
যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় যুবলীগ নেতা নৌকা প্রতীকের সমর্থক সবুজ হোসেন (৩৫) গুরুতর জখম হয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টুর ভাই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন আহত সবুজ হোসেন। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার ঝাঁপা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সবুজ হোসেন ঝাঁপা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি বলেন, ‘সদস্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনে কার্যক্রম চালিয়েছি। নির্বাচনের পর থেকে চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টুর ভাই সাইফুল ইসলাম ও রওশন জামান টুটুল আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। শনিবার সাড়ে ১২ টার দিকে আমি মোটরসাইকেলে রাজগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিলাম। এ খবর পেয়ে আগে থেকেই সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে ঝাঁপা বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু পাশে ওৎঁপেতে থাকে। আমাকে গতিরোধ করে সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় সাইফুল ইসলাম আমাকে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করতে যায়। আমার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে আমি গুলির হাত থেকে রক্ষা পাই । এসময় আমাকে উদ্ধার করতে গিয়ে নুরুজ্জামান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাদের অস্ত্রের আঘাতে আহত হন। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে যশোর-২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।’
সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সবুজ হোসেনের বাম হাতসহ শরীরের একাধিক স্থানে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার শরীরের ক্ষত স্থান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। প্রথম দফায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।#
যশোর নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রীর আত্মহত্যা
যশোর শহরের বকচর হুশতলা গ্রিন সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের আবাসিক হোস্টেলের ছাত্রী বর্না খাতুন(২২) গলায় ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরের বকচর এলাকার গ্রীন সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে। বন্যা খাতুন নার্সিং ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী । তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের জিন্নাত আলীর কন্যা। কি কারনে বন্যা খাতুন আত্মহত্যা করেছে তার সহপাঠীরা কেউ বলতে পারছে না। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ অপমৃত্যু মামলা
হয়েছে।
যশোরে ব্রাদার টিটোস হোমে বার্ষিক পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রয়
যশোর শহরের লালদিঘি পাড়ে ব্রাদার টিটোস হোমে বার্ষিক পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রয়-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে স্কুল আঙিনায় ছিল এই আয়োজন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা তাদের নিজ হাতে তৈরি পিঠা নিয়ে এতে হাজির হন। ১৫টি স্টলে পিঠা বিক্রি করা হয়। এসব স্টলে চিতই, পাকান, ভাপা, সুজি পিঠা, ডিম পিঠা, ঝুলিয়া, টেবুয়া, হালুয়াসহ রকমারি পিঠার সমাহার ছিল।
আয়োজনের শেষ পর্যায়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের হাতে উপহার হিসেবে একটি করে বই তুলে দেন ব্রাদার টিটোস হোমের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ আলী আজম টিটো ও যশোরের কাগজের যুগ্ম সম্পাদক সালমান হাসান রাজিব ।#
বাঘারপাড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আশকার বেপরোয়া ,জুরায় তাণ্ডব
দলবল নিয়ে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে যশোরের বাঘারপাড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আশকার আলী জোয়াদ্দার। খাজুরা এলাকায় একের পর এক ঘটছে ‘আশকার বাহিনী’র অপরাধের ঘটনা। জামিনে মুক্তি পেয়ে সহযোগীদের নিয়ে এখন নানা অপরাধকাণ্ড করছে আশকার। সর্বশেষ, গতকাল দিনে-দুপুরে খাজুরা বাজারতলি এলাকায় জমি দখলের চেষ্টা চালিয়েছে। এ সময় মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ আসলে ছত্রভঙ্গ হয়ে দলবল নিয়ে পালিয়ে যায় একসময়ে ত্রাস আশকার। এতে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শনিবার বিশাল মোটরসাইকেল বহর ও দলবল নিয়ে খাজুরা বাজারে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী আশকার। দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত এ বহরে দেখা গেছে, সদর উপজেলার ইছালী, রাজাপুর, হুদা, জগমানপুর এবং বাঘারপাড়ার খাজুরা ও কৃষ্ণনগর এলাকার চিন্থিত সব সন্ত্রাসীদের। বেলা ১১টার দিকে বাজারতলির পার্বতীপুর এলাকায় জমি দখল শুরু করে তারা। এ সময় জমির মালিক, ভুক্তভোগী ওই এলাকার নুরজাহান বেগম ও তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসলে একমাত্র সন্তান সোহরাব বিশ্বাসকে মারপিট করে। এ ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক খাজুরা ক্যাম্পের পুলিশ ও স্থানীয়দের বাধার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আশকার ও তার সহযোগীরা।
জমির মালিক ও ভুক্তভোগী পার্বতীপুরের মৃত কাঠি মাহমুদ মোল্যার একমাত্র মেয়ে নুরজাহান বলেন, ‘আমার পিতার মৃত্যুর পর ৩০ বছর আগে মেজো ভাইয়ের অংশের ৪ শতক জমি আমি ক্রয় করি। নিজেদের মধ্যের জমি হওয়ায় সেটা নামপত্তন করা হয়নি। গত ৩ বছর আগে আমার মেজো ভাই আইয়ুব মোল্যা মারা যান। তিন স্ত্রী, দুই ছেলে ও ছয় মেয়েসহ ১১ জন ওয়ারেশ রেখে গেছেন তিনি। বছর খানেক আগে আমার মেজো ভাইয়ের ছোটছেলে মহব্বত তার দ্বিতীয় পক্ষের মা ও বড়ভাই সাগরকে বাদ রেখে ভুয়া ওয়ারেশ কাইয়েমে ওই জমি নিজের নামে দলিল করে নিয়েছে। এ নিয়ে মিস কেস করেছি, কেস নং-১৯৯। যা খাজুরা ভূমি অফিসে তদন্তনাধীন।’
জমির মালিক নুরজাহান আরো বলেন, ‘ভয়ের সবচেয়ে বড় কারণ তৈরি হয়েছে গতবছরের ২৭ ডিসেম্বর। সেদিন আমার ওই জমি মহব্বত বিনা টাকায় সন্ত্রাসী আশকারের বউ শেফালির নামে লিখে দিয়েছে। এরপর জমি দখল করতে মরিহা হয়ে উঠেছে আশকার ও তার লোকজন। শুরু হয় একের পর এক হুমকি-ধামকি। গত শুক্রবার বিকেলে আমার বাড়িতে এসে আমার স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সন্ত্রাসী আশকার। পরদিন (গতকাল) আমার ওই ৪ শতক জমি দখল করবে এবং আমরা সেখানে গেলে গুলি ও বোমা মারবে বলে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি বাঘারপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এখন স্বামী-সন্তান দিয়ে চরম নিরাপত্তার মধ্যে আছি।’
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাজুরা বাজারতলির ধর্মগাতী এলাকার গণি বিশ্বাসই সকল নাটের গুরু। বিরোধপূর্ণ জমি যেখানেই সেখানে গণির হাত থাকে। বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের প্রভাবিত করে বিরোধপূর্ণ জমি দখলের চেষ্টা করে থাকে। গত ছয় মাস আগে গণির তৈরি ছকে পড়ে ধর্মগাতী মালোপাড়ার কার্ত্তিক বিশ্বাস ভয়ে বসতভিটা ছেড়ে সপরিবারে ভারতে চলে গেছেন। এলাকার সবাই গণির বিষয়ে জানলেও তার হাতে থাকা আশকারের মতো ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না। গত মাস খানেক আগে সন্ত্রাসী আশকার জহুরপুর ইউনিয়নের মাঝিয়ালী এলাকায় এক ব্যক্তির কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেও বলে জানা গেছে।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওসি আরো বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যেই করুক না কেনো, কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।#
যশোর হালসা বাজারে হামলার ঘটনায় তিন জনের নামে মামলা
যশোর সদর উপজেলার হালসা বাজারে কামারুল ইসলাম নামে এক যুবককে কুপিযে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। কামারুলের ভাই শরিফুল ইসলাম বিশ্বাস ৩জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। আসামিরা হলো, হালসা ঢালিপাড়ার তার ফুফা আব্দুল আলীম (৫৭), ফুফাতো ভাই আরিফ (৩৬) এবং ভাতিজা আসিফ (১৭)।
এজাহারে শরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, বছর খানেক আগে কামারুল আসামি আরিফের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ১০ কাঠা জমি বন্দক নেয়। ওই বন্দকী টাকা ফেরৎ চাইলে আরিফ আজ না কাল বলে ঘুরাতে থাকে। এমনকি খুনের হুমকি দেয়। গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হালসা বাজারের একটি চায়ের দোকানের সামনে পৌছালে আসামিরা গাছি দা ও চাপাতি নিয়ে তার ওপর আক্রমন করে। তাকে কুপিয়ে জখম করে। সে সময় তার চিৎকালে আশেপশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ফের হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তার ভাই কামারুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। #