বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লকডাউনে পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় গৃহবধু সাবানা

সেলিম রেজা ##
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। দ্বিতীয় দফার এ লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে মোটরচালিত রিকশা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন শাবানা বেগম (২৭)।
দেড় বছর আগে সন্তানসহ শাবানাকে ফেলে রেখে গেছেন তার স্বামী। খোঁজ-খবর নেন না স্ত্রী ও সন্তানের।
অন্যদিকে শাবানার মায়ের খোঁজ-খবর রাখেন না তার বড় ভাই। তাই মা ও সন্তানের খাবার যোগাতে রিকশাচালকের পেশা বেছে নিয়েছেন শাবানা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় তাকে রিকশা চালাতে দেখা যায়। তিনি জানান, লকডাউনের প্রথম দুই দিন রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামেননি।
দুই দিন অভুক্ত থেকে রোজা রেখেছেন। ‘পেট তো আর লকডাউন বোঝে না’—ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে লকডাউনেও রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বলে জানান শাবানা।
নারী হিসেবে রিকশাচালকের পেশাগত প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাড়াপ্রতিবেশী তো অনেক কথাই বলে। মানুষের কথা শুনলে তো আর আমার জীবন চলব না। পেটে ভাত আসব না। আমার কাজ আমারে করতে হবে। অন্য কেউ তো আর করে দেবে না। তবে রাস্তায় আমাকে কেউ কিছু কয় না। ’
এক বছর যাবত মোটরচালিত রিকশা চালান শাবানা। আয়-রোজগার কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতিদিন রোজগার করি। সপ্তাহে ৩ হাজার টাকার কিস্তি দিতে হয়। কিস্তির টাকা দেওয়ার পর চলতে খুব কষ্ট হয়। ’
পরিবারে কে কে আছে জানতে চাইলে শাবানা বলেন, ‘মা আর ৪ বছরের একটা ছেলে। স্বামী দেড় বছর আগে চইলা যায়। কোনো খোঁজ-খবরও নেয় না। মনে হয় আবার বিয়ে করছে! আমার বড় ভাইও মায়ের খবর লয় না। ছেলে আর মায়ের খাবার যোগাইতে রিকশা নিয়া রাস্তায় নামছি। ’

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা

লকডাউনে পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় গৃহবধু সাবানা

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১
সেলিম রেজা ##
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। দ্বিতীয় দফার এ লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে মোটরচালিত রিকশা নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন শাবানা বেগম (২৭)।
দেড় বছর আগে সন্তানসহ শাবানাকে ফেলে রেখে গেছেন তার স্বামী। খোঁজ-খবর নেন না স্ত্রী ও সন্তানের।
অন্যদিকে শাবানার মায়ের খোঁজ-খবর রাখেন না তার বড় ভাই। তাই মা ও সন্তানের খাবার যোগাতে রিকশাচালকের পেশা বেছে নিয়েছেন শাবানা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় তাকে রিকশা চালাতে দেখা যায়। তিনি জানান, লকডাউনের প্রথম দুই দিন রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামেননি।
দুই দিন অভুক্ত থেকে রোজা রেখেছেন। ‘পেট তো আর লকডাউন বোঝে না’—ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে লকডাউনেও রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বলে জানান শাবানা।
নারী হিসেবে রিকশাচালকের পেশাগত প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাড়াপ্রতিবেশী তো অনেক কথাই বলে। মানুষের কথা শুনলে তো আর আমার জীবন চলব না। পেটে ভাত আসব না। আমার কাজ আমারে করতে হবে। অন্য কেউ তো আর করে দেবে না। তবে রাস্তায় আমাকে কেউ কিছু কয় না। ’
এক বছর যাবত মোটরচালিত রিকশা চালান শাবানা। আয়-রোজগার কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৪০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতিদিন রোজগার করি। সপ্তাহে ৩ হাজার টাকার কিস্তি দিতে হয়। কিস্তির টাকা দেওয়ার পর চলতে খুব কষ্ট হয়। ’
পরিবারে কে কে আছে জানতে চাইলে শাবানা বলেন, ‘মা আর ৪ বছরের একটা ছেলে। স্বামী দেড় বছর আগে চইলা যায়। কোনো খোঁজ-খবরও নেয় না। মনে হয় আবার বিয়ে করছে! আমার বড় ভাইও মায়ের খবর লয় না। ছেলে আর মায়ের খাবার যোগাইতে রিকশা নিয়া রাস্তায় নামছি। ’