বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে এসআই মতিন ও কনস্টেবল মজিবুলের জানাজা সম্পন্ন

মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধি ## ১৯ জানুয়ারি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে পাথরবোঝাই ট্রাকের চাপায় নিহত ডিএসবি পুলিশের এসআই আব্দুল মতিন ও কনস্টেবল মজিবুল ইসলাম পুলিশ লাইন চত্তরে মঙ্গলবার দুপুরে (১৯ জানুয়ারি) জানাজা শেষে বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
এর আগে স্মৃতিচারণ আলোচনা শেষে বাংলাদেশ পুলিশের পতাকায় আচ্ছাদিত লাশের কফিনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন ও পুলিশের একটি চৌকসদল গার্ড অব অনার প্রদান করে। জেলা প্রশাসক আবু জাফর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, পুলিশ কর্মকর্তারা সহ সদস্যবৃন্দ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন, পাবলিক প্রসিকিউটর আকমল হোসেন, লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
নিহত মতিন কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া এলাকার মৃত. জয়েন উদ্দিন সরকারের ছেলে এবং মজিবুল রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার শেখ মাহামুদুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৯ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া মতিন ১৯৮৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। অষ্টম শ্রেণি পাস মতিন পরবর্তীতে দুই দফায় পদন্নোতি পেয়ে এসআই হন। ৩২ বছর ১ মাস ১২ দিন চাকুরি জীবনে বাহিনীতে বিশেষ অবদান রাখেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৯ সালে ২১ অক্টোবর লালমনিরহাটে যোগদান করে হাতীবান্ধায় ডিএসবিতে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া ১৯৭৩ সালে ৬ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া মজিবুল ১৯৯৩ সালের ২২ জুন কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০১৪ সালে ৭ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ থেকে লালমনিরহাটে যোগদান করে পরবর্তী ২০১৭ সালে ২ জানুয়ারি ডিএসবিতে হাতীবান্ধায় কর্মরত ছিলেন। তার কর্মকাল ছিল ২৭ বছর ৬ মাস ২৬ দিন। ব্যক্তিগত জীবনে মজিবুলের স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
জানাজা পূর্বে স্মৃতিচারণ করার সময় পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বক্তব্যে বলেন, ‘হাতীবান্ধায় ডিএসবিতে কর্মরত মতিন ও মজিবুল ছিল তৎপর। তারা সোমবার আসন্ন ইউনিয়ন নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ শেষে থানায় ফিরছিলেন। এসময় ঘাতক ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের খানেরবাজার নামকস্থানে নিহত হন। এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক হয়ে চলাচলের পরামর্শ দেন পুলিশ সদস্যদের।জেলা প্রশাসক আবু জাফর নিহতের পরিবার এবং পুলিশ সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়কটির এমন কিছু কিছু বাঁক রয়েছে। যেগুলো মরণফাঁদের মতো। সংখ্যায় অনেক বেশি গাড়ী চলাচলের কারণে বর্তমানে মহাসড়কটির অবস্থা বেহাল। বিষয়টি স্থানীয় সড়ক বিভাগের মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ মহাসড়কে যেন আর কাউকে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়, সবাইকে সাবধানে চলাচল করতে হবে।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

যশোরে বিশ্ব মানবিক মর্যাদা দিবস ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধন

লালমনিরহাটে এসআই মতিন ও কনস্টেবল মজিবুলের জানাজা সম্পন্ন

প্রকাশের সময় : ০৫:৫২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১
মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধি ## ১৯ জানুয়ারি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে পাথরবোঝাই ট্রাকের চাপায় নিহত ডিএসবি পুলিশের এসআই আব্দুল মতিন ও কনস্টেবল মজিবুল ইসলাম পুলিশ লাইন চত্তরে মঙ্গলবার দুপুরে (১৯ জানুয়ারি) জানাজা শেষে বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
এর আগে স্মৃতিচারণ আলোচনা শেষে বাংলাদেশ পুলিশের পতাকায় আচ্ছাদিত লাশের কফিনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন ও পুলিশের একটি চৌকসদল গার্ড অব অনার প্রদান করে। জেলা প্রশাসক আবু জাফর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, পুলিশ কর্মকর্তারা সহ সদস্যবৃন্দ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন, পাবলিক প্রসিকিউটর আকমল হোসেন, লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
নিহত মতিন কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া এলাকার মৃত. জয়েন উদ্দিন সরকারের ছেলে এবং মজিবুল রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার শেখ মাহামুদুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৯ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া মতিন ১৯৮৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। অষ্টম শ্রেণি পাস মতিন পরবর্তীতে দুই দফায় পদন্নোতি পেয়ে এসআই হন। ৩২ বছর ১ মাস ১২ দিন চাকুরি জীবনে বাহিনীতে বিশেষ অবদান রাখেন। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৯ সালে ২১ অক্টোবর লালমনিরহাটে যোগদান করে হাতীবান্ধায় ডিএসবিতে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া ১৯৭৩ সালে ৬ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া মজিবুল ১৯৯৩ সালের ২২ জুন কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০১৪ সালে ৭ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ থেকে লালমনিরহাটে যোগদান করে পরবর্তী ২০১৭ সালে ২ জানুয়ারি ডিএসবিতে হাতীবান্ধায় কর্মরত ছিলেন। তার কর্মকাল ছিল ২৭ বছর ৬ মাস ২৬ দিন। ব্যক্তিগত জীবনে মজিবুলের স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
জানাজা পূর্বে স্মৃতিচারণ করার সময় পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বক্তব্যে বলেন, ‘হাতীবান্ধায় ডিএসবিতে কর্মরত মতিন ও মজিবুল ছিল তৎপর। তারা সোমবার আসন্ন ইউনিয়ন নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ শেষে থানায় ফিরছিলেন। এসময় ঘাতক ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের খানেরবাজার নামকস্থানে নিহত হন। এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক হয়ে চলাচলের পরামর্শ দেন পুলিশ সদস্যদের।জেলা প্রশাসক আবু জাফর নিহতের পরিবার এবং পুলিশ সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়কটির এমন কিছু কিছু বাঁক রয়েছে। যেগুলো মরণফাঁদের মতো। সংখ্যায় অনেক বেশি গাড়ী চলাচলের কারণে বর্তমানে মহাসড়কটির অবস্থা বেহাল। বিষয়টি স্থানীয় সড়ক বিভাগের মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ মহাসড়কে যেন আর কাউকে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়, সবাইকে সাবধানে চলাচল করতে হবে।’