
যশোর প্রতিনিধি।।
যশোরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের প্রধান অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে আটক করেছে পিবিআই যশোরের সদস্যরা।
আজ বৃহস্প্রতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন যশোর পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।
এর আগে বুধবার রাতে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক প্রতারক তেতুলতলা ঈদগাওপাড়ার মোসলেম উদ্দিন গাজীর ছেলে। এঘটনার সঙ্গে জড়িত মিজানুরের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা পালিয়ে গেছে।
পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, শার্শা উপজেলার সোনাতনকাটি গ্রামের শাহজাহান আলী ভুট্টোর স্ত্রী রোকসানা বেগম সম্প্রতি এ চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে পিবিআই যশোরে অভিযোগ করেন। বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেন। যার দায়িত্ব দেয়া হয় এসআই হাসানুজ্জামানকে।
পুলিশ বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল শার্শার সোনাতনকাটি গ্রামে যান। সেখানে যেয়ে তারা জানতে পারেন ওই এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন মিজানুর দম্পত্তি। নিজেকে পরিচয় দিতেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা। সেখান থেকেই রোকসানার সাথে পরিচয় হয় এ চক্রের। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বড় ধরনের আয়োজন করে এলাকাবাসীর আপ্যায়ন করে এ চক্র। এমনকি গরু জবাই দিয়ে মানুষকে খাওয়ানোর নজির রয়েছে তাদের। এসব দেখে এলাকায় বিস্বস্ততা অর্জন করেন মিজানুর। পরবর্তিতে মিজানুর পরিচিতদের জানান,তিনি ডাচবাংলা ব্যাংক থেকে শতকরা তিন শতাংশ মুনাফা হারে লোন দিতে পারবেন। তবে, একলাখ টাকা নিতে হলে অগ্রীম পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে ও গ্রহীতার একাধিক ব্যাংক চেক দিতে হবে। তার এমন প্রচারণায় মানুষ লোন নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। একপর্যায় রোকসানাসহ ১৩ জন গ্রাহক লোন নেয়ার জন্য ৪৭টি চেক জমা দেন। একই সাথে মিজানুর দম্পত্বির হাতে ৯লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন তারা। এক মাসের মধ্যে গ্রাহককে চাহিদামতন লোন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এর মাঝে সাড়ে নয়লাখ টাকা নিয়ে গত ৩০ আগস্ট রাতে স্বপরিবারে ভাড়াবাড়ি থেকে চম্পট দেয় মিজানুর দম্পত্তি। পরে অসহায় হয়ে পড়েন গ্রাহকেরা। তাদের মধ্যে রোকসানা পিবিআইএর কাছে অভিযোগ দেয়ার পর পিবিআই এর তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিরাল। এ ঘটনায় শার্শা থানায় নিয়মিত মামলা করেছেন রোকসানা।
আজ বৃহস্পতিবার মিজানুরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তারা।