বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের মঙ্গলার্থে আমি পদত্যাগে প্রস্তুত

সজীব আকবর,ঢাকা ব্যুরোঃ আজ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করলে যদি দেশের কোনো উপকার হয়, তাহলে তিনি যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার এ মন্তব্য করেন।

বর্তমান কমিশনের চার বছর পূর্তি এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাহবুব তালুকদার। দেশের ৪২ নাগরিক নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণ চেয়েছে। এ–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমাদের কাছে পদত্যাগ দাবি করেছেন কি না, জানি না। দাবি যদি করে থাকেন, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করলে যদি লাভ হয়, দেশের যদি কোনো উপকার হয়, তাহলে আমি যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।’

এ সময় মাহবুব তালুকদার বলেন, তাঁরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। এখন যদি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়, সে বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর পদত্যাগ করে ফেলাটা কোনো বিষয় হয় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, এটা ইসির ওপর নির্ভর করে না। যাঁরা নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করেন বা সংশ্লিষ্ট থাকেন, তাঁরা এই সুপারিশ করতে পারেন।

এর কিছু আগে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনান মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আজ চার বছর পূর্ণ হলো। পেছনের দিকে তাকিয়ে মনে হয়, আমাদের আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রায় সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে আমরা তৃপ্তি বোধ করি। কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে আমাদের সব দাবি জনগণের উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কেবল রাজনৈজিক দল নয়, নীরব জনগোষ্ঠীর অশ্রুত ভাষা শ্রবণের প্রচেষ্টা থাকাও প্রয়োজন।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায়। নির্বাচন অর্থ অনেকের মধ্য থেকে ভোটের মাধ্যমে বাছাই। কিন্তু সে অবস্থা আজকাল পরিলক্ষিত হয় না। প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কি এখন পূর্বে নির্ধারিত? নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য না হলে, কোনো বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র আপন মহিমায় বিকশিত হতে পারে না।’

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সহিংসতার শঙ্কা প্রকাশ করেন মাহবুব তালুকদার। তিনি জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হানাহানি বর্তমানে নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। কোনো অনভিপ্রেত ঘটনাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মিলে একটি অবিচ্ছিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই প্রাণহানির অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার পথ অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের উদ্যোগ কেন কার্যকর হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে কৃষকের অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিকরন এবং নারী ও শিশুর সহিংসতারোধে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

দেশের মঙ্গলার্থে আমি পদত্যাগে প্রস্তুত

প্রকাশের সময় : ০৭:২৬:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সজীব আকবর,ঢাকা ব্যুরোঃ আজ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করলে যদি দেশের কোনো উপকার হয়, তাহলে তিনি যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার এ মন্তব্য করেন।

বর্তমান কমিশনের চার বছর পূর্তি এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাহবুব তালুকদার। দেশের ৪২ নাগরিক নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণ চেয়েছে। এ–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমাদের কাছে পদত্যাগ দাবি করেছেন কি না, জানি না। দাবি যদি করে থাকেন, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করলে যদি লাভ হয়, দেশের যদি কোনো উপকার হয়, তাহলে আমি যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।’

এ সময় মাহবুব তালুকদার বলেন, তাঁরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। এখন যদি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়, সে বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর পদত্যাগ করে ফেলাটা কোনো বিষয় হয় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, এটা ইসির ওপর নির্ভর করে না। যাঁরা নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করেন বা সংশ্লিষ্ট থাকেন, তাঁরা এই সুপারিশ করতে পারেন।

এর কিছু আগে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনান মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আজ চার বছর পূর্ণ হলো। পেছনের দিকে তাকিয়ে মনে হয়, আমাদের আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রায় সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে আমরা তৃপ্তি বোধ করি। কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে আমাদের সব দাবি জনগণের উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কেবল রাজনৈজিক দল নয়, নীরব জনগোষ্ঠীর অশ্রুত ভাষা শ্রবণের প্রচেষ্টা থাকাও প্রয়োজন।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, নির্বাচন নির্বাসনে যেতে চায়। নির্বাচন অর্থ অনেকের মধ্য থেকে ভোটের মাধ্যমে বাছাই। কিন্তু সে অবস্থা আজকাল পরিলক্ষিত হয় না। প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কি এখন পূর্বে নির্ধারিত? নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য না হলে, কোনো বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র আপন মহিমায় বিকশিত হতে পারে না।’

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সহিংসতার শঙ্কা প্রকাশ করেন মাহবুব তালুকদার। তিনি জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হানাহানি বর্তমানে নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। কোনো অনভিপ্রেত ঘটনাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মিলে একটি অবিচ্ছিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই প্রাণহানির অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার পথ অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের উদ্যোগ কেন কার্যকর হচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।’