সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা ব্যুরো।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকশিত করতে তার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেছেন, শহীদের রক্ত বৃথা যায় না, বৃথা যেতে আমরা দেইনি, বৃথা যেতে আমরা দেব না। যা কিছু অর্জন আমরা করতে পেরেছি, মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই কিন্তু তা করতে পেরেছি। ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যে অবদান সেটাতো মুছেই ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। আসলে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস ঠিকই ফিরে আসে। আর আজকে আমাদের সেই দিন।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘একুশে পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

সকল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকষিত করায় তার সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি সেটা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকষিত হয় সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। সেই প্রচেষ্টায়ও আমরা সাফল্য অর্জন করব বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা চাই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জন করা।

বাঙালীর ভাষার আধিক্য আদায়ের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের সকলকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের না। যারা মাতৃভাষা ভালবাসে এবং মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে এবং মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা, হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষা খুঁজে বের করা এবং সেগুলো সংরক্ষিত করা, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টায় আমরা সফলকাম হয়েছি।

বাহান্নর ভাষা শহীদদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শহীদের রক্ত বৃথা যায় না, বৃথা যেতে আমরা দেইনি, বৃথা যেতে আমরা দেব না। যা কিছু অর্জন আমরা করতে পেরেছি, মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই কিন্তু তা করতে পেরেছি। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বলতেন এবং তার লেখায়ও আছে যে, মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার।

ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সেটা মুছে ফেলা হয়েছিল। আসলে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস ঠিকই ফিরে আসে। আজকে আমাদের সেই দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নাগরিকদের মাঝে একুশে পদক বিতরণ করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) এবং মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর) পুরস্কার পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে পদক পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান, রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউএবিএম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার। নাচের জন্য পদক পেয়েছেন জিনাত বরকতুল্লাহ, সঙ্গীতে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেণু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ। সাংবাদিকতায় এম এ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং শিক্ষায় অধ্যাপক ডাঃ গৌতম বুদ্ধ দাস মনোনীত হয়েছেন। সমাজসেবা বিভাগে মনোনীত হয়েছেন এস এম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ ডাঃ জ্ঞানশ্রী মহাথেরো।

ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ। গবেষণা বিভাগে পদক পেয়েছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুস সাত্তার ম-ল, ডাঃ মোঃ এনামুল হক (টিম লিডার), ডাঃ শাহানাজ সুলতানা (টিম) এবং ডাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস (টিম)।

জনপ্রিয়

যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে

জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:৫২:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ঢাকা ব্যুরো।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকশিত করতে তার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেছেন, শহীদের রক্ত বৃথা যায় না, বৃথা যেতে আমরা দেইনি, বৃথা যেতে আমরা দেব না। যা কিছু অর্জন আমরা করতে পেরেছি, মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই কিন্তু তা করতে পেরেছি। ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যে অবদান সেটাতো মুছেই ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। আসলে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস ঠিকই ফিরে আসে। আর আজকে আমাদের সেই দিন।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘একুশে পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

সকল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকষিত করায় তার সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি সেটা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকষিত হয় সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। সেই প্রচেষ্টায়ও আমরা সাফল্য অর্জন করব বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা চাই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জন করা।

বাঙালীর ভাষার আধিক্য আদায়ের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের সকলকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের না। যারা মাতৃভাষা ভালবাসে এবং মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে এবং মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা, হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষা খুঁজে বের করা এবং সেগুলো সংরক্ষিত করা, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টায় আমরা সফলকাম হয়েছি।

বাহান্নর ভাষা শহীদদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শহীদের রক্ত বৃথা যায় না, বৃথা যেতে আমরা দেইনি, বৃথা যেতে আমরা দেব না। যা কিছু অর্জন আমরা করতে পেরেছি, মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই কিন্তু তা করতে পেরেছি। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বলতেন এবং তার লেখায়ও আছে যে, মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার।

ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান সেটা মুছে ফেলা হয়েছিল। আসলে সত্যকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস ঠিকই ফিরে আসে। আজকে আমাদের সেই দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নাগরিকদের মাঝে একুশে পদক বিতরণ করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) এবং মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর) পুরস্কার পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে পদক পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান, রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউএবিএম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার। নাচের জন্য পদক পেয়েছেন জিনাত বরকতুল্লাহ, সঙ্গীতে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেণু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ। সাংবাদিকতায় এম এ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং শিক্ষায় অধ্যাপক ডাঃ গৌতম বুদ্ধ দাস মনোনীত হয়েছেন। সমাজসেবা বিভাগে মনোনীত হয়েছেন এস এম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ ডাঃ জ্ঞানশ্রী মহাথেরো।

ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ। গবেষণা বিভাগে পদক পেয়েছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুস সাত্তার ম-ল, ডাঃ মোঃ এনামুল হক (টিম লিডার), ডাঃ শাহানাজ সুলতানা (টিম) এবং ডাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস (টিম)।