
প্রফেসর জিন্নাত আলী:/=
বুকে ব্যথা হলে অবহেলা করবেন না। সঠিক ডায়েট বুকে ব্যথার পাশাপাশি হার্টের নানা সমস্যারও সমাধান করে। জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ডায়েটিশিয়ান। অ্যাঞ্জিনা হার্টের এক সঙ্কটপূর্ণ অবস্থা এবং এক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। হার্ট মাসলে অপর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হলে, একধরনের প্রেশার তৈরি হয়, যা বুকে ব্যথার অনুভূতি জাগায়। শারীরিক পরিশ্রম এবং স্ট্রেস হার্টের অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ায়। এছাড়া কোনও মানসিক চাপও অ্যাঞ্জিনা বা অ্যাঞ্জিনা পেক্টোরিসের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে বা খুব তেলতেলে খাবার খেলেও এই ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। যে জালিকা হার্টে রক্ত সরবরাহ করে, তা খুব সরু হয়ে গেলে বা ব্লক হয়ে গেলে (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) অ্যাঞ্জিনা দেখা দেয়। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের সম্ভাবনা বয়স, স্মোকিং, হাই কোলেস্টেরল এবং ওবেসিটির কারণে বাড়তে পারে। রক্ত বহনকারী ধমনি ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করে মূলত চারটি জিনিসের ওপর— আপনার শরীরে কতটা ফ্রি র্যাডিকাল আছে, আপনি কতটা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গ্রহণ করছেন, আপনি রান্নায় কোন ধরনের তেল ব্যবহার করেন এবং আপনার ডায়েটে কতটা সলিউবল ফাইবার রয়েছে। এর থেকে বাঁচতে ওষুধ তো রয়েইছে, তবে ডায়েটেও কিছু পরিবর্তন আবশ্যিক।
শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকলে, কোলেস্টেরল নিয়ে আলাদা করে চিন্তা-ভাবনার দরকার নেই। তবে যদি প্রচুর পরিমাণে প্রসেসড বা রিফাইন্ড ফুড, হোল মিল্ক বা রেড মিট খাবার অভ্যাস থাকে, এবং রক্তে এইচ ডি এল এবং কোলেস্টেরলের অনুপাত অস্বাভাবিক থাকে, বা কোলেস্টেরলের মানও বেশি থাকে, তাহলে আপনার ডায়েট পাল্টানো একান্ত জরুরি।
কী খাবেন?
ডায়েটে এমন খাবার রাখুন যা ধমনির পক্ষে ভাল এবং হার্টের নানা সমস্যা প্রতিরোধ করে। যেমন মাছ, ফল, সবজি, বাদাম, হোল গ্রেন, স্প্রাউট, পেঁয়াজ, রসুন, অলিভ অয়েল এবং বিশেষত এমন খাবার যাতে প্রচুর ভিটামিন সি, ই এবং বিটা ক্যারোটিন রয়েছে।
ফাইবারে সমৃদ্ধ ডায়েট স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। বেশি সলিউবল ফাইবার রাখলে কোলেস্টেরল কমবে। ওট ব্র্যান, গোটা ডাল, হোল গ্রেন এবং শাক-সবজি ও ফলে পর্যাপ্ত সলিউবল ফাইবার থাকে।
প্রতিদিন অল্প করে কাঁচা সবজি বা ফল খান। এতে নানা এনজ়াইম থাকে, যা আর্টারি পরিষ্কার করতে পারে।
প্রচুর পরিমাণে টাটকা ফল ও সবজি খান। টোম্যাটো, গাজর, ভেজিটেবল জুস, পাতাওয়ালা সবজি, স্প্রাউট, হোল গ্রেন ইত্যাদি বেশি করে খান। আপনার প্লেটে যত রঙিন সবজি থাকবে, ততই বেশি নিউট্রিয়েন্ট ইনটেক হবে।
প্রতিদিন ২০% এর বেশি ক্যালরি যেন ফ্যাট থেকে না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনি কোন ধরনের ফ্যাট খাচ্ছেন, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (অলিভ ও ক্যানোলা অয়েলে থাকে) খান।
কাঁচা বাদাম (আমন্ড ও আখরোট) খান। অ্যাভোকাডোও খুব ভাল। এছাড়া অলিভ অয়েল, ফ্যাটি ফিশ যেমন স্যামন, টুনা, ট্রাউট ইত্যাদি খেতে পারলে ভাল। তিসির তেলও (ফ্লাক্স সিড অয়েল) স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল।
যদি আপনি ওভার ওয়েট হন, তাহলে ওজন কমানোও প্রয়োজন। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস জল খাওয়াও আবশ্যিক।
কফি, চা ইত্যাদিতে ক্যাফেন থাকায়, তা স্ট্রেস বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলো এড়িয়ে চলুন। পাশাপাশি স্মোকিং, অ্যালকোহল, চকোলেট, রেড মিট, দুধ, মার্জারিন, মাখন, পাউরুটি, প্রসেসড ফুড, চিনি, ভাজাভুজি, সফ্ট ড্রিঙ্ক, তেল-মশলাদার খাবার, ময়দা জাতীয় খাবার খাওয়া কমান।
নিজস্ব সংবাদদাতা 











































