
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার পর এবার কাঙ্ক্ষিত শাপলা প্রতীকই পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র খবরের কাগজকে এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ইসির সম্প্রতি প্রকাশিত গেজেটে ‘শাপলা’ প্রতীক না থাকলেও দলটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেবে সংস্থাটি। এদিকে এনসিপিকে তাদের পছন্দের শাপলা প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল নির্বাচন কমিশনকে তাদের অনাপত্তির কথা জানিয়েছে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ইসিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি মনে করে, প্রতীক ইস্যু নিয়ে ইসির সঙ্গে বিরোধে জড়ানো তাদের কাজ নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা খবরের কাগজকে জানান, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া হলে তাতে তাদের আপত্তি নেই।
গত ৩ অক্টোবর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জানিয়েছেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক দাবি করার পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে দলটির কয়েকজন নেতা তার সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতে দলটির নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের দলকে ইসির পক্ষ থেকে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়া হলে তিনি কোনো মামলা করবেন না।
মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের নির্বাচনি প্রতীক কেতলি। তবে দলটি যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল, তখন তারাও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল। কিন্তু ইসি তা দেয়নি। গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির শাপলা প্রতীকের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘নাগরিক ঐক্যও শাপলা প্রতীক চেয়েছিল, তাদেরও দেওয়া হয়নি।’
দলের জন্য শাপলা প্রতীক দাবির বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন গতকাল খবরের কাগজকে জানান, শাপলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে তাদের আলোচনা দীর্ঘদিনের ও ধারাবাহিক। তিনি বলেন, ‘আমরা ইসির সঙ্গে শুরু থেকেই প্রতীক ইস্যুতে নিয়মিত আলোচনা করেছি। শাপলা প্রতীক আমাদের দলের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। দল নিবন্ধনের সময় থেকেই আমরা এই প্রতীক বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছি। নির্বাচনে প্রতীক শুধু একটি চিহ্ন নয়, এটি জনগণের সঙ্গে দলের সম্পর্কের ভিত্তি। কমিশনের প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় আমরা মনে করি এটি একটি সীমাবদ্ধতা, যা নীতিগত ও আইনি বিবেচনায় দূর করা সম্ভব।’
শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গে তিনি আরও করেন, ‘এই প্রতীক আমাদের জাতীয় ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। কমিশনের কাছে আমরা আবেদন করেছি যে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা- এই প্রতীকগুলোর যেকোনো একটি অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হোক।’ তিনি জানান, এনসিপি ইসির প্রক্রিয়া, আইন ও বিধিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেও নিজেদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনড়। কাজেই দলটির নেতাদের আশা, তফসিলে না থাকা শাপলা প্রতীক দ্রুত তালিকাভুক্ত করে তাদের দলকে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে নির্বাচন কমিশন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধনভুক্ত করার সিদ্ধান্ত জানায় ইসি। ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ দুটি দল নিবন্ধনের জন্য শর্ত পূরণ করায় কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর এ দুটি দলের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আছে কি না, তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।’
দলের নিবন্ধনের পর থেকে এনসিপি এই প্রতীক পাওয়ার জন্য ইসির কাছে নিয়মিত আবেদন জানিয়ে আসছিল। তবে গত ২ অক্টোবর ইসি ১১৫টি প্রতীকের গেজেট জারি করে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক স্থগিত থাকায় জামায়াতে ইসলামীর ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক পুনর্বহাল করা হয়। তবু এনসিপি যে ‘শাপলা’ প্রতীকের আবেদন করেছিল, তা তালিকায় ছিল না। ইসি সচিব আখতার আহমেদ তখন বলেন, ‘নির্বাচনি প্রতীকের তালিকায় শাপলা নেই, তাই তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দলটিকে বিকল্প প্রতীকের প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে।’
একই সঙ্গে ইসি জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নীতিগতভাবে পর্যালোচনা করতে পারে, তবে সিদ্ধান্তের জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমন্বয় জরুরি। বিধিমালা সংশোধনের পর শাপলা প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলে এনসিপিকে তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে। ---খবরের কাগজ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho