শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপুরে খাবার পানির তীব্র সংকট

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া,সদর ইউনিয়ন সহ ৫টি ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির তীব্র সংকট। প্রতি বছরের ন্যায় পৌষ মাস থেকে পানির কিছুটা অভাব দেখা দিলেও প্রথমবারের মতো এ বছর পানির স্তর নিচে নেমে হওয়ায় তীব্র সংকটের রূপ নিয়েছে। রোববার সকালে দুর্গাপুর ইউনিয়নের দাহাপাড়া,গোপালপুর,বারমারী এলাকায় গিয়ে পানি সঙ্কটের এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,বসতবাড়ির টিউবয়েলে পানি নেই,কেউ ছড়ার পানি খাবার ও রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। গোসল সহ দৈনন্দিন কাজ হয়ে উঠছে দুর্বিষহ। বাড়ির আঙিনায় হচ্ছে না ব্যক্তিগত শাক-সবজি। ফাল্গুন এলেও অনেক গাছেই আসেনি আমের মুকুল। সীমান্ত এলাকার পেশাদার সবজি চাষীরা পানি সংকটে রয়েছে চরম দুর্ভোগে। সেচ পাম্পে পানি না আসায় সবজি চাষ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোরোর মৌসুম পার হয়ে গেলেও পানির অভাবে পতিত পড়ে রয়েছে ধানের জমি। এসব অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর এবং কৃষিজমিতে মজুরি খেটে জীবিকা নির্বাহ করে।
ফলে,ওই পরিস্থিতিতে এই এলাকার কৃষিজীবী ও কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমজীবীরা বেকার হয়ে পড়েছে। মাটিতে রস না থাকায় মাঠে-ঘাটে ঘাসের অভাবে গবাদি পশুগুলোরও স্বাস্থ্য ভঙ্গুর অবস্থা। মাতৃছাগল ও মাতৃগাভী পর্যাপ্ত দুগ্ধের যোগান দিতে না পারায় বাচ্চা ছাগল-বাছুরগুলোও রোগে শোকে ভোগছে। ধারণা করা যায়, এর প্রভাবে ওইসব এলাকার অর্থনীতি অনেকটাই হুমকীর মুখে।
সীমান্ত এলাকার এক বৃক্ষপ্রেমী শিক্ষার্থী জানায়, সাম্প্রতিক কালে পানিসঙ্কটের কারণে তার আম,লিচুসহ ফুল-ফল গাছে এবার মুকুল আসেনি। উপরন্তু, পেঁপে, ঘৃতকুমারী, লাউ,শীম জাতীয় গাছগুলো পানির তীব্র অভাবে মারা যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, বাড়িতে দুটো টিউবয়েল থাকলেও একটি সেপ্টেম্বর মাসেই অচল হয়ে পরে। অন্যটির পানির উপর নির্ভশীল থাকে আশেপাশের বেশ ক’টি পরিবার। ফলে, এই পরিস্থিতিতে টিউবয়েলের পানি দিয়ে ফুল-ফলের চাষ করতে চাওয়াটা বিলাসীতার পর্যায়ে দাঁড়ায়। দরিদ্র এলাকাবাসীর পক্ষে এই দুর্যোগ মোকাবিলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ানোর ফলে এ বিষয়ে তারা সরকারী সহযোগিতা কামনা করছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, বিশেষ করে কুল্লাগড়া ও দুর্গাপুর ইউনিয়নে পানি সংকটের তীব্রতা বেশী দেখা গেছে। সেখানে মাটির নিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাথর থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। তবে ভিলেজ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় ওইসব এলাকাকে অন্তভূক্ত করে পানি সমস্যা দূরীভুত করা হবে। কমিউনিটি পর্যায়ে টিউবওয়েল বসানোর মাধ্যমে ১০-১২টি পরিবারকে পাইপ দিয়ে কানিক্টিভি করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের কাজগুলি মাননীয় সাংসদ,উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান জানান,সীমান্তবর্তী উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে পানি সংকটের পাশাপাশি দুটি ইউনিয়ন(দুর্গাপুর-কুল্লাগড়া)পানির সঙ্কট চরমে। বিষয়টি ডিসি স্যারের সাথে কথা বলবো।

বার্তা/এন

জনপ্রিয়

চিকিৎসকরা বললেই লন্ডন নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে: ডা. জাহিদ

দুর্গাপুরে খাবার পানির তীব্র সংকট

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া,সদর ইউনিয়ন সহ ৫টি ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির তীব্র সংকট। প্রতি বছরের ন্যায় পৌষ মাস থেকে পানির কিছুটা অভাব দেখা দিলেও প্রথমবারের মতো এ বছর পানির স্তর নিচে নেমে হওয়ায় তীব্র সংকটের রূপ নিয়েছে। রোববার সকালে দুর্গাপুর ইউনিয়নের দাহাপাড়া,গোপালপুর,বারমারী এলাকায় গিয়ে পানি সঙ্কটের এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,বসতবাড়ির টিউবয়েলে পানি নেই,কেউ ছড়ার পানি খাবার ও রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। গোসল সহ দৈনন্দিন কাজ হয়ে উঠছে দুর্বিষহ। বাড়ির আঙিনায় হচ্ছে না ব্যক্তিগত শাক-সবজি। ফাল্গুন এলেও অনেক গাছেই আসেনি আমের মুকুল। সীমান্ত এলাকার পেশাদার সবজি চাষীরা পানি সংকটে রয়েছে চরম দুর্ভোগে। সেচ পাম্পে পানি না আসায় সবজি চাষ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোরোর মৌসুম পার হয়ে গেলেও পানির অভাবে পতিত পড়ে রয়েছে ধানের জমি। এসব অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর এবং কৃষিজমিতে মজুরি খেটে জীবিকা নির্বাহ করে।
ফলে,ওই পরিস্থিতিতে এই এলাকার কৃষিজীবী ও কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমজীবীরা বেকার হয়ে পড়েছে। মাটিতে রস না থাকায় মাঠে-ঘাটে ঘাসের অভাবে গবাদি পশুগুলোরও স্বাস্থ্য ভঙ্গুর অবস্থা। মাতৃছাগল ও মাতৃগাভী পর্যাপ্ত দুগ্ধের যোগান দিতে না পারায় বাচ্চা ছাগল-বাছুরগুলোও রোগে শোকে ভোগছে। ধারণা করা যায়, এর প্রভাবে ওইসব এলাকার অর্থনীতি অনেকটাই হুমকীর মুখে।
সীমান্ত এলাকার এক বৃক্ষপ্রেমী শিক্ষার্থী জানায়, সাম্প্রতিক কালে পানিসঙ্কটের কারণে তার আম,লিচুসহ ফুল-ফল গাছে এবার মুকুল আসেনি। উপরন্তু, পেঁপে, ঘৃতকুমারী, লাউ,শীম জাতীয় গাছগুলো পানির তীব্র অভাবে মারা যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, বাড়িতে দুটো টিউবয়েল থাকলেও একটি সেপ্টেম্বর মাসেই অচল হয়ে পরে। অন্যটির পানির উপর নির্ভশীল থাকে আশেপাশের বেশ ক’টি পরিবার। ফলে, এই পরিস্থিতিতে টিউবয়েলের পানি দিয়ে ফুল-ফলের চাষ করতে চাওয়াটা বিলাসীতার পর্যায়ে দাঁড়ায়। দরিদ্র এলাকাবাসীর পক্ষে এই দুর্যোগ মোকাবিলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ানোর ফলে এ বিষয়ে তারা সরকারী সহযোগিতা কামনা করছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, বিশেষ করে কুল্লাগড়া ও দুর্গাপুর ইউনিয়নে পানি সংকটের তীব্রতা বেশী দেখা গেছে। সেখানে মাটির নিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাথর থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। তবে ভিলেজ ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় ওইসব এলাকাকে অন্তভূক্ত করে পানি সমস্যা দূরীভুত করা হবে। কমিউনিটি পর্যায়ে টিউবওয়েল বসানোর মাধ্যমে ১০-১২টি পরিবারকে পাইপ দিয়ে কানিক্টিভি করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের কাজগুলি মাননীয় সাংসদ,উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান জানান,সীমান্তবর্তী উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে পানি সংকটের পাশাপাশি দুটি ইউনিয়ন(দুর্গাপুর-কুল্লাগড়া)পানির সঙ্কট চরমে। বিষয়টি ডিসি স্যারের সাথে কথা বলবো।

বার্তা/এন