
আড়াই বছরের নাজিফের জেদ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় মা সেগুফতা তাসনীমকে। চাকরি করেন বলে দিনের অনেকটা সময়ই থাকতে হয় অফিসে। তবে বাকি যে সময়টুকু পান, তার পুরোটাই দেওয়ার চেষ্টা করেন একমাত্র সন্তানকে। কিন্তু মা-বাবা বাড়ি ফেরার পর থেকেই নাজিফ সবকিছুতে জেদ করতে থাকে। তার সঙ্গে এটা-সেটা বায়না তো আছেই। যতই দিন যাচ্ছে, তার আবদার আর ছোট ছোট বিষয়ে জেদের প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
শিশুদের এমন জেদের মুখোমুখি হন অনেক মা-বাবাই। বাইরে গেছেন, কোনো কিছু পছন্দ হয়ে গেল তখনই সে জিনিসটি হাতে না পেলে সেখানেই চিৎকার, কান্নাকাটি করে হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটায়। বুঝিয়ে, আদর করে বা ধমকে কোনোভাবেই কাজ হয় না। অগত্যা বিব্রতকর অবস্থা এড়াতে তার ইচ্ছাই পূরণ করতে হয়। শিশুদের মধ্যে ১০ শতাংশ শিশু এমন হয়, যাদের সহজে মানানো যায় না। তবে জেদ সহজেই সামলে নেওয়া যায় এমন শিশুর সংখ্যাই বেশি।
জেদের কারণ : একরোখা ভাব বা যেকোনো কিছু নিয়ে জেদ করা অনেক শিশুরই বিশেষ এক বৈশিষ্ট্য। জেদকে মূলত শিশুর রাগ আর হতাশার শরীরী প্রকাশই বলা চলে। কোনো কিছু নষ্ট করা, অতিরিক্ত কান্না, মারধর করা ইত্যাদি জেদের বহিঃপ্রকাশ। শিশুর এই জেদকে বিশেষ ভাষায় টেম্পার ট্যানট্রাম বলে। দুই থেকে চার বছরের শিশুদের মধ্যে এটি বেশি লক্ষ করা যায়। এই শিশুরা একটানা দীর্ঘক্ষণ চিৎকার করে, মেঝেতে হাত-পা ছুড়ে কান্না করে। এদের মধ্যে কারো সঙ্গে নিজের কিছু শেয়ার না করা, একই বয়সী অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করার প্রবণতা দেখা যায়।
অতিরিক্ত রাগ প্রকাশের কারণ শিশুর রাগের একটি কারণ হলো তার অনুভূতি অন্যকে
যথাযথভাবে বোঝাতে না পারা। নিজের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের জন্যও শিশু জেদ করে থাকে। অনেক সময় ক্ষুধা বা ক্লান্তি শিশুর মেজাজ খিটখিটে করে দেয়। অনেক মা-ই বলে থাকেন ঘুমের আগে শিশুরা বেশি জেদ করে। কাজে একঘেয়েমি শিশুর জেদের আরো একটি কারণ।
জেদ নিয়ন্ত্রণের উপায়
শিশুর জেদ ও অবাঞ্ছিত আচরণগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে উপেক্ষা করুন। এতে শিশু বুঝবে জেদ করে, সে কোনো কিছু আদায় করতে পারছে না। ধীরে ধীরে সে ওই আচরণ থেকে বেরিয়ে আসবে।
জেদের সময় শিশুকে বকা দেওয়া, মারধর করা বা শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়। এতে করে তার মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সন্তানকে সব কাজে বাধা না দিয়ে যে কাজগুলো তার জন্য ক্ষতিকর নয়-এমন কিছু কাজ নিজের মতো করতে দিন।
রাগান্বিত অবস্থায় শিশুকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা না করে সে শান্ত হলে তার এমন আচরণের কারণ জানতে চান এবং এমন করা যে ঠিক নয় তা বুঝিয়ে বলুন।
সন্তানের রাগ কমাতে গিয়ে নিজে রেগে যাবেন না। বাসার অন্যদের সঙ্গে আচরণেও এ বিষয়টি মাথায় রাখুন, যাতে আপনার আচরণ শিশুকে প্রভাবিত না করে।
শিশুর কোনো নেতিবাচক আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সে কাউকে আঘাত করলে তা যে উচিত হয়নি তা তাকে বুঝিয়ে দিন।
তার চাহিদা পূরণ করুন এমনভাবে, যাতে সে বুঝতে না পারে আবদার করেছিল বলেই তাকে এটি দেওয়া হলো। তাই চাওয়া মাত্রই না দিয়ে এক দিন পর বা অন্য কোনো সময় দিন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho