বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেয়াদ আরও বাড়ল মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। এর ফলে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন আরও পেছাল। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।

চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ বুধবার মধ্যরাতে শেষ হবে। এর আগে বুধবার দিনে বৈঠকে বসে মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল। বৈঠকে দেশে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক সেনা অভ্যুত্থানে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে দেশের ক্ষমতা দখলে নেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। এরপর তিন বছর পার হয়ে গেছে। তবে এত দিন পার হলেও এখন সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় রয়েছেন জান্তাপ্রধান। গত অক্টোবরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জোট বেঁধে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গণতন্ত্রপন্থি যোদ্ধারাও।

সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দেশজুড়ে সশস্ত্র বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করার সময় তারা জরুরি অবস্থা তুলে নিতে পারবে না। এক বিবৃতিতে জান্তা সরকার জানিয়েছে, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজধানী নেপিডোর এই বৈঠকে বহুদলীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সামরিক বাহিনী দফায় দফায় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে যাচ্ছে। সমান তালে জান্তা বিরোধীদের ওপর চলছে দমন-পীড়ন। স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গ্রুপের মতে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বিজয়ের পথে জান্তাবিরোধীরা

অভ্যুত্থানের পর থেকে একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ছে মিয়ানমার। এসব নিষেধাজ্ঞার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির অর্থনীতিতে। ২০১৯ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশের অর্থনীতির আকার ১০ শতাংশ ছোট হয়েছে।

অন্যদিকে অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা বলছে, তারা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। সু চির দলের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ডুয়া লাশি লা মঙ্গলবার আলজাজিরাকে বলেছেন, তিন বছর পার হয়েছে। বসন্ত বিপ্লব এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী। দিন যত যাচ্ছে আমরা জয়ের কাছাকাছি চলে যাচ্ছি। অপরাধী সামরিক বাহিনী কখনই জনগণের ইচ্ছাশক্তি দমন করতে পারবে না।

জনপ্রিয়

মেয়াদ আরও বাড়ল মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। এর ফলে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন আরও পেছাল। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।

চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ বুধবার মধ্যরাতে শেষ হবে। এর আগে বুধবার দিনে বৈঠকে বসে মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল। বৈঠকে দেশে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এক সেনা অভ্যুত্থানে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে দেশের ক্ষমতা দখলে নেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। এরপর তিন বছর পার হয়ে গেছে। তবে এত দিন পার হলেও এখন সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় রয়েছেন জান্তাপ্রধান। গত অক্টোবরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জোট বেঁধে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গণতন্ত্রপন্থি যোদ্ধারাও।

সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দেশজুড়ে সশস্ত্র বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করার সময় তারা জরুরি অবস্থা তুলে নিতে পারবে না। এক বিবৃতিতে জান্তা সরকার জানিয়েছে, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজধানী নেপিডোর এই বৈঠকে বহুদলীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির বিষয়টি উঠে এসেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সামরিক বাহিনী দফায় দফায় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে যাচ্ছে। সমান তালে জান্তা বিরোধীদের ওপর চলছে দমন-পীড়ন। স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গ্রুপের মতে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বিজয়ের পথে জান্তাবিরোধীরা

অভ্যুত্থানের পর থেকে একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ছে মিয়ানমার। এসব নিষেধাজ্ঞার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির অর্থনীতিতে। ২০১৯ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশের অর্থনীতির আকার ১০ শতাংশ ছোট হয়েছে।

অন্যদিকে অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা বলছে, তারা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। সু চির দলের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ডুয়া লাশি লা মঙ্গলবার আলজাজিরাকে বলেছেন, তিন বছর পার হয়েছে। বসন্ত বিপ্লব এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী। দিন যত যাচ্ছে আমরা জয়ের কাছাকাছি চলে যাচ্ছি। অপরাধী সামরিক বাহিনী কখনই জনগণের ইচ্ছাশক্তি দমন করতে পারবে না।