বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূরুঙ্গামারীতে তীব্র শীত উপেক্ষা করে চলছে ইরি-বোরো রোপন

উত্তরের সীমান্ত ঘেষা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গত কয়েক দিনের তীব্র শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব।
হাড় কাঁপানো প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কৃষকরা। প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ। সঠিক সময়ে বোরো ধান রোপন করতে পেরে খুশি কৃষকেরা।
প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে চারা রোপন করা পর্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটছে কৃষকেরা। সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপনের কাজ চলছে। কোনো জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপন সব মিলিয়ে মাঠে মাঠে জোরেশোরে চলছে বোরো ধান রোপনের কাজ।
কৃষকরা বলছেন, এক ফসল বিক্রি করে অন্য ফসল আবাদ করা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা পাইকারী হারে কৃষি জমি গুলো লিজ দিয়ে তৈরি করছেন মাছ চাষের পুকুর। এতে করে স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তিন ফসলী কৃষি জমি।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, গত বছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন ৩ বিঘা জমিতে। প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরির কাজ শেষের দিকে। আর ক’দিনের মধ্যে চারাগাছ রোপন করা শুরু করবো।
পশ্চিম ছাট গোপালপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ী গ্রামের কৃষক জয়নাল হোসেন বলেন, পৌষ মাসের শুরুতেই বোরো ধান রোপন করা শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। তাই চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেলো। এতে করে ফলনও একটু ব্যাহত হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জব্বার বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা উপজেলার কৃষকদের বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে জমিতে চারা রোপন করা পর্যন্ত সকল পরামর্শ প্রদান করে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুক’লে থাকলে এবার ইরি-বোরো চাষে কৃষক লাভবান হবে।
আবহাওয়া জনিত কারণে প্রতি বছর বীজতলা কম বেশী নষ্ট হলেও এ বছর শীত ও ঘন কুয়াশার মাঝেও বীজতলায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বীজতলার তেমন একটা ক্ষতি না হওয়ায় উপজেলার কৃষকেরা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার আরও জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ‍্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আনুমানিক ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা বাড়বে তখন সব স্বাভাবিক হবে এবং বোরো চাষের লক‍্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, আপাতত কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। স্থায়ী ভাবে যদি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। যাতে কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি না হয় জন‍্য আমরা কৃষককে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
জনপ্রিয়

ভূরুঙ্গামারীতে তীব্র শীত উপেক্ষা করে চলছে ইরি-বোরো রোপন

প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪
উত্তরের সীমান্ত ঘেষা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গত কয়েক দিনের তীব্র শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব।
হাড় কাঁপানো প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কৃষকরা। প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ। সঠিক সময়ে বোরো ধান রোপন করতে পেরে খুশি কৃষকেরা।
প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে চারা রোপন করা পর্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটছে কৃষকেরা। সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপনের কাজ চলছে। কোনো জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপন সব মিলিয়ে মাঠে মাঠে জোরেশোরে চলছে বোরো ধান রোপনের কাজ।
কৃষকরা বলছেন, এক ফসল বিক্রি করে অন্য ফসল আবাদ করা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা পাইকারী হারে কৃষি জমি গুলো লিজ দিয়ে তৈরি করছেন মাছ চাষের পুকুর। এতে করে স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তিন ফসলী কৃষি জমি।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, গত বছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন ৩ বিঘা জমিতে। প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরির কাজ শেষের দিকে। আর ক’দিনের মধ্যে চারাগাছ রোপন করা শুরু করবো।
পশ্চিম ছাট গোপালপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ী গ্রামের কৃষক জয়নাল হোসেন বলেন, পৌষ মাসের শুরুতেই বোরো ধান রোপন করা শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। তাই চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেলো। এতে করে ফলনও একটু ব্যাহত হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জব্বার বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা উপজেলার কৃষকদের বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে জমিতে চারা রোপন করা পর্যন্ত সকল পরামর্শ প্রদান করে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুক’লে থাকলে এবার ইরি-বোরো চাষে কৃষক লাভবান হবে।
আবহাওয়া জনিত কারণে প্রতি বছর বীজতলা কম বেশী নষ্ট হলেও এ বছর শীত ও ঘন কুয়াশার মাঝেও বীজতলায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বীজতলার তেমন একটা ক্ষতি না হওয়ায় উপজেলার কৃষকেরা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার আরও জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ‍্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আনুমানিক ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা বাড়বে তখন সব স্বাভাবিক হবে এবং বোরো চাষের লক‍্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, আপাতত কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। স্থায়ী ভাবে যদি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। যাতে কোন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি না হয় জন‍্য আমরা কৃষককে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।