প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ৭:২০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৫, ২০২৫, ১:২৩ পি.এম
পাঁচ নারী ফুটবলারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

২২ মিনিটের একটা সংবাদ সম্মেলনে কোচের উপর তাদের রাগ, ক্ষোভ, অভিমান, অভিযোগ—সবই প্রকাশ পায়। পরে কোচ-খেলোয়াড়দের মিলিয়ে দেয় বাফুফে। সেই বিদ্রোহীদের ১৩ জন এখন খেলছেন পিটারের দলে। বাকি পাঁচজন দলের বাইরে। প্রশ্ন উঠছে, বাকি পাঁচজনের ভবিষ্যত কী?
গত বছর সাফের আগে কোচের সাথে নারী ফুটবলারদের দ্বন্দ্ব চাউর হলে তা গুঞ্জন হিসেবেই গণমাধ্যমে আসে। তবে সাফ চলাকালীন একজন সিনিয়র নারী ফুটবলার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। কোচ-খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্বের মাঝেই দ্বিতীয়বারের মতো সাফে চ্যাম্পিয়নও হয় বাংলাদেশ।
সাফের শিরোপা জয়ের পর ছুটিতে চলে যান খেলোয়াড়রা। কোচ পিটার বাটলারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি এই দলের সাথে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ফিরে যান নিজ দেশে। তবে বাফুফে তাকে আবার নিয়োগ দিলে বাঁধে বিপত্তি। ছুটি কাটিয়ে খেলোয়াড়রা বাফুফের আবাসিক ক্যাম্পে ফিরে বিদ্রোহ করেন—পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করার সিদ্ধান্ত নেন।
৩০ জানুয়ারি, ২২ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে কোচের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি, উৎপীড়ন, মানুষ হিসেবে অমর্যাদা করা, বডি শেমিং, দুর্ব্যবহার, ধারাবাহিক বৈষম্য, অন্যায় আচরণসহ আরও বেশকিছু অভিযোগ তোলেন বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। এমন পরিস্থিতিতে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাফুফে।
বহু চেষ্টার পর কোচ ও খেলোয়াড়দের সাথে বসেন বাফুফে সভাপতি ও নারী উইংয়ের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা। বিষয়টি সমাধান হয়। অনুশীলনে ফিরতে রাজি হন বিদ্রোহীরা, কোচও ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন তাদের ভুলকে।
ওই সময় ১৮ নারী ফুটবলারকে ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল পরপর দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেন, দল হারে দুটি ম্যাচেই।
এরপর জুনে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার সাথে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ, দারুণ পারফরম্যান্সে করে সিরিজ ড্র। এই দলে জায়গা পেয়েছিলেন কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ১৩ জন। এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা দলেও ছিলেন সেই ১৩ জন। সিনিয়র-জুনিয়রের মিশেলে গড়া দল নিয়ে কোচ বাটলার তার দুর্দান্ত কৌশলে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। তবে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে দলের বাইরে থাকা ৫ নারী ফুটবলারের ভবিষ্যত নিয়ে।
এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাথে চুক্তি আছে সেই ১৮জন নারী ফুটবলারের। এর মধ্যে দলের বাইরে থাকা ৫ ফুটবলারও আছেন। সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার, মাসুরা পারভীন ও মাতসুশিমা সুমাইয়া এই মুহূর্তে খেলছেন ভুটান লিগে। জানা গেছে, ভুটানের লিগেও তাদের চুক্তি অক্টোবর পর্যন্তই। একসঙ্গে দুই চুক্তি শেষ হওয়ায় পরবর্তীতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই হাঁটছেন তারা। ক্যাম্পে ফিরতে না পারলে কিংবা বাফুফে তাদের চুক্তিতে না রাখলে, ২৩–২৪ বছর বয়সেই ফুটবল ক্যারিয়ারকে বিদায় বলতে হতে পারে এই খেলোয়াড়দের।
এএফসি এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের পর থেকেই এই পাঁচ নারী ফুটবলারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা হচ্ছে। ভুটান লিগে খেলতে যাওয়ার আগে পিটারের অধীনে অনুশীলন করলেও তারা কেন দলে নেই? তাদের ভবিষ্যৎ কী? ফুটবল সমর্থক ও তাদের ভক্তদের এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
তাদের ভবিষ্যৎ আদৌ জাতীয় দলে আছে কি না?, জানতে বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বাফুফের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, নারী উইংয়ের প্রধান তাদের ব্যাপারে একক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কোচ পিটার বাটলারের উপরই নির্ভর করছে তাদের ভবিষ্যৎ। ৫ জনের সবাইকে না ফেরালেও কয়েকজনের ফেরার সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে তাদেরও দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা—পারফরম্যান্স, ফিটনেস এবং শৃঙ্খলার পরীক্ষাও।
এদিকে এই পাঁচজনই ভুটানের লিগে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন, আছেন ছন্দে। তাদের মধ্যে কেউই যদি আর জাতীয় দলের ক্যাম্পে ফিরতে না পারেন, প্রশ্ন থেকেই যাবে—বাফুফের অবহেলা, নিজেদের জেদ না–কি কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে হারিয়ে যেতে হচ্ছে এই সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের?
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho