প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২১, ২০২৫, ১:৫৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ১:৪৯ পি.এম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সিরাজগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী তৎপরতা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর জেলা জুড়ে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনা ও কৌতূহল বেড়েছে। কোনো কোনো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার–প্রচারণা আলোচনার কেন্দ্রে থাকলেও কোথাও দলীয় অসন্তোষ, আবার কোথাও নেতাদের দলবদল নির্বাচনী পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
জেলার সবকটি আসনেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীরা মাঠে নামায় নির্বাচনী তৎপরতা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। উঠান বৈঠক, পথসভা, গণসংযোগ, মিছিল এবং পোস্টার–ব্যানারে গ্রাম ও শহর এলাকায় নির্বাচনী আবহ তৈরি হয়েছে। বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে অন্তত দুটি আসনে দলীয় পর্যায়ে অসন্তোষের কথাও জানা গেছে।
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলার চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থীরাও প্রচারণা চালাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কোন দল বা প্রার্থী সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থনের প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন, সে দিকেই নজর স্থানীয় ভোটারদের।
সিরাজগঞ্জ–১ (কাজীপুর ও সদরের একাংশ)
প্রথম দফায় মনোনয়ন ঘোষণার সময় বিএনপি এই আসনটি শূন্য রাখে। দ্বিতীয় ধাপে ৪ ডিসেম্বর কাজীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সেলিম রেজাকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা এবং সহসভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার। মনোনয়নকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা আমির শাহিনুর আলম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনয়ন দিয়েছে আবু জাফরকে। সিপিবির আবদুল বাকী এবং বাসদের আবু সামা সরকারও প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ–২ (সদর ও কামারখন্দ)
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। ইতিমধ্যে উভয় দলের প্রার্থীরা মাঠপর্যায়ে প্রচারণা শুরু করেছেন।
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. মহিব্বুল্লাহ, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন রেজা এবং বাসদের আবদুল্লাহ আল মামুন নির্বাচনী তৎপরতায় রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ–৩ (রায়গঞ্জ ও তাড়াশ)
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আয়নুল হক। সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান তালুকদারের ছেলে রাহিদ মান্নান লেলিন মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও মনোনয়ন না পাওয়ায় দলের একটি অংশ নিষ্ক্রিয় রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুস সামাদ। এনসিপির প্রার্থী দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক দিলশানা পারুল। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের গাজী আইনুল হক, সিপিবির মোস্তাফা নুরুল আমিন এবং বাসদের পলাশ কুমার ঘোষও প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ–৪ (উল্লাপাড়া)
এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য এম আকবর আলী। মনোনয়ন ঘোষণার পর উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আজাদ হোসেনের সমর্থকেরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল ও মানববন্ধন করেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী। সিপিবি থেকে উপজেলা সভাপতি আবদুল হাকিম প্রার্থী হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ–৫ (বেলকুচি ও চৌহালী)
এই আসনে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বিএনপি ছেড়ে এনসিপিতে যোগ দেওয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী মনজুর কাদেরের প্রার্থী হওয়া। তিনি আগে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বিএনপি এখানে মনোনয়ন দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলীমকে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা নায়েবে আমির আলী আলম। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী শেখ মুহাম্মদ নুরুন নবী এবং গণ অধিকার পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থী সোহরাওয়ার্দী হোসেনও প্রচারণায় রয়েছেন। সিপিবি থেকে মতিউর রহমান প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জ–৬ (শাহজাদপুর)
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এম এ মুহিত। তিনি সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী প্রয়াত এম এ মতিনের ছেলে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শাহজাদপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান। এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম সাইফ মুস্তাফিজ। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মেসবাহ উদ্দিন এবং বাসদের আনোয়ার হোসেনও নির্বাচনী তৎপরতায় রয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে সিরাজগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনেই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। দলীয় সাংগঠনিক শক্তি, প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা এবং মাঠপর্যায়ের সক্রিয়তার ভিত্তিতেই ভোটের ফল নির্ধারিত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho