শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ন্যাসভ্যাক অনুমোদন পেল হেপাটাইটিস-বি’র চিকিৎসার

হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসকে নীরব ঘাতক বলা হয়। বাংলাদেশে এর প্রাদুর্ভাব বেশ লক্ষণীয়। সমস্যা হলো, এটি দেহে দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। এর সংক্রমণে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে পরবর্তী সময়ে লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সারসহ নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।

জটিল এ রোগের সংক্রমণ ও প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন জাপানের ইহেমি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞানী শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর। কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস লিভারের প্রতিটি কোষে থেকে যায়। এর কারণে কারও বড় ধরনের অসুখ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যদি এ ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে চাই, তাহলে তা দেহ থেকে সরাতে হবে, যা খুবই কঠিন। আমাদের গবেষণায় একটি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর নাম ন্যাসভ্যাক। বাজারে থাকা ওষুধ থেকে এটি সবচেয়ে বেশি কার্যক্রম ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। অন্যান্য ওষুধ খাওয়া শুরু করলে ৫ থেকে ১০ বছর বা সারাজীবনই খেতে হয়। আমাদের ন্যাসভ্যাক হচ্ছে চিকিৎসা ভ্যাকসিন। এটি মাত্র ৫ মাস ব্যবহার করতে হয়। এ ওষুধ ভাইরাসকে দমাতে পারে, ভাইরাস যেন রোগ তৈরি করতে না পারে এবং রোগপ্রতিরোধ বাড়াতে কাজ করে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ গবেষক বলেন, প্রতিটি অসুখের মূল কারণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি। আমাদের মূল লক্ষ্য, কীভাবে রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াকে হত্যা না করে চিকিৎসা করতে পারি। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ ক্যান্সার সেল আক্রান্ত। তখন যদি ক্যান্সার সেলগুলো নষ্ট করা হয়, তাহলে হয়তো রোগী আর বাঁচবে না। তাই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে যেন লিভার ক্যান্সার বা লিভার সিরোসিস না হয়, সেটাই গবেষণার মূল বিষয়।

শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর বলেন, ন্যাসভ্যাক ওষুধটি কিউবায় ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের ড্রাগ অথরিটিও এটির উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতের অনুমোদন দিয়েছে। তবে এখনো দেশে উৎপাদন শুরু হয়নি। ওষুধটি কিউবা থেকে আমদানি করা হবে বা দেশে উৎপাদন হবে, তা নিয়ে কাজ চলছে। আশা করি, ২০২৩ সালের মধ্যে এটি দেশে বাজারজাত শুরু হবে।

মানুষের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে নানা গবেষণা চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশসহ সাউথ এশিয়া অঞ্চলের লিভারের রোগ নিয়েও গবেষণা চলছে। লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার হয়ে প্রতিবছর বিশ্বে ৮ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে ২ থেকে ৫ শতাংশ মানুষ ক্রনিক হোপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত।

ন্যাসভ্যাক অনুমোদন পেল হেপাটাইটিস-বি’র চিকিৎসার

প্রকাশের সময় : ১০:২৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসকে নীরব ঘাতক বলা হয়। বাংলাদেশে এর প্রাদুর্ভাব বেশ লক্ষণীয়। সমস্যা হলো, এটি দেহে দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। এর সংক্রমণে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে পরবর্তী সময়ে লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সারসহ নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।

জটিল এ রোগের সংক্রমণ ও প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন জাপানের ইহেমি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞানী শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর। কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস লিভারের প্রতিটি কোষে থেকে যায়। এর কারণে কারও বড় ধরনের অসুখ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যদি এ ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে চাই, তাহলে তা দেহ থেকে সরাতে হবে, যা খুবই কঠিন। আমাদের গবেষণায় একটি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর নাম ন্যাসভ্যাক। বাজারে থাকা ওষুধ থেকে এটি সবচেয়ে বেশি কার্যক্রম ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। অন্যান্য ওষুধ খাওয়া শুরু করলে ৫ থেকে ১০ বছর বা সারাজীবনই খেতে হয়। আমাদের ন্যাসভ্যাক হচ্ছে চিকিৎসা ভ্যাকসিন। এটি মাত্র ৫ মাস ব্যবহার করতে হয়। এ ওষুধ ভাইরাসকে দমাতে পারে, ভাইরাস যেন রোগ তৈরি করতে না পারে এবং রোগপ্রতিরোধ বাড়াতে কাজ করে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ গবেষক বলেন, প্রতিটি অসুখের মূল কারণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি। আমাদের মূল লক্ষ্য, কীভাবে রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াকে হত্যা না করে চিকিৎসা করতে পারি। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ ক্যান্সার সেল আক্রান্ত। তখন যদি ক্যান্সার সেলগুলো নষ্ট করা হয়, তাহলে হয়তো রোগী আর বাঁচবে না। তাই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে যেন লিভার ক্যান্সার বা লিভার সিরোসিস না হয়, সেটাই গবেষণার মূল বিষয়।

শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর বলেন, ন্যাসভ্যাক ওষুধটি কিউবায় ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের ড্রাগ অথরিটিও এটির উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতের অনুমোদন দিয়েছে। তবে এখনো দেশে উৎপাদন শুরু হয়নি। ওষুধটি কিউবা থেকে আমদানি করা হবে বা দেশে উৎপাদন হবে, তা নিয়ে কাজ চলছে। আশা করি, ২০২৩ সালের মধ্যে এটি দেশে বাজারজাত শুরু হবে।

মানুষের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে নানা গবেষণা চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশসহ সাউথ এশিয়া অঞ্চলের লিভারের রোগ নিয়েও গবেষণা চলছে। লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার হয়ে প্রতিবছর বিশ্বে ৮ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে ২ থেকে ৫ শতাংশ মানুষ ক্রনিক হোপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত।