সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা, যা বলছে পুলিশ –

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১১৩

ছবি : সংগৃহীত

চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ও ব্যবসায়ী আবু মহসিন খানের ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার।

বুধবার রাত ১০টার কিছু আগে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজের বাসায় ফেসবুক লাইভে পিস্তল মাথায় তাক করে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ধানমন্ডির সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত শেষে আবু মহসিন খানের লাশ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আবু মহসিন খান যে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আত্মত্যা করেছেন, মাত্র দুইদিন আগেই তিনি সেটির লাইসেন্স নবায়ন করেছেন।

এই ঘটনাটি ঠেকানো যেতো কি না, তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ মনে করছে, দীর্ঘ দিনের একাকী জীবন, ক্যান্সারের সাথে লড়াই, ব্যবসায় লোকসান, এই সব কিছু থেকে চরম অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন ৫৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান।

সেটিই তার আত্মহত্যার পথ বেছে নেবার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

ধানমন্ডি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘ওনার অনেক ডিপ্রেশন ছিলো। বিগত পাঁচ বছর যাবত তার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকেন। উনি একাকী জীবন যাপন করতেন। তিনি ব্যবসা করতেন কিন্তু অসুস্থতার কারণে ব্যবসাটা ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। অনেক ব্যবসায়িক লস করেছিলেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা বুঝতে পারলাম এই বয়সী একটা লোক, দীর্ঘদিন এরকম একা থাকা থাকা, এই সবকিছু নিয়েই ওনার ডিপ্রেশনটা ছিল। প্রাথমিকভাবে আমরা তার প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সাথে কথা বলে এমনটাই মনে করছি।

ফেসবুক লাইভে গুছিয়ে শান্ত গলায় ১৬ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেছেন আবু মহসিন খান। কথা বলার সময় সুস্থির ছিলেন।

তার চোখের চশমার কাঁচ ঝাপসা দেখাচ্ছিল। নিজের পরিচয় দিয়ে শুরু কথা করেছেন।

পরিবারের কয়েকজন সদস্যের প্রতি তিনি সংক্ষুব্ধ সেটি তার কথায় প্রকাশিত হয়েছে। কথার মাঝে তিনি অনেকবার ছোট-বড় বিরতি নিয়েছেন।

তার গলার স্বর বুজে আসছিলো মাঝে মাঝে। দুইবার কালেমা পড়েছেন, বিড়বিড় করে সুরা পাঠ করেছেন।

যে পিস্তলটি ব্যাবহার করে তিনি নিজের প্রাণ শেষ করে দেবেন সেটি যে বৈধ তাও তিনি নিশ্চিত করেছেন ফেসবুক লাইভে সেটির লাইসেন্স প্রদর্শন করে।

পুলিশ জানিয়েছে তিনি আগেই দরজায় কাগজ টাঙিয়ে রেখেছিলেন যাতে টাইপ করে লেখা ছিল দরজা খোলা আছে। ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার কথা লিখেছেন।

সাদা কাপড় রেখে গেছেন নিজেকে দাফন করার জন্য। কোন কবরস্থানে দাফন হবে সেটি অনুরোধ করে গেছেন।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, তার লাশের পাশে একটি নোট পাওয়া গেছে। সেখানেও তিনি একই ধরনের কথা লিখেছেন।

আবু মহসিন খানের এভাবে আত্মহত্যা করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেককেই নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে।

সূত্র : বিবিসি

জনপ্রিয়

যশোরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবক জখম

রিয়াজের শ্বশুরের আত্মহত্যা, যা বলছে পুলিশ –

প্রকাশের সময় : ০৩:১৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ও ব্যবসায়ী আবু মহসিন খানের ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যার ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার।

বুধবার রাত ১০টার কিছু আগে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজের বাসায় ফেসবুক লাইভে পিস্তল মাথায় তাক করে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ধানমন্ডির সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত শেষে আবু মহসিন খানের লাশ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আবু মহসিন খান যে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আত্মত্যা করেছেন, মাত্র দুইদিন আগেই তিনি সেটির লাইসেন্স নবায়ন করেছেন।

এই ঘটনাটি ঠেকানো যেতো কি না, তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ মনে করছে, দীর্ঘ দিনের একাকী জীবন, ক্যান্সারের সাথে লড়াই, ব্যবসায় লোকসান, এই সব কিছু থেকে চরম অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন ৫৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান।

সেটিই তার আত্মহত্যার পথ বেছে নেবার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

ধানমন্ডি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘ওনার অনেক ডিপ্রেশন ছিলো। বিগত পাঁচ বছর যাবত তার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকেন। উনি একাকী জীবন যাপন করতেন। তিনি ব্যবসা করতেন কিন্তু অসুস্থতার কারণে ব্যবসাটা ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। অনেক ব্যবসায়িক লস করেছিলেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেটা বুঝতে পারলাম এই বয়সী একটা লোক, দীর্ঘদিন এরকম একা থাকা থাকা, এই সবকিছু নিয়েই ওনার ডিপ্রেশনটা ছিল। প্রাথমিকভাবে আমরা তার প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সাথে কথা বলে এমনটাই মনে করছি।

ফেসবুক লাইভে গুছিয়ে শান্ত গলায় ১৬ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেছেন আবু মহসিন খান। কথা বলার সময় সুস্থির ছিলেন।

তার চোখের চশমার কাঁচ ঝাপসা দেখাচ্ছিল। নিজের পরিচয় দিয়ে শুরু কথা করেছেন।

পরিবারের কয়েকজন সদস্যের প্রতি তিনি সংক্ষুব্ধ সেটি তার কথায় প্রকাশিত হয়েছে। কথার মাঝে তিনি অনেকবার ছোট-বড় বিরতি নিয়েছেন।

তার গলার স্বর বুজে আসছিলো মাঝে মাঝে। দুইবার কালেমা পড়েছেন, বিড়বিড় করে সুরা পাঠ করেছেন।

যে পিস্তলটি ব্যাবহার করে তিনি নিজের প্রাণ শেষ করে দেবেন সেটি যে বৈধ তাও তিনি নিশ্চিত করেছেন ফেসবুক লাইভে সেটির লাইসেন্স প্রদর্শন করে।

পুলিশ জানিয়েছে তিনি আগেই দরজায় কাগজ টাঙিয়ে রেখেছিলেন যাতে টাইপ করে লেখা ছিল দরজা খোলা আছে। ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকার কথা লিখেছেন।

সাদা কাপড় রেখে গেছেন নিজেকে দাফন করার জন্য। কোন কবরস্থানে দাফন হবে সেটি অনুরোধ করে গেছেন।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, তার লাশের পাশে একটি নোট পাওয়া গেছে। সেখানেও তিনি একই ধরনের কথা লিখেছেন।

আবু মহসিন খানের এভাবে আত্মহত্যা করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেককেই নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে।

সূত্র : বিবিসি