সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খায়রুজ্জামানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে: প্রতিমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০২:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১২৮
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, তারি বিরুদ্ধে করা জেলহত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত হবে কিনা সেটা স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।
 
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, খায়রুজ্জামানকে ডিপোটেশন সেন্টারে কারাঅন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমি যতদূর বুঝি, আবারও তাকে সশরীরে জিজ্ঞাসাবাদ করার এবং মামলাটিকে খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। সেটা আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। যতদ্রুত সম্ভব আমরা তাকে দেখে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠিতে অভিবাসন সংক্রান্ত একটি আইন ভাঙার কথা জানিয়েছে তবে সেটা দূতাবাস জানে, আমার এ মুহূর্তে জানা নেই। হয়তো ওভার স্টে, যে প্রক্রিয়ায় তিনি ছিলেন হয়তো সেটা এক্সপায়ার করে গেছে। কোনো আইন তিনি ভেঙেছেন সেটার আওতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, শরণার্থী কার্ড তার আছে কি না আমি জানি না। মালয়েশিয়ান সরকার বলেছে, নির্দিষ্ট করে, অভিবাসন সংক্রান্ত আইন ভাঙায় তাকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অব্যাহতভাবে খুঁজি। সব সময় বলা হয় না, বলার প্রয়োজনও নেই। যদি না সেটা সফল হয়। আমরা জানতাম তিনি মালয়েশিয়ায় আছেন। মালয়েশিয়া থেকে বের হতে পারেননি বা এ রকম কিছু। এ ধরনের অপরাধী বা কথিত শব্দটি যদি ব্যবহার করি, পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ যে রকম আশ্রয় দেয়। খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে অনেক জায়গায় দেখেছেন। এ রকম সুযোগ মালয়েশিয়ায় নেই। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নেবে মামলাটির কোন পার্যায়ে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অথবা মামলাটি কীভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে।

যে কোনো প্রবাসী কোনো অপরাধ করেছেন, তাকে আমরা ফিরিয়ে আনি যে প্রক্রিয়ায় সেই প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা হবে। এই মামলাটির সম্পর্ক রাখার বা দেখানোর প্রয়োজন নেই। তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনছি..বলেন তিনি।
 
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, একটি মামলার আসামি, যদিও একটা পর্যায়ে সাজাপ্রাপ্তির সম্ভাবনা ছিল। পরে কোর্ট প্রসিডিংস, মাঝে বিএনপি সরকার এসেছে যারা এই কর্মকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যর্থতাগুলো, এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ রকম অনেক মানুষকে অব্যাহতভাবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের চালিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা যদি নিশ্চিত হই, তার কাছে ইউএন রিফিউজি কার্ড আছে, আমরা দেখবো ইউএন-এর কর্মকাণ্ডগুলোতে সদস্য রাষ্ট্রের আইনও প্রতিফলিত হয়। কারণ কোনো আইনই ইউএন করে না যেখানে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের স্বার্থহানী হয়। বা লিগ্যাল প্রসেস বাধাগ্রস্ত হয়।
 
এদিকে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে দেশটির অভিবাসন পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন।

বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছে, তিনি বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে আটকের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন বলেন, আইন মেনেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারে তার নিজের দেশ থেকে অনুরোধ ছিল।

সাবেক সেনা মেজর এম খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে চার জাতীয় নেতা হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন। নানা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে তাকে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।  

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়। কিন্তু দেশে ফেরায় ঝুঁকি আছে দাবি করেন তিনি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে একটি পরিচয়পত্র নেন। এরপর থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শরণার্থী হিসেবে দেশটিতে বসবাস করছেন।

এদিকে গ্রেফতারের পর খায়রুজ্জামানের আইনজীবী অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন।
 
জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম-৬,৭ আসনে গিয়াস উদ্দিন ও হুমাম কাদের চৌধুরীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ 

খায়রুজ্জামানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে: প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৫:০২:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, তারি বিরুদ্ধে করা জেলহত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত হবে কিনা সেটা স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।
 
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, খায়রুজ্জামানকে ডিপোটেশন সেন্টারে কারাঅন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমি যতদূর বুঝি, আবারও তাকে সশরীরে জিজ্ঞাসাবাদ করার এবং মামলাটিকে খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। সেটা আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। যতদ্রুত সম্ভব আমরা তাকে দেখে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠিতে অভিবাসন সংক্রান্ত একটি আইন ভাঙার কথা জানিয়েছে তবে সেটা দূতাবাস জানে, আমার এ মুহূর্তে জানা নেই। হয়তো ওভার স্টে, যে প্রক্রিয়ায় তিনি ছিলেন হয়তো সেটা এক্সপায়ার করে গেছে। কোনো আইন তিনি ভেঙেছেন সেটার আওতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, শরণার্থী কার্ড তার আছে কি না আমি জানি না। মালয়েশিয়ান সরকার বলেছে, নির্দিষ্ট করে, অভিবাসন সংক্রান্ত আইন ভাঙায় তাকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অব্যাহতভাবে খুঁজি। সব সময় বলা হয় না, বলার প্রয়োজনও নেই। যদি না সেটা সফল হয়। আমরা জানতাম তিনি মালয়েশিয়ায় আছেন। মালয়েশিয়া থেকে বের হতে পারেননি বা এ রকম কিছু। এ ধরনের অপরাধী বা কথিত শব্দটি যদি ব্যবহার করি, পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ যে রকম আশ্রয় দেয়। খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে অনেক জায়গায় দেখেছেন। এ রকম সুযোগ মালয়েশিয়ায় নেই। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নেবে মামলাটির কোন পার্যায়ে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অথবা মামলাটি কীভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে।

যে কোনো প্রবাসী কোনো অপরাধ করেছেন, তাকে আমরা ফিরিয়ে আনি যে প্রক্রিয়ায় সেই প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা হবে। এই মামলাটির সম্পর্ক রাখার বা দেখানোর প্রয়োজন নেই। তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন, আমরা তাকে ফিরিয়ে আনছি..বলেন তিনি।
 
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, একটি মামলার আসামি, যদিও একটা পর্যায়ে সাজাপ্রাপ্তির সম্ভাবনা ছিল। পরে কোর্ট প্রসিডিংস, মাঝে বিএনপি সরকার এসেছে যারা এই কর্মকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যর্থতাগুলো, এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ রকম অনেক মানুষকে অব্যাহতভাবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের চালিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা যদি নিশ্চিত হই, তার কাছে ইউএন রিফিউজি কার্ড আছে, আমরা দেখবো ইউএন-এর কর্মকাণ্ডগুলোতে সদস্য রাষ্ট্রের আইনও প্রতিফলিত হয়। কারণ কোনো আইনই ইউএন করে না যেখানে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের স্বার্থহানী হয়। বা লিগ্যাল প্রসেস বাধাগ্রস্ত হয়।
 
এদিকে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে দেশটির অভিবাসন পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন।

বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছে, তিনি বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে আটকের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন বলেন, আইন মেনেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারে তার নিজের দেশ থেকে অনুরোধ ছিল।

সাবেক সেনা মেজর এম খায়রুজ্জামান ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে চার জাতীয় নেতা হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন। নানা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালে তাকে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।  

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়। কিন্তু দেশে ফেরায় ঝুঁকি আছে দাবি করেন তিনি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে একটি পরিচয়পত্র নেন। এরপর থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শরণার্থী হিসেবে দেশটিতে বসবাস করছেন।

এদিকে গ্রেফতারের পর খায়রুজ্জামানের আইনজীবী অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন।