
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪০০টি প্রতিষ্ঠান ও কয়েক ডজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তার অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে বুধবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ অফিস (ওএফএসি) ও পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভারতের ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দুই নাগরিকও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু এবারই প্রথম করা হয়নি। তবে তৃতীয় একটি দেশে আক্রমণের বিরুদ্ধে সর্বশেষ এই পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সমন্বিত একটি ধাক্কা।
মার্কিন এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হয়েছে, যখন আমেরিকার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে ভারতীয় নাগরিকের জড়িত থাকার অভিযোগ ঘিরে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইতোমধ্যে চাপের মাঝে রয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ব্যর্থ হওয়া ষড়যন্ত্র নিয়ে ভারতীয় তদন্তে অর্থপূর্ণ জবাবদিহিতা না পাওয়া পর্যন্ত ওয়াশিংটন পুরোপুরি সন্তুষ্ট হবে না।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশের সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র আজ প্রায় ৪০০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি রাশিয়ার অবৈধ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
‘‘পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র দপ্তর ১২০ জনেরর বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে পররাষ্ট্র দপ্তর। একই সঙ্গে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ২৭০ জনেরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার জন্য নির্দিষ্ট করছে। এছাড়া বাণিজ্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করছে।’’
পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত-সহ একাধিক দেশের রাশিয়ার কাছে বিভিন্ন পণ্য ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য পণ্য বিক্রিতে বাধা দেওয়াই এই পদক্ষেপের লক্ষ্য। দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য এসব পণ্য যুদ্ধ ও শান্তি-- উভয়ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়া এসব দেশের প্রতিষ্ঠানের অস্ত্র ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে।
‘‘এর মাঝে মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স এবং কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল (সিএনসি) পণ্য রয়েছে। যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য এবং জাপানের পাশাপাশি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের ব্যুরো অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সিকিউরিটির (বিআইএস) দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।’’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিষেধাজ্ঞার জন্য নির্দিষ্ট করা ১২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ভারতীয় চারটি সংস্থার বিরুদ্ধে বিস্তারিত অভিযোগের বিবরণ দিয়েছে। এই চার প্রতিষ্ঠান হলো অ্যাসেন্ড এভিয়েশন ইন্ডিয়া, মাস্ক ট্রান্স, টিএসএমডি গ্লোবাল এবং ফুট্রেভো।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত রাশিয়া-ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর কাছে ৭ শতাধিক চালান পাঠিয়েছে অ্যাসেন্ড এভিয়েশন। এর মধ্যে ২ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের উচ্চ অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত পণ্য রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিমানের বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; যা ভারতে তৈরি করা হয়।
এছাড়া ভারতীয় অপর কোম্পানি মাস্ক ট্রান্স গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত রাশিয়া-ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর কাছে ৩ লাখ ডলার মূল্যের বিমান সরঞ্জামের চালান পাঠিয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। অন্য দুই ভারতীয় কোম্পানিকে রাশিয়ার অর্থনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি খাতে সহায়তা করার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
ভারতীয় যে দুই নাগরিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তারা হলেন বিবেক কুমার মিশ্র ও সুধীর কুমার। তারা দু’জনই দিল্লি-ভিত্তিক কোম্পানি অ্যাসেন্ড এভিয়েশনের পরিচালক।
সূত্র: রয়টার্স, ইকোনমিক টাইমস।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho