রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনাপোলে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বন্ধ,আমদানি রফতানি সচল

শাহজালার সম্রাট ## করোনা সংক্রমণ রোধে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ কারনে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে শতশত বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী আটকা পড়েছে।বেনাপোল চেকপোস্টে ও বেশকিছু ভারতীয় শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েছে। এদের মধ্যে অনেকের ভিসা শেষের পথে। আবার অনেকের কাছে টাকা পয়সা ও নেই।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। পরবর্তী আর কোন নির্দেশনা না আসলে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সময় এ আইন বলবৎ থাকবে।
জানা গেছে, দিন যতই বাড়ছে ভারত ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ ও আক্রান্ত বাড়ছে। এমনকি ভারত ভ্রমণে অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন ও করছে। দেশে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি তারাও ভারত ভ্রমণে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির বিষয়ে সম্প্রতি সতর্ক করেছে।
বিষয়টি মাথায় রেখে গত মাসের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ সরকার সতর্কতা হিসেবে ১৮টি বিধিনিষেধ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর মধ্যে একটি ধারা ছিল যারা ভারত থেকে ফিরবেন অবশ্যই ব্যক্তিগত খরচে ১৪ দিন বেনাপোলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পরে সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত হলে ফিরবেন বাড়িতে। কিন্তু এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না।
অবশেষে বাধ্য হয়ে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি বৈঠকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্তপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত বন্ধে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আবার অনেকে মনে করছেন বন্ধ ঘোষণায় দুই দিনের সময় বেঁধে দিলে ভালো হতো। হঠাৎ করে ইমিগ্রেশন বন্ধ কার্যক্রম ঘোষণার এ তথ্য জানতে না পারা অনেকে যাত্রী সকাল থেকে ভিড় করছেন বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে। এসব যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে চিকিৎসা সেবী, বাণিজ্য ও শিক্ষা গ্রহণে যাতায়াতকারী। আটকেপড়া এসব যাত্রীদের অনেকের একদিকে যেমন ভিসা শেষের পথে তেমনি অর্থনৈতিক অবস্থাও সংকটের মধ্যে। এতে তারা বলতে গেলে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনা পত্র ইতিমধ্যে তিনি হাতে পেয়েছেন। সকাল থেকে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা রয়েছে। তবে চিঠির তথ্য অনুযায়ী হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র যদি কারো থাকে তার যাতায়াতে বাধা নেই।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সকাল থেকে কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেনি। ভারত থেকেও কোনো যাত্রী বাংলাদেশে আসেনি। তবে বাণিজ্যেও ক্ষেত্রে কোনো বিধি নিষেধ না থাকায় এ পথে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস সচল রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, গতকাল সর্বশেষ ভারত থেকে ৫৭০ জন বাংলাদেশি ফিরেছেন। এসব যাত্রীর মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ ছিল। এরা ভারতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়। আক্রান্তদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আর করোনা নেগেটিভ সনদবিহীন ১১ জনকে বেনাপোল রজনীগন্ধা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী

বেনাপোলে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বন্ধ,আমদানি রফতানি সচল

প্রকাশের সময় : ০৪:৩২:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
শাহজালার সম্রাট ## করোনা সংক্রমণ রোধে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ কারনে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে শতশত বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী আটকা পড়েছে।বেনাপোল চেকপোস্টে ও বেশকিছু ভারতীয় শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েছে। এদের মধ্যে অনেকের ভিসা শেষের পথে। আবার অনেকের কাছে টাকা পয়সা ও নেই।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। পরবর্তী আর কোন নির্দেশনা না আসলে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সময় এ আইন বলবৎ থাকবে।
জানা গেছে, দিন যতই বাড়ছে ভারত ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ ও আক্রান্ত বাড়ছে। এমনকি ভারত ভ্রমণে অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন ও করছে। দেশে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি তারাও ভারত ভ্রমণে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির বিষয়ে সম্প্রতি সতর্ক করেছে।
বিষয়টি মাথায় রেখে গত মাসের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ সরকার সতর্কতা হিসেবে ১৮টি বিধিনিষেধ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠায়। এর মধ্যে একটি ধারা ছিল যারা ভারত থেকে ফিরবেন অবশ্যই ব্যক্তিগত খরচে ১৪ দিন বেনাপোলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পরে সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত হলে ফিরবেন বাড়িতে। কিন্তু এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না।
অবশেষে বাধ্য হয়ে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি বৈঠকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্তপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত বন্ধে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আবার অনেকে মনে করছেন বন্ধ ঘোষণায় দুই দিনের সময় বেঁধে দিলে ভালো হতো। হঠাৎ করে ইমিগ্রেশন বন্ধ কার্যক্রম ঘোষণার এ তথ্য জানতে না পারা অনেকে যাত্রী সকাল থেকে ভিড় করছেন বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে। এসব যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে চিকিৎসা সেবী, বাণিজ্য ও শিক্ষা গ্রহণে যাতায়াতকারী। আটকেপড়া এসব যাত্রীদের অনেকের একদিকে যেমন ভিসা শেষের পথে তেমনি অর্থনৈতিক অবস্থাও সংকটের মধ্যে। এতে তারা বলতে গেলে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনা পত্র ইতিমধ্যে তিনি হাতে পেয়েছেন। সকাল থেকে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা রয়েছে। তবে চিঠির তথ্য অনুযায়ী হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র যদি কারো থাকে তার যাতায়াতে বাধা নেই।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সকাল থেকে কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেনি। ভারত থেকেও কোনো যাত্রী বাংলাদেশে আসেনি। তবে বাণিজ্যেও ক্ষেত্রে কোনো বিধি নিষেধ না থাকায় এ পথে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস সচল রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, গতকাল সর্বশেষ ভারত থেকে ৫৭০ জন বাংলাদেশি ফিরেছেন। এসব যাত্রীর মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ ছিল। এরা ভারতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়। আক্রান্তদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আর করোনা নেগেটিভ সনদবিহীন ১১ জনকে বেনাপোল রজনীগন্ধা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।