বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেসব ভুলে রোজা ভেঙে যাবে

আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান ।। 

রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আবারও এসেছে মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাস মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। রমজানের নফল একটি ইবাদত অন্য মাসের নফলের চেয়ে বেশি সওয়াব অর্জনের কারণ। তাই রমজানের প্রতিটি আমল খুব সতর্কতার সঙ্গে করা উচিত। ছোট একটি ভুল কিংবা একটু উদাসীনতার কারণে যেন আমার আমল নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল রোজা। রোজাকে আররি ভাষায় সিরাম বলা হয়। সিয়ামের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে জ্বালিয়ে দেয়া। আরেকটি অর্থ হচ্ছে কোনো কিছু থেকে বিরত থাকা বা কোনো কিছু পরিত্যাগ করা।

শরীয়তের পরিভাষায় খাওয়া, পান করা এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সওম। সুবহে সাদেক হওয়ার পূর্ব থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে একাধারে এভাবে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকলেই তা রোজা হিসেবে গণ্য হবে ।

তবে কয়েকটি ভুলের কারণে আমাদের রোজা ভেঙে যেতে পারে। তাই আসুন রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ জেনে নিই।

১. রোজা স্মরণ থাকাবস্থায় কোনো কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা স্ত্রী সহবাস করা। এতে কাজা ও কাফফারা (একাধারে দুই মাস রোজা রাখা) ওয়াজিব হয়। ২. নাকে বা কানে তৈল বা ওষুধ প্রবেশ করানো। ৩. নস্য বা হাঁপানী রোগীর জন্য ইনহেলার গ্রহণ করা। ৪. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করা।

৫. বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। ৬. কুলি করার সময় পানি গলার ভেতরে চলে যাওয়া। ৭. দাঁতে আটকে থাকা ছোলার সমান বা তার চেয়ে বড় ধরনের খাদ্যকণা গিলে ফেলা। ৮. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবেহ সাদিকের পরে জাগ্রত হওয়া। ৯. ধূমপান করা। ১০. ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি কিংবা অন্য কোনো সুগন্ধি দ্রব্যের ধোঁয়া গলধকরণ করা বা নাকের ভেতরে টেনে নেয়া।

১১. রাত মনে করে সুবেহ সাদিকের পর সাহরি খাওয়া বা পান করা।১২. সূর্যাস্তের পূর্বে সূর্য অস্তমিত হয়েছে ভেবে ইফতার করা।

১৩. কেউ যদি রোজা রাখার পরে ফজরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বেহুশ থাকে, তাহলেও তার রোজা ভেঙে যাবে।১৪. শরীর থেকে দূষিত রক্ত বের করলেও রোজা ভেঙে যাবে। যদিও এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভিন্নতা রয়েছে ।এসব কারণে রোজা ভেঙে গেলে শুধু কাজা (পরে একটি রোজা রাখা) ওয়াজিব হয়, কাফফারা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু রোজা ভেঙে যাওয়ার পর দিনের বাকি সময় রোজাদারের ন্যায় পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে কৃষকের অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিকরন এবং নারী ও শিশুর সহিংসতারোধে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

যেসব ভুলে রোজা ভেঙে যাবে

প্রকাশের সময় : ০৪:০০:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২০

আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান ।। 

রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আবারও এসেছে মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাস মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। রমজানের নফল একটি ইবাদত অন্য মাসের নফলের চেয়ে বেশি সওয়াব অর্জনের কারণ। তাই রমজানের প্রতিটি আমল খুব সতর্কতার সঙ্গে করা উচিত। ছোট একটি ভুল কিংবা একটু উদাসীনতার কারণে যেন আমার আমল নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল রোজা। রোজাকে আররি ভাষায় সিরাম বলা হয়। সিয়ামের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে জ্বালিয়ে দেয়া। আরেকটি অর্থ হচ্ছে কোনো কিছু থেকে বিরত থাকা বা কোনো কিছু পরিত্যাগ করা।

শরীয়তের পরিভাষায় খাওয়া, পান করা এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সওম। সুবহে সাদেক হওয়ার পূর্ব থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে একাধারে এভাবে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকলেই তা রোজা হিসেবে গণ্য হবে ।

তবে কয়েকটি ভুলের কারণে আমাদের রোজা ভেঙে যেতে পারে। তাই আসুন রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ জেনে নিই।

১. রোজা স্মরণ থাকাবস্থায় কোনো কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা স্ত্রী সহবাস করা। এতে কাজা ও কাফফারা (একাধারে দুই মাস রোজা রাখা) ওয়াজিব হয়। ২. নাকে বা কানে তৈল বা ওষুধ প্রবেশ করানো। ৩. নস্য বা হাঁপানী রোগীর জন্য ইনহেলার গ্রহণ করা। ৪. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করা।

৫. বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। ৬. কুলি করার সময় পানি গলার ভেতরে চলে যাওয়া। ৭. দাঁতে আটকে থাকা ছোলার সমান বা তার চেয়ে বড় ধরনের খাদ্যকণা গিলে ফেলা। ৮. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবেহ সাদিকের পরে জাগ্রত হওয়া। ৯. ধূমপান করা। ১০. ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি কিংবা অন্য কোনো সুগন্ধি দ্রব্যের ধোঁয়া গলধকরণ করা বা নাকের ভেতরে টেনে নেয়া।

১১. রাত মনে করে সুবেহ সাদিকের পর সাহরি খাওয়া বা পান করা।১২. সূর্যাস্তের পূর্বে সূর্য অস্তমিত হয়েছে ভেবে ইফতার করা।

১৩. কেউ যদি রোজা রাখার পরে ফজরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বেহুশ থাকে, তাহলেও তার রোজা ভেঙে যাবে।১৪. শরীর থেকে দূষিত রক্ত বের করলেও রোজা ভেঙে যাবে। যদিও এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে মতভিন্নতা রয়েছে ।এসব কারণে রোজা ভেঙে গেলে শুধু কাজা (পরে একটি রোজা রাখা) ওয়াজিব হয়, কাফফারা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু রোজা ভেঙে যাওয়ার পর দিনের বাকি সময় রোজাদারের ন্যায় পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।