
মানুষের জীবনঘনিষ্ঠ প্রতারণার সবচেয়ে পরিচিত রূপ হলো—মিথ্যা বলা। সম্পর্ক রক্ষা কিংবা কারও মন ভাল করার প্রয়োজনে অনেক সময় নিরীহ ধরনের মিথ্যা বলার প্রবণতা দেখা গেলেও, ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দেওয়ার ঘটনা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এমনকি কোনো বিষয়ে সত্য-মিথ্যার ব্যবধান বুঝতে না পারার কারণে নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই।
অনেকেই আছেন সম্পর্কে থাকা অবস্থায় গোপনীয়তার আশ্রয় নেন। সঙ্গীর কাছ থেকে অনেক কিছু লুকান। অথচ সম্পর্ক স্বচ্ছতা খুবই জরুরি। দুজনের মধ্যে কেউ একজন যদি দিনের পর দিন মিথ্যা কথা বলেন তাহলে এক সময় সম্পর্কে ফাটল ধরে। আপনার সঙ্গী যদি বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা কথা বলেন তাহলে সাবধান হোন। সঙ্গী যদি আপনার কাছে মিথ্যা বলে সেটা বোঝা কঠিন নয়। একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই সঙ্গী মিথ্যে বলছেন নাকি, সেটা ধরে ফেলতে পারেন।
টাইম ম্যাগাজিন–এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষক ও মনোবিজ্ঞানীরা তুলে ধরেছেন, কীভাবে একজন ব্যক্তি মিথ্যা বলছেন কি না, তা নির্ণয় করা যায়।
শরীরী ভাষায় প্রকাশ পায় অসততা: সাউদার্ন কানেকটিকাট স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক কেভিন কলওয়েল বলেন, ‘মিথ্যাবাদীরা বেশিরভাগ সময়েই নিজেদের অসততা লুকাতে চায়। কিন্তু শরীরী ভাষা অনেক কিছু বলে দেয়।’
এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট জিম ক্লেমেন্ট জানান, মিথ্যা বলা ব্যক্তি অনেক সময় চোখে চোখ রাখতে পারেন না, ঘামতে থাকেন কিংবা বারবার ঠোঁট ভেজাতে থাকেন। কেউ কেউ অস্থির হয়ে পড়েন, চেয়ার দোলান, হাত-পা নাড়ান, গলা পরিষ্কার করেন। এসবই হতে পারে মিথ্যা বলার মানসিক চাপের বহিঃপ্রকাশ।
ঘটনার শুরু থেকে বর্ণনা এবং বাক্য পুনরাবৃত্তি: গবেষকরা বলেন, কেউ মিথ্যা বলছেন কি না তা বুঝতে হলে তাকে ধীরে ধীরে কথা বলতে দিতে হবে, কোনো সন্দেহ প্রকাশ না করে। যদি দেখা যায়, তিনি একাধিকবার একই বাক্য বা তথ্য পুনরাবৃত্তি করছেন, তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে—তাঁর বক্তব্য প্রস্তুত করা, অর্থাৎ ‘স্ক্রিপ্টেড’। কারণ সত্যিকারের অভিজ্ঞতায় কেউ কোনো ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকেই বর্ণনা শুরু করেন। কিন্তু মিথ্যাবাদী ঘটনাটির শুরু থেকে বলে যান, যেন মুখস্থ করা তথ্য উপস্থাপন করছেন।
অতিরিক্ত সাবলীলতা, ভাষাগত বৈচিত্র্য ও সর্বনাম বাদ: মিথ্যাবাদীদের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তারা কথা বলার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক সাবলীল হয়ে ওঠেন। প্রাক-পরিকল্পিত থাকায় তাঁদের ভাষা হয় গুছানো ও ঝরঝরে। কলওয়েল বলেন, ‘কারও আচরণ যদি হঠাৎ অতিরিক্ত পরিষ্কার, বিন্যাসবদ্ধ ও প্রাঞ্জল মনে হয়, তবে সন্দেহ করা যুক্তিযুক্ত।’
তারা প্রায়ই নিজেদের বিচ্ছিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। যেমন—‘দুপুরে খেয়েছি’ বললেও ‘আমি খেয়েছি’ বলেন না। কারণ এতে সঙ্গী ব্যক্তির উপস্থিতি গোপন করা যায়।
আচরণ ও বক্তব্যে অসামঞ্জস্য: কেউ গুরুতর বা আবেগতাড়িত কোনো ঘটনার কথা বলতে গিয়ে হাসিমুখে থাকে কিংবা স্বাভাবিক আচরণ করে, এমন হলে বোঝা যায়—তিনি ঘটনাটির সত্যতা অনুভব করছেন না। ক্লেমেন্ট বলেন, ‘যারা সত্য বলেন, তাঁদের চোখেমুখেও তা ফুটে ওঠে। কিন্তু মিথ্যাবাদীদের মুখে থাকে অনভিব্যক্তি, চোখে থাকে স্থিরতা।’
অনুমাননির্ভরতা ও এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল: ‘সম্ভবত’, ‘মনে হয়’, ‘হয়তো’—এ ধরনের অস্পষ্ট শব্দের মাধ্যমে মিথ্যাবাদীরা অনেক সময় নিজেদের অবস্থান নির্দিষ্ট না করে বক্তব্য দেন। অনেকে আবার সরাসরি মিথ্যা না বলে বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho