
যশোরে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দৈনিক লোকসমাজের বার্তা সম্পাদক, বিডিনিউজ, দেশ রূপান্তর ও একুশে টেলিভিশনের যশোর প্রতিনিধি শিকদার খালিদ। জ্ঞান ফিরে আসার পর কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর তার কাছ থেকে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে প্রকৃত তথ্য পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার (৬ মে) রাতে যশোর শহরতলীর বিরামপুর কালীতলা এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। ওই রাতে প্রচার হয়েছিল তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
সাংবাদিক শিকদার খালিদ জানান, বিরামপুর কালীতলা এলাকার মৃত আব্দুল জলিল মোল্লার ছেলে লিটন ওরফে হাঁস লিটন বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডর সাথে জড়িত। তার সাথে শিকদার খালিদের পূর্ব হতে শক্রতা ও দ্বন্দ্ব চলে আসছে। গত শুক্রবার (৬ মে) রাতে হাঁস লিটন জরুরি কথা আছে বলে মোবাইল ফোন করে তাকে তার বাড়িতে যেতে বলেন। পরে তিনি সেখানে যান এবং বাড়ির ছাদে কথা বলার এক পর্যায়ে হাঁস লিটনের নেতৃত্বে সহযোগী টাইলস মিস্ত্রি তৌহিদ তার ওপর আচমকা আক্রমণ করেন। টাইলস মিস্ত্রি তৌহিদের বাড়ি শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ায়।
তিনি বলেন, হাঁস লিটন ধারালো দা দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করেন। আর তার সহযোগী তৌহিদ লোহার রড দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
শিকদার খালিদ বলেন, তিনি সাংবাদিকতা করেন জানতে পেরে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে গুম করার উদ্দেশ্যে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন হামলাকারীরা। কিন্তু তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তারা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৩ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন, হাঁস লিটন, তার স্ত্রী জাহানারা ও সহযোগী তৌহিদ।
এদিকে, ঘটনার ব্যাপারে প্রেসক্লাব যশোরের নেতৃবৃন্দ রাতেই হাসপাতালে যান এবং খোঁজখবর নেন। এছাড়া থানায় যান এবং ঘটনায় জড়িতদের আটকের দাবি জানান। পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান শুরু করে। সন্ত্রাসী লিটনসহ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চলে। এসময় সন্ত্রাসী লিটন ও তার সহযোগী তৌহিদ পালিয়ে যায় অভিযানের আগেই। তবে পুলিশ হাঁস লিটন চক্রের ৫ জনকে আটক করে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সম্পর্কে তিনি অবগত। এই বিষয়ে সাংবাদিকের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ তা মামলা হিসাবে গ্রহণ করবে। এই ঘটনায় হাঁস লিটনের পরিবারের ৫ সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা না পেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।
এদিকে, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের (জেইউজে) সদস্য ও দৈনিক লোকসমাজের বার্তা সম্পাদক শিকদার খালিদকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জেইউজে।
সংগঠনের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক এইচআর তুহিনসহ নেতৃবৃন্দ দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাঁস লিটনসহ হত্যাচেষ্টাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পৃথক বিবৃতিতে হামলার ঘটনায় মৈত্রী ভলান্টিয়ার্স’র আহ্বায়ক অ্যাড. মাহমুদ হাসান বুলু ও সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, প্রেসক্লাব যশোর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসক্লাব যশোরের নির্বাহী কমিটির সদস্য শিকদার খালিদ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার রাতে শহরতলীর বিরামপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক কারবারি হাঁস লিটন ও বারান্দি মোল্লাপাড়ার তৌহিদের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা সাংবাদিক নেতা খালিদের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারাত্মক জখম করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তার উপর নৃশংস এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রেসক্লাব যশোর সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান।
এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় যশোরের সাংবাদিক সমাজ রাজপথে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
প্রতিনিধি, যশোর 







































