সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

উৎপাদন ও ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের পাশাপাশি আমদানি পর্যায়েও ১০ শতাংশ ভ্যাট কমছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের যে মজুদ দেশে আছে, তা দিয়ে ‘অনায়াসে’ রোজার মাস পার করা যাবে।

আজ সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আতঙ্কিত হয়ে পণ্য মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল না করতে সাধারণ ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সরবরাহ সঙ্কটের কথা বলে সয়াবিন তেলসহ আরো কয়েকটি নিত্যপণ্যে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন বিক্রেতারা। এ অবস্থায় রোজার সময়ে পরিস্থিতি কেমন হবে সেটাই জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, নাই নাই ভাবটা আসছে। কারণ, কেউ কেউ মজুদ করেছে। দেশে যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ আছে। টিসিবিও এক কোটি মানুষকে দিতে তৈরি হয়েছে। আপানারা এই মেসেজটা দেন।

তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়বে না সেই নিশ্চয়তার চেয়ে বলতে পারি, ভ্যাট কমালে পণ্যের দাম কমতেও পারে। আমরা যে প্রাইসটা ঠিক করেছি, সেটা নিশ্চিত করতে চাই। বাংলাদেশে রমজান এলে তারা সুযোগটা নেয়। অথচ বিদেশে পূজা-পার্বণে দাম কমে।

অবশ্য ইউক্রেইনে যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও জানান টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, ভয় পাচ্ছি যুদ্ধটা কোথায় গিয়ে ঠেকে। কারণ তেলটা শেষ কথা নয়। গমের বিষয়ও রয়েছে। আবার সুইফট থেকে রাশিয়াকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গম আসে ইউক্রেইন-রাশিয়া থেকে। ভ্যাট কমানোর পর পণ্যের মূল্যে কতটা প্রভাব পড়বে, তা ঘোষণা করা হবে।

টিপু মুনশি বলেন, এই মুহূর্তে ঠিক বলতে পারব না। এসআরও জারি হওয়ার পর বলা যাবে। আমরা যেটা নির্ধারণ করে দিলাম, সেই দামটা তাদের নিতে হবে। তারা চাইলে কমও নিতে পারে।কিন্তু বেশি নিলে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং সেটা নেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা সব রকম অ্যাকশনে যাচ্ছি ওই প্রাইস ধরে। বিশ্ববাজারে বাড়লেও সেটা আমরা বিবেচনায় নেব না। বেশি দামের পণ্য দেশে ঢুকলে পরে আমরা নতুন মূল্য বিবেচনায় নেব।

বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে- সেই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু আমরা যেটা পারি টিসিবির মাধ্যমে সরবরাহ বাড়াতে, সেটা আমরা করব।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামাতে কোন পণ্যে কতটা ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে তা জানার জন্য এনবিআরের এসআরও প্রকাশ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তবে সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট প্রত্যাহারের সম্ভাব্য হার নিয়ে কথা বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

মন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেলে ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কমানো হবে। উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ সেখানে কমানোর কথা বলা হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ রয়েছে, সেখান থেকে ১০ শতাংশ কমানো হবে। কী পরিমাণ কমানো হবে সেটা এনবিআরের এসআরও প্রকাশের পর জানা যাবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, চিনিতে রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) আছে ২০ শতাংশ, সিডি আছে প্রতি টনে তিন হাজার টাকা। চিনির ক্ষেত্রে ভ্যাট নয়; আরডি কমানো হতে পারে। তেলের জন্য ভ্যাট আছে। এজন্য ভ্যাট কমানো হতে পারে।

তিনি বলেন, তেলের আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট- এটা সবাইকেই দিতে হচ্ছে। তারপরে যখন প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়, সেখানে যেটুকু ভ্যালু অ্যাডিশন হয়, সেটুকুর ওপর ১৫ শতাংশ, টোটাল ভ্যালুর ওপরে নয়।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার টাস্কফোর্স নামানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সাপ্লাই চেইন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য উৎস পর্যায়ে নজরদারি করবে এই টাস্কফোর্স। র‌্যাব, পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা এই পর্যায়ে ভূমিকা রাখবেন।

জনপ্রিয়

ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট চালু জানুয়ারিতে

ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমছে: বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:০১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২

উৎপাদন ও ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের পাশাপাশি আমদানি পর্যায়েও ১০ শতাংশ ভ্যাট কমছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের যে মজুদ দেশে আছে, তা দিয়ে ‘অনায়াসে’ রোজার মাস পার করা যাবে।

আজ সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আতঙ্কিত হয়ে পণ্য মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল না করতে সাধারণ ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সরবরাহ সঙ্কটের কথা বলে সয়াবিন তেলসহ আরো কয়েকটি নিত্যপণ্যে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন বিক্রেতারা। এ অবস্থায় রোজার সময়ে পরিস্থিতি কেমন হবে সেটাই জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, নাই নাই ভাবটা আসছে। কারণ, কেউ কেউ মজুদ করেছে। দেশে যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ আছে। টিসিবিও এক কোটি মানুষকে দিতে তৈরি হয়েছে। আপানারা এই মেসেজটা দেন।

তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়বে না সেই নিশ্চয়তার চেয়ে বলতে পারি, ভ্যাট কমালে পণ্যের দাম কমতেও পারে। আমরা যে প্রাইসটা ঠিক করেছি, সেটা নিশ্চিত করতে চাই। বাংলাদেশে রমজান এলে তারা সুযোগটা নেয়। অথচ বিদেশে পূজা-পার্বণে দাম কমে।

অবশ্য ইউক্রেইনে যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও জানান টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, ভয় পাচ্ছি যুদ্ধটা কোথায় গিয়ে ঠেকে। কারণ তেলটা শেষ কথা নয়। গমের বিষয়ও রয়েছে। আবার সুইফট থেকে রাশিয়াকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গম আসে ইউক্রেইন-রাশিয়া থেকে। ভ্যাট কমানোর পর পণ্যের মূল্যে কতটা প্রভাব পড়বে, তা ঘোষণা করা হবে।

টিপু মুনশি বলেন, এই মুহূর্তে ঠিক বলতে পারব না। এসআরও জারি হওয়ার পর বলা যাবে। আমরা যেটা নির্ধারণ করে দিলাম, সেই দামটা তাদের নিতে হবে। তারা চাইলে কমও নিতে পারে।কিন্তু বেশি নিলে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং সেটা নেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা সব রকম অ্যাকশনে যাচ্ছি ওই প্রাইস ধরে। বিশ্ববাজারে বাড়লেও সেটা আমরা বিবেচনায় নেব না। বেশি দামের পণ্য দেশে ঢুকলে পরে আমরা নতুন মূল্য বিবেচনায় নেব।

বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে- সেই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু আমরা যেটা পারি টিসিবির মাধ্যমে সরবরাহ বাড়াতে, সেটা আমরা করব।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামাতে কোন পণ্যে কতটা ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে তা জানার জন্য এনবিআরের এসআরও প্রকাশ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তবে সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট প্রত্যাহারের সম্ভাব্য হার নিয়ে কথা বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

মন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেলে ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কমানো হবে। উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ সেখানে কমানোর কথা বলা হয়েছে। আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ রয়েছে, সেখান থেকে ১০ শতাংশ কমানো হবে। কী পরিমাণ কমানো হবে সেটা এনবিআরের এসআরও প্রকাশের পর জানা যাবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, চিনিতে রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) আছে ২০ শতাংশ, সিডি আছে প্রতি টনে তিন হাজার টাকা। চিনির ক্ষেত্রে ভ্যাট নয়; আরডি কমানো হতে পারে। তেলের জন্য ভ্যাট আছে। এজন্য ভ্যাট কমানো হতে পারে।

তিনি বলেন, তেলের আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট- এটা সবাইকেই দিতে হচ্ছে। তারপরে যখন প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়, সেখানে যেটুকু ভ্যালু অ্যাডিশন হয়, সেটুকুর ওপর ১৫ শতাংশ, টোটাল ভ্যালুর ওপরে নয়।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার টাস্কফোর্স নামানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সাপ্লাই চেইন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য উৎস পর্যায়ে নজরদারি করবে এই টাস্কফোর্স। র‌্যাব, পুলিশ, জেলা প্রশাসক ও ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা এই পর্যায়ে ভূমিকা রাখবেন।