
আতাউর রহমান, সাতক্ষীরা ব্যুরোঃ মাত্র ক’দিন আগে গাছ ভরা মুকুলে গুটি গুটি আম দেখে স্বপ্ন বাঁধেন আম চাষিরা। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে গাছের তলায় মাটিতে ঝরে পড়ছে সে আমের গুটি। গাছের গোড়ায় পানি ঢেলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
কলারোয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চোখে পড়ে ছোট-বড় নানান জাতের আমের বাগান। শুধু তাই নয় রাস্তার আশেপাশে, পুকুর পাড়সহ বাড়ির আঙিনায় শোভা পাচ্ছে সুস্বাদু জাতের আমের গাছ। গতবছর ঝড় আমফানের পর বেশ কয়েক মাস হয়ে গেল এ অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা নেই। বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাপদাহ বেড়েই চলেছে। অথচ প্রকৃতিতে এখন ভরা বৈশাখ মাস। এ মাসে মেঘের ভেলায় কমবেশি ঝড়-বৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে গাছের আম।
শুরুর দিকে এ অঞ্চলে আম গাছের ডালে মুকুলে ছয়ে যায়। এমনও দেখা গেছে মুকুলের ভারে অসংখ্য আমের ডাল নুয়ে পড়ে মাটিতে। অতঃপর গুটি গুটি আমে ছেয়ে যায় পুরো গাছ। তা দেখে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এ এলাকার আম চাষিরা।
এভাবে আম ঝরে পড়তে দেখে আম চাষিদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
আম চাষি মজিবুর রহমান জানান, তার ১৫ বিঘার মুকুল ভর্তি আমের বাগানে গুটি গুটি আমে ছেয়ে ছিলো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় ঝরে পড়ছে তার বাগানের আম। গুটি গুটি আমগুলো রক্ষার জন্য এই মুহূর্তে বৃষ্টি ভীষণ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়ার উপজেলায় ছোট বড়ো প্রায় ২শতাধিক আমের বাগান রয়েছে। শুরুতে ভালো আবহাওয়া থাকায় আমের মুকুলে পোকা হয়নি, পচনও ধরেনি। তাতে গাছ ভর্তি গুটি গুটি আম ধরেছিলো। সম্প্রতি রুক্ষ আবহাওয়ার সঙ্গে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় গাছ থেকে আম ঝরে পড়ছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্য ফসলের মত আম উৎপাদনের জন্য কলারোয়া একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল৷ আম চাষে সফলতা পাওয়ায় উপজেলা ও দেশের গন্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলের আম ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৮ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০ মেট্রিক টন বিদেশের বাজারে যায়। বায়ার সংকট আম্ফান ও করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিষ মুক্ত আম বিদেশে পাঠানো সম্ভব হয়নি৷ এ বছর আদর্শ ভাবে পোকা দমনের জন্য ফেরামন ট্রাফ ব্যবহার করে উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছে। ৯ হাজার ১‘শ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রায় হেক্টর প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মন আমের ফলন ধারণা করা হচ্ছে। সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে এবছর ৪৫-৫০ মেট্রিকটন আম বিদেশে রপ্তানি করতে পারবো৷
নিজস্ব সংবাদদাতা 



















