শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হওয়ার দাবি উত্তর কোরিয়ার

নতুন বছরেই শুরুতেই উপর্যুপরি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমের ‘বিশ্বকে কাঁপিয়ে’ তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হওয়ার মতো একমাত্র দেশ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।  মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে, উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নতুন রেকর্ড গড়ে পিয়ংইয়ং। এ সময় নতুন ধরনের `হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ’ কমপক্ষে সাতটি উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ঘোষিত দেশটি।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছর বেশ কয়েকটি পরীক্ষার ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’ দেখা গেছে, যা যা উত্তর কোরিয়ার ‘প্রতিরোধ সক্ষমতা’কে আরও শক্তিশালী করেছে।

অবশ্য উত্তর কোরিয়ার এসব দর্প ও হুমকি বরাবরের মতোই গায়ে মাখেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কোরিয়ার প্রতি কোনো শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব নেই। এবং তারা সবসময়ই পিয়ংইয়ংকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছে।

উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষার উপর জাতিসংঘের একটি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দেশটির উপর জাতিসংঘের কঠোর অবরোধ রয়েছে। তবে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি নিয়মিত এসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আসছে। কারণ দেশটির নেতা কিম জং উন সামরিকভাবে দেশটিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

উত্তর কোরিয়া দ্রুত একটি কার্যকর পারমাণবিক প্রতিরোধকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক একজন নৌ কমান্ডার প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ বলেন, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই হওয়ার কথা ছিলো।  আমি অবাক হচ্ছি, কারণ আমরা উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিকে ছোট করে দেখেছি। আসলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

গত ৫ ও ১০ই জানুয়ারির পরীক্ষার পর পিয়ংইয়ং দাবি করেছিল যে তারা সফলভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

কারণ এর মানে হলো উত্তর কোরিয়া এমন প্রযুক্তি তৈরি করছে, যা ওই অঞ্চল জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ব্যয়বহুল ও জটিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে হারিয়ে দিতে পারে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হামলা হলে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কার্যকর প্রতিরোধকে রূপান্তর থেকে বহু দূরেই আছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশ দুটি বারবার বলেছে উত্তর কোরিয়া বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের বা হামলার কোনো লক্ষ্য তাদের নেই।

তার পরও ছোট এই দেশটি কেন তার জিডিপির এক চতুর্থাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে চলেছে সেটিই মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ব্যাপারে, বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলেন, যে এমনও হতে পারে যে উত্তর কোরিয়া মনে করে যে নিজেকে রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র এখনো তাদের নেই।

তিনি বলেন, কিম জং উন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমার মনে হয় তিনি চীন বা রাশিয়াসহ কাউকেই বিশ্বাস করেন না। সে কারণেই হয়তো মনে করছেন যে তার সক্ষমতাকে অনেক বাড়াতে হবে।

জনপ্রিয়

জামায়াত দেশে শান্তি চায়নি কখনো: মোমিন মেহেদী

যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হওয়ার দাবি উত্তর কোরিয়ার

প্রকাশের সময় : ০৭:০২:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নতুন বছরেই শুরুতেই উপর্যুপরি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমের ‘বিশ্বকে কাঁপিয়ে’ তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হওয়ার মতো একমাত্র দেশ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।  মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে, উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নতুন রেকর্ড গড়ে পিয়ংইয়ং। এ সময় নতুন ধরনের `হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ’ কমপক্ষে সাতটি উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ঘোষিত দেশটি।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছর বেশ কয়েকটি পরীক্ষার ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’ দেখা গেছে, যা যা উত্তর কোরিয়ার ‘প্রতিরোধ সক্ষমতা’কে আরও শক্তিশালী করেছে।

অবশ্য উত্তর কোরিয়ার এসব দর্প ও হুমকি বরাবরের মতোই গায়ে মাখেনি যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর কোরিয়ার প্রতি কোনো শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব নেই। এবং তারা সবসময়ই পিয়ংইয়ংকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছে।

উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষার উপর জাতিসংঘের একটি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দেশটির উপর জাতিসংঘের কঠোর অবরোধ রয়েছে। তবে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি নিয়মিত এসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আসছে। কারণ দেশটির নেতা কিম জং উন সামরিকভাবে দেশটিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

উত্তর কোরিয়া দ্রুত একটি কার্যকর পারমাণবিক প্রতিরোধকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক একজন নৌ কমান্ডার প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ বলেন, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই হওয়ার কথা ছিলো।  আমি অবাক হচ্ছি, কারণ আমরা উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিকে ছোট করে দেখেছি। আসলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

গত ৫ ও ১০ই জানুয়ারির পরীক্ষার পর পিয়ংইয়ং দাবি করেছিল যে তারা সফলভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

কারণ এর মানে হলো উত্তর কোরিয়া এমন প্রযুক্তি তৈরি করছে, যা ওই অঞ্চল জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ব্যয়বহুল ও জটিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে হারিয়ে দিতে পারে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হামলা হলে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কার্যকর প্রতিরোধকে রূপান্তর থেকে বহু দূরেই আছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশ দুটি বারবার বলেছে উত্তর কোরিয়া বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের বা হামলার কোনো লক্ষ্য তাদের নেই।

তার পরও ছোট এই দেশটি কেন তার জিডিপির এক চতুর্থাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে চলেছে সেটিই মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ব্যাপারে, বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলেন, যে এমনও হতে পারে যে উত্তর কোরিয়া মনে করে যে নিজেকে রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র এখনো তাদের নেই।

তিনি বলেন, কিম জং উন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমার মনে হয় তিনি চীন বা রাশিয়াসহ কাউকেই বিশ্বাস করেন না। সে কারণেই হয়তো মনে করছেন যে তার সক্ষমতাকে অনেক বাড়াতে হবে।