজের অনুপ্রেরণা বাড়ে। ‘আবু কাজেম ফাউন্ডেশন’ এর মতো অনেক সংগঠন আছে বিধায়ই মানুষ এখনো মানবিক কাজের স্পৃহা পায়।
এ সময় আনোয়ারা ও তার গোষ্ঠীকে সহায়তার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ
আনোয়ারা বর্তমানে অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর এলাকার ক্লিনিকপাড়ায় ভাড়া বাসায় জীবন কাটাচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সী অনোয়ারার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে যশোরে। মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃভূমি নারায়নগঞ্জ ছেড়েছেন তিনি। ঘরছাড়া আনোয়ারা পেশাগত কারণে নওয়াপাড়া আসেন। এরপর তিনি এখানে বসবাস শুরু করেন। প্রায় ১১ জনের একটি গোষ্ঠি তার সঙ্গে যুক্ত হয়। তিনি ছিলেন দলনেতা। করোনাকালে পেশায় ভাটা পড়ে। একে একে অনেকেই তাকে ছেড়ে চলে যায়। কলারোয়ার মনিরা (৩০), অভয়নগরের কাদিরপাড়ার ইতি (২৭),বউবাজারের মিরা (২৫), শংকরপাশার রঙিলা (৪০) এখনও তার সঙ্গে রয়েছেন। যা আয় করেন, তাই দিয়ে সংসারের ঘানি টানেন,ওষুধ কিনে খান। আর প্রতি মাসে কিছু টাকা জমান। সে টাকা দিয়েই ধর্মীয় কাজে অংশ নেন।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার বসবাসের কোন জায়গা-জমি নেই। পরের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘর ছাড়া আর কিছুই চাই না।’
তিনি বলেন, যেকোনো মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলে কাজের স্পৃহা আরও বেড়ে যায়। কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীদের ইতিবাচক বাধার সম্মুখীনও হতে হয়। তাই বলে নিজের দায়িত্ব থেকে কখনো সরে আসি-নি। করোনাকালীন সময়ে ওই ভয়াল পরিবেশে কাজ করেছি মানুষের জন্য। মৃত্যুভয় মানুষের কল্যাণে ছুটে গিয়েছি। দেরীতে হলেও আজ এই মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলাম।#
যশোর রামনগরে মারপিটের ঘটনায় মামলা
পূর্বশত্রুতার জের ধরে যশোর শহরতলীর রামনগরে (মোল্লাপাড়া) গৃহবধু আলেয়া বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে জখম ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। ওই গৃহ বধুর স্বামী মহিদুল ইসলাম (৫০) শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) একই পরিবারের তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে রামনগর গ্রামের নিছলার তিন ছেলে ফুরার, আসালাম ও হোসেন।
মামলায় মহিদুল ইসলাম বলেছেন, আসামিদের বাড়ি ও আমাদের বাড়ি একই গ্রামে। আসামিরা আমার পূর্বপরিচিত। আসামিদের সাথে আগে থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ চলে আসছে। ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আসামি ফুরার আমার স্ত্রী আলেয়া বেগমকে তাদের বাড়ি ডেকে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রী আলেয়া বেগম সরল বিশ্বাসে আসামিদের বাড়ি গেলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আসামিরা আলেয়া বেগমকে বাঁশের লাঠি লোহার রড ও ধারালো দা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে জখম করে। আমার স্ত্রী প্রানে বাঁচার জন্য চিৎকার দিলে ছেলে জাহাঙ্গির হোসেন রক্ষা করতে যায়। আসামরিা ছেলেকেও মারপিট করে জখম করে। আসামিরা আমার স্ত্রীর পরনের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় আসামিরা আমার স্ত্রীর কানে থাকা আট আনা ওজনের সোনার দুল টান দিয়ে ছিড়ে নেয়। ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা পরিবারের লোকজনকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি স্ত্রী ছেলেকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।#
রাজগঞ্জ ভাসমান সেতুতে বিএসপির চড়ইভাতি অনুষ্ঠিত
বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের (বিএসপি) চড়–ইভাতি শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মণিরামপুর রাজগঞ্জের ভাসমান সেতুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুভূতি এবং বিভিন্ন খেলাধূলায় উপভোগ্য এ চড়–ইভাতিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পুরষ্কারপ্রাপ্ত কবি ও প্রাবন্ধিক হোসেনউদ্দিন হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, বিশিষ্ট কলামিস্ট আমিরুল ইসলাম রন্টু।
চড়–ইভাতি উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কবি মোস্তফা কামাল দাদুর সভাপতিত্বে বিভিন্ন পর্যায়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দোতনা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি. ড. শাহনাজ পারভীন, মুক্তেশ^রী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ডা. মোকাররম হোসেন, দোতনা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার সোহেল, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী রকিবুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এডিএম রতন, কবি জাহানারা খান কোহিনূর, বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আহমদ রাজু, সহসভাপতি আমির হোসেন মিলন, নূরজাহান আরা নীতি, সহ-সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া সুলতানা চাপা, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসনাত সজল, কোষাধ্যক্ষ আবুল হাসান তুহিন, অফিস সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আহমেদ মাহাবুব ফারুক, রাজপথিক, কাজী নূর, রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. আহাদ আলী, কবি হোসেন উদ্দিন, কবি মশিয়ার রহমান খান, আব্দুর রশিদ খান, আলমগীর হোসেন হিমেল, মুস্তাক মোহাম্মদ প্রমুখ।
বিএসপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মুন্না পরিচালনায় চড়–ইভাতিতে বিভিন্ন শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
চড়–ইভাতির শুরুতেই ফুল দিয়ে সবাইকে বরণ করেন বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম রন্টু। এরপর বাঙালির ঐতিহ্যের কলাপাতায় খেজুরের রসের পায়েস দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয় এবং পুরষ্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় চড়–ইভাতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হোসেনউদ্দিন হোসেন বলেন, বাঙালি ও সাহিত্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে চড়–ইভাতি। জীবনের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে কোলাহল থেকে বেরিয়ে এসে এরকম চড়–ইভাতি করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সঠিক সংস্কৃতির নির্দেশনা দেয়ার জন্য অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।#