
গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সম্প্রতি আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রেপ্তার ও হয়রানি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। কলাম্বিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। এমআইটি, ইয়েলসহ দেশটির অন্তত শীর্ষ ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিক্ষোভ চলাকালে কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শত শত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার শীর্ষস্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলসের ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া (ইউএসসি) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থেকে চলে যেতে বাধ্য করতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানানোয় বৃহস্পতিবার আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৮ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইমোরি পুলিশ বিভাগ বলেছে, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অংশে বিক্ষোভ চলছিল, সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ধাওয়া দেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে ডাকার পর সেখানে নতুন করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর নতুন করে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গাজায় গণহত্যা বন্ধ করার ও ইসরায়েলের সমর্থনে মার্কিন সরকারকে অস্ত্র উৎপাদনসহ অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় ধরনের অর্থ বিনিয়োগ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী ও বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী চিসাতো মিমুরা বিবিসিকে বলেছেন, গাজায় গণহত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র-সরঞ্জাম সরবরাহ ও ইসরায়েলে অর্থায়নের ঘটনায় আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ। বাইডেন প্রশাসন যা করছে, তা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার জন্য দায়ী।
এদিকে অনেকের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তার কয়েকটিতে ইহুদিবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। কলাম্বিয়াসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ইহুদি শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা ক্যাম্পাসে অনিরাপদবোধ করছেন।
তার বিপরীত বয়ানও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। এখানে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীদের দুটি সংগঠন। সংগঠনগুলো হলো জিয়ুইশ ভয়েস ফর প্যালেস্টাইন এবং প্যালেস্টাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। তা ছাড়া আন্দোলনরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মিনিসোটার ডেমোক্র্যাট দলীয় কংগ্রেসউইমেন ইলহান ওমর ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া ইলহান ওমরের মেয়ে ইসরা হিরসিকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় স্থানীয় পুলিশ।
ইলহান ওমর বলেন, মাত্র ৭০ জন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ এখন স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho