বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলের হামলার তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ

বার্তাকন্ঠ ডেস্ক ##  জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময় যে সহিংসতা হয়েছে সেটা তদন্ত করতে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। কয়েকটি ইসলামিক দেশ এই প্রস্তাব পেশ করার পর এর পক্ষে ২৪টি আর বিপক্ষে ৯টি ভোট পড়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়েছে যে এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ হুমকির মুখে পড়বে। ১১ দিনের সংঘর্ষে গাজায় অন্তত ২৪২ জন এবং ইসরায়েলে ১৩ জন নিহত হয়েছে।

মিশরের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার এক সমঝোতার পর এই যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

মুসলিম ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদে সংঘর্ষ শুরু হলে হামাস সেখান থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানায়। পরে তারা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এর জবাবে গাজায় বিমান থেকে হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েল।

ওআইসি এবং ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে যে প্রস্তাবটি পেশ করেছে তাতে ইসরায়েল, গাজা এবং পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করেতে একটি স্থায়ী তদন্ত কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সেখানে বারবার যে উত্তেজনা, অস্থিতিশীলতা ও যুদ্ধাবস্থা তৈরি হচ্ছে তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট বলেন গাজায় প্রচুর সংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। গাজায় ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে সেটা যুদ্ধাপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামাস যেভাবে রকেট ছুঁড়েছে তারও সমালোচনা করেন তিনি।

কয়েকটি পশ্চিমা দেশসহ নয়টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল ১৪টি দেশ। চীন ও রাশিয়াসহ ২৪টি দেশ ভোট দিয়েছে প্রস্তাবের পক্ষে। এই বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।

’তবে জেনেভায় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন ভোটের পর একটি বিবৃতি দিয়ে এধরনের উদ্যোগে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, যখন আমরা এবং অন্যান্যরা মিলে যুদ্ধবিরতিকে ধরে রাখতে এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনে কাজ করছি তখন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কিছু সদস্য এমন এক বিভ্রান্তি সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে যা বর্তমান কূটনৈতিক চেষ্টায় কোনো কিছু যোগ করবে না।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবের নিন্দা করেছেন। তিনি একে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইসরায়েল-বিরোধী অবস্থানের আরো একটি উদাহরণ হিসেবে।

তবে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে এই উদ্যোগে জবাবদিহিতা, আইনের প্রয়োগ এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে হামাস।

জনপ্রিয়

নরসিংদীতে ১ বছর ধরে দুই বোন ঘরবন্দী

গাজায় ইসরায়েলের হামলার তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৩:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১

বার্তাকন্ঠ ডেস্ক ##  জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময় যে সহিংসতা হয়েছে সেটা তদন্ত করতে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। কয়েকটি ইসলামিক দেশ এই প্রস্তাব পেশ করার পর এর পক্ষে ২৪টি আর বিপক্ষে ৯টি ভোট পড়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়েছে যে এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ হুমকির মুখে পড়বে। ১১ দিনের সংঘর্ষে গাজায় অন্তত ২৪২ জন এবং ইসরায়েলে ১৩ জন নিহত হয়েছে।

মিশরের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার এক সমঝোতার পর এই যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

মুসলিম ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদে সংঘর্ষ শুরু হলে হামাস সেখান থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানায়। পরে তারা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এর জবাবে গাজায় বিমান থেকে হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েল।

ওআইসি এবং ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে যে প্রস্তাবটি পেশ করেছে তাতে ইসরায়েল, গাজা এবং পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করেতে একটি স্থায়ী তদন্ত কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সেখানে বারবার যে উত্তেজনা, অস্থিতিশীলতা ও যুদ্ধাবস্থা তৈরি হচ্ছে তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট বলেন গাজায় প্রচুর সংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। গাজায় ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে সেটা যুদ্ধাপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামাস যেভাবে রকেট ছুঁড়েছে তারও সমালোচনা করেন তিনি।

কয়েকটি পশ্চিমা দেশসহ নয়টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল ১৪টি দেশ। চীন ও রাশিয়াসহ ২৪টি দেশ ভোট দিয়েছে প্রস্তাবের পক্ষে। এই বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।

’তবে জেনেভায় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন ভোটের পর একটি বিবৃতি দিয়ে এধরনের উদ্যোগে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, যখন আমরা এবং অন্যান্যরা মিলে যুদ্ধবিরতিকে ধরে রাখতে এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনে কাজ করছি তখন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কিছু সদস্য এমন এক বিভ্রান্তি সৃষ্টির পথ বেছে নিয়েছে যা বর্তমান কূটনৈতিক চেষ্টায় কোনো কিছু যোগ করবে না।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবের নিন্দা করেছেন। তিনি একে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইসরায়েল-বিরোধী অবস্থানের আরো একটি উদাহরণ হিসেবে।

তবে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে এই উদ্যোগে জবাবদিহিতা, আইনের প্রয়োগ এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় অবস্থান প্রতিফলিত হয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে হামাস।