সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিষাক্ত জর্দা-গুল-খয়ের: সেবনকারীদের সচেতন হতে হবে

মনিরুল আলম মিশর :=

দেশের ২২টি প্রতিষ্ঠানের জর্দা, গুল ও খয়েরে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এই ২২টি প্রতিষ্ঠানের জর্দা, গুল ও খয়েরের নমুনা নিয়ে ল্যাব টেস্ট করিয়ে পেয়েছে এই তথ্য। ল্যাব টেস্টের প্রতিটিতেই পাওয়া গেছে উপরোল্লিখিত বিষাক্ত উপাদান।

বলা বাহুল্য, হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং এগুলোর নিয়মিত সেবনে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আন্ত হতে পারে সেবনকারীরা।

আশার কথা, বিএফএসএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো হবে, এরপর সেগুলোর মালিক পক্ষকে ডেকে সংশোধন করার কথা বলা হবে।

তারপরও যদি তারা সংশোধিত না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা, প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হবে। সমাজ নিরীক্ষা করলে দেখা যাবে, জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জর্দা, গুল ও খয়ের সেবনে অভ্যস্ত, সেবনকারীদের মধ্যে নিুবিত্ত নারীর সংখ্যাই বেশি। এদের অনেকেই হাকিমপুরী অথবা শাহজাদী জর্দা ছাড়া পান মুখেই তোলেন না। পুরুষদের মধ্যে নানা ধরনের গুল সেবনের প্রবণতা লক্ষ করা যায়।

বিএফএসএ’র ল্যাব পরীক্ষার পর জর্দা ও গুল ব্যবহারকারীদের সচেতন হতে হবে, যাতে তারা বিষযুক্ত দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকেন। খয়েরসহ যারা পান খান, তাদের জন্য দুঃসংবাদ হল, বিএফএসএ’র অভিযানে দেখা গেছে, সব খয়েরের কারখানায় কাঠের ফার্নিচারে ব্যবহৃত পদার্থ রয়েছে, অর্থাৎ বার্নিশের উপাদান দিয়েই তৈরি হচ্ছে খয়ের। তাই খয়ের সেবন থেকেও নিবৃত্ত থাকতে হবে সবাইকে।

সেবনকারীরা জর্দা, গুল, খয়ের সরাসরি গ্রহণ করে থাকে। এতে পাকস্থলী আক্রান্ত হয় প্রথমে। এরপর তৈরি হয় নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি। কাজেই মরণঘাতী এসব দ্রব্য সেবন থেকে জনসাধারণকে বিরত রাখার জন্য দরকার ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা।

জর্দা, গুল ও খয়েরের ক্ষতিকর দিকগুলো যদি ব্যাপকভাবে প্রচার করা যায়, তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে অবশ্যই। বিএফএসএ’র পক্ষ থেকে প্রচার অভিযানের উদ্যোগ নিতে হবে। সবচেয়ে যা জরুরি তা হল, যে ২২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রয়োজনে সেগুলো সিলগালা করা শুধু নয়, তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনি ব্যবস্থাও এবং সেটা অতি দ্রুততার সঙ্গে।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে সম্পন্ন হলো চট্টগ্রাম মিডিয়া ক্রিকেট ফেস্টের ‘মিডিয়া নাইট’

বিষাক্ত জর্দা-গুল-খয়ের: সেবনকারীদের সচেতন হতে হবে

প্রকাশের সময় : ০৭:১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০১৯
মনিরুল আলম মিশর :=

দেশের ২২টি প্রতিষ্ঠানের জর্দা, গুল ও খয়েরে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এই ২২টি প্রতিষ্ঠানের জর্দা, গুল ও খয়েরের নমুনা নিয়ে ল্যাব টেস্ট করিয়ে পেয়েছে এই তথ্য। ল্যাব টেস্টের প্রতিটিতেই পাওয়া গেছে উপরোল্লিখিত বিষাক্ত উপাদান।

বলা বাহুল্য, হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং এগুলোর নিয়মিত সেবনে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আন্ত হতে পারে সেবনকারীরা।

আশার কথা, বিএফএসএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো হবে, এরপর সেগুলোর মালিক পক্ষকে ডেকে সংশোধন করার কথা বলা হবে।

তারপরও যদি তারা সংশোধিত না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা, প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হবে। সমাজ নিরীক্ষা করলে দেখা যাবে, জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জর্দা, গুল ও খয়ের সেবনে অভ্যস্ত, সেবনকারীদের মধ্যে নিুবিত্ত নারীর সংখ্যাই বেশি। এদের অনেকেই হাকিমপুরী অথবা শাহজাদী জর্দা ছাড়া পান মুখেই তোলেন না। পুরুষদের মধ্যে নানা ধরনের গুল সেবনের প্রবণতা লক্ষ করা যায়।

বিএফএসএ’র ল্যাব পরীক্ষার পর জর্দা ও গুল ব্যবহারকারীদের সচেতন হতে হবে, যাতে তারা বিষযুক্ত দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকেন। খয়েরসহ যারা পান খান, তাদের জন্য দুঃসংবাদ হল, বিএফএসএ’র অভিযানে দেখা গেছে, সব খয়েরের কারখানায় কাঠের ফার্নিচারে ব্যবহৃত পদার্থ রয়েছে, অর্থাৎ বার্নিশের উপাদান দিয়েই তৈরি হচ্ছে খয়ের। তাই খয়ের সেবন থেকেও নিবৃত্ত থাকতে হবে সবাইকে।

সেবনকারীরা জর্দা, গুল, খয়ের সরাসরি গ্রহণ করে থাকে। এতে পাকস্থলী আক্রান্ত হয় প্রথমে। এরপর তৈরি হয় নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি। কাজেই মরণঘাতী এসব দ্রব্য সেবন থেকে জনসাধারণকে বিরত রাখার জন্য দরকার ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা।

জর্দা, গুল ও খয়েরের ক্ষতিকর দিকগুলো যদি ব্যাপকভাবে প্রচার করা যায়, তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে অবশ্যই। বিএফএসএ’র পক্ষ থেকে প্রচার অভিযানের উদ্যোগ নিতে হবে। সবচেয়ে যা জরুরি তা হল, যে ২২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রয়োজনে সেগুলো সিলগালা করা শুধু নয়, তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনি ব্যবস্থাও এবং সেটা অতি দ্রুততার সঙ্গে।