শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি আজ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে আজ।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ শুনানি হতে পারে।

এর আগে, ৩ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ঠিক করা হয়। আদালতে ওইদিন শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

প্রথম দিনের শুনানির বিষয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, শুনানিতে যা বলা হয়েছে তা হলো, যারা রিট করেছিলেন তারা বলেছেন জনস্বার্থে করেছেন। কিন্তু মূলত এটা জনস্বার্থে রিট করা হয়নি। এটি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। তারা যে রিট করেছেন তাদের সেই এখতিয়ার নেই। তারা জনস্বার্থে বলেছেন, কিন্তু মূলত রিট করেছেন ব্যক্তি স্বার্থে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় প্রশ্ন যেটি সামনে এসেছে, নির্বাচন কমিশনের সামনে ইলেকশন প্রসেস ও ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন প্রসেস শেষ হওয়ার আগেই তারা রিট করেছে। বিষয়টি তখনও নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিচারাধীন ছিল। এ দুটি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। এদিন নির্বাচন কমিশন ও অন্যপক্ষকেও শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়ে আসতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়ে ওইদিন আইনজীবী শিশির মনির বলেছিলেন, বিলম্ব মার্জনা করে আপিল পুনরুজ্জীবিত করার অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আমরা এ আপিল শুনানির জন্য নিয়ে আসবো। এ মামলার আপিলকারী মারা যাওয়ায় করায় নতুন আপিলকারী স্থলাভিষিক্ত হবেন, এরপর নতুন করে আপিল শুনানির জন্য আবেদন করা হবে।

তিনি বলেন, এটি একটি সার্টিফিকেট আপিল। হাইকোর্ট বিভাগই সার্টিফিকেট দিয়েছিল যে এখানে সাংবিধানিক ইস্যু জড়িত। লিভ টু আপিল না করে সরাসরি আপিল করা যাবে। হাইকোর্ট বিভাগ যেখানে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, এ ধরনের মামলা শুনানি ছাড়া খারিজ করা যায় না। এজন্য আমাদের বিলম্ব মার্জনা করেছেন ও আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

শিশির মনির বলেন, শুনানিতে অপরপক্ষ থেকেও আপত্তি নেই মর্মে জানানো হয়েছিল। আপিল শুনানির সময় প্রতীকের বিষয়টিও আসবে। আপিল মঞ্জুর হলে নিবন্ধনের সঙ্গে আশা করি প্রতীকও অ্যালাউ হবে।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামায়াতের আপিল খারিজ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) করে আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, তার আগে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গত ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এরপর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হয়।

জনপ্রিয়

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি আজ

প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে আজ।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ শুনানি হতে পারে।

এর আগে, ৩ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর করা আপিলের শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত। ওইদিন পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ঠিক করা হয়। আদালতে ওইদিন শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

প্রথম দিনের শুনানির বিষয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, শুনানিতে যা বলা হয়েছে তা হলো, যারা রিট করেছিলেন তারা বলেছেন জনস্বার্থে করেছেন। কিন্তু মূলত এটা জনস্বার্থে রিট করা হয়নি। এটি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। তারা যে রিট করেছেন তাদের সেই এখতিয়ার নেই। তারা জনস্বার্থে বলেছেন, কিন্তু মূলত রিট করেছেন ব্যক্তি স্বার্থে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় প্রশ্ন যেটি সামনে এসেছে, নির্বাচন কমিশনের সামনে ইলেকশন প্রসেস ও ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন প্রসেস শেষ হওয়ার আগেই তারা রিট করেছে। বিষয়টি তখনও নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিচারাধীন ছিল। এ দুটি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। এদিন নির্বাচন কমিশন ও অন্যপক্ষকেও শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়ে আসতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়ে ওইদিন আইনজীবী শিশির মনির বলেছিলেন, বিলম্ব মার্জনা করে আপিল পুনরুজ্জীবিত করার অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আমরা এ আপিল শুনানির জন্য নিয়ে আসবো। এ মামলার আপিলকারী মারা যাওয়ায় করায় নতুন আপিলকারী স্থলাভিষিক্ত হবেন, এরপর নতুন করে আপিল শুনানির জন্য আবেদন করা হবে।

তিনি বলেন, এটি একটি সার্টিফিকেট আপিল। হাইকোর্ট বিভাগই সার্টিফিকেট দিয়েছিল যে এখানে সাংবিধানিক ইস্যু জড়িত। লিভ টু আপিল না করে সরাসরি আপিল করা যাবে। হাইকোর্ট বিভাগ যেখানে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, এ ধরনের মামলা শুনানি ছাড়া খারিজ করা যায় না। এজন্য আমাদের বিলম্ব মার্জনা করেছেন ও আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

শিশির মনির বলেন, শুনানিতে অপরপক্ষ থেকেও আপত্তি নেই মর্মে জানানো হয়েছিল। আপিল শুনানির সময় প্রতীকের বিষয়টিও আসবে। আপিল মঞ্জুর হলে নিবন্ধনের সঙ্গে আশা করি প্রতীকও অ্যালাউ হবে।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামায়াতের আপিল খারিজ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) করে আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, তার আগে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গত ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এরপর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হয়।