প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ১:৫৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১:৩৮ পি.এম

আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ দুনিয়ায় এক বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছেন, তার ইবাদত করা আর আখেরাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। কিন্তু মানুষ প্রায়ই এই দুনিয়ার চাকচিক্যে মগ্ন হয়ে সেই উদ্দেশ্য ভুলে যায়। ধন-সম্পদ, পদ-মর্যাদা ও আরাম-আয়েশের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে সে প্রকৃত সুখ ও প্রশান্তি হারিয়ে ফেলে।
কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে প্রকৃত সফলতা দুনিয়ার প্রাচুর্যে নয়; বরং অন্তরের তৃপ্তি, আল্লাহভীতি ও আখেরাতের ফিকিরে নিহিত। কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা জানতে পারি, যে ব্যক্তি দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আখেরাতকে উদ্দেশ্য বানায়, আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়াতেও সম্মান ও পরিতৃপ্তি দান করেন।
ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মানুষগণ, নবী-রসুলগণ, সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈনগণ, সবাই দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত থেকে আখেরাতমুখী জীবন যাপন করেছেন। তাদের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের জন্য শিক্ষা ও অনুকরণের উপকরণ।
নিম্নে তাদের জীবনের কিছু অনুপ্রেরণাদায়ক ঘটনা তুলে ধরা হলো, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আসল শান্তি দুনিয়ার বস্তুতে নয়, বরং আল্লাহর স্মরণে এবং আখেরাতের চিন্তায়।
ফাতেমা (রা.)-এর ত্যাগ ও আখেরাতমুখী জীবন
হজরত উমর বিন আবদুল আজিজ (রহ.)-এর স্ত্রী ফাতেমা (রা.) ছিলেন বাদশাহ আবদুল মালিকের কন্যা। রাজপরিবারের দুলালী হয়েও তিনি স্বামীর সঙ্গে আখেরাতমুখী জীবন বেছে নেন। একদিন এক বৃদ্ধা এসে বললেন, বিবি, আপনি কি রাজবধূ? ফাতেমা (রা.) বললেন, আমি-ই রাজবধূ, আর যিনি কাদামাটির কাজ করছেন, তিনি আমিরুল মুমিনিন উমর বিন আবদুল আজিজ।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের ঘর কোরবানি দিয়েছি, কিন্তু মানুষের ঘরগুলো আবাদ করেছি। (ইবনে জাওযি, সিফাতুস সাফওয়া, খণ্ড ২, পৃ. ১২৮)
ফাতেমা (রা) হারটি রাখতে চাইলেন, কিন্তু উমর (রহ.) বললেন, যদি তুমি ওমরের সঙ্গে থাকতে চাও, তবে হার ছাড়া থাকবে। তিনি উত্তর দিলেন, আমি হার ছাড়াই ওমরের সঙ্গে থাকতে রাজি। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ৯, পৃ. ১৯১)
হযরত সালমান ফারসী (রা.)-এর শেষ সময়ের কান্না মৃত্যুশয্যায় তিনি কাঁদছিলেন। জিজ্ঞেস করা হলে বললেন, এই সামান্য জিনিসপত্রও আমার কাছে সাপের মতো লাগছে। (ইবনে সা’দ, তাবাকাতুল কুবরা, খণ্ড ৪, পৃ. ৮৮)
আখেরাতমুখী মানুষ দুনিয়ার সামান্য সম্পদকেও ভার মনে করেন। শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচা আমাদের প্রধান শত্রু হলো শয়তান। সে দুনিয়ার রঙ-ঢঙ দেখিয়ে আমাদের আখেরাত ভুলিয়ে দেয়।
আল্লাহ তাআ'লা বলেন, নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু, তাই তোমরাও তাকে শত্রু মনে করো। সে কেবল নিজের দলকে আহ্বান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়। (সূরা ফাতির, আয়াত: ৬) তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে, যেন দুনিয়ার মোহে পড়ে চিরস্থায়ী জীবনের প্রস্তুতি ভুলে না যাই।
আখেরাতের ফিকিরই প্রকৃত শান্তি স্নেহের ভাই ও বোনেরা, দিলের রুখ দুনিয়ার দিকে নয়, আখেরাতের দিকে রাখুন। আখেরাতের চিন্তা ও আমলেই রয়েছে প্রকৃত শান্তি, এতমিনান ও সফলতা। আল্লাহ তাআ'লা বলেন, জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়। (সুরা রাদ, আয়াত: ২৮) আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে দুনিয়ার ধোঁকা থেকে রক্ষা করে আখেরাতমুখী জীবন দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন। --সময় সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho