বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন পেলেন রিজেন্ট সাহেদ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২
  • ১১৮

ছবি-সংগৃহীত

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে একটি মামলায় জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জালিয়াতির মাধ্যমে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এই আদেশ দেন আদালত।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সাহেদ করিম ও বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে কমিশন।

কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান মিরাজ বাদী হয়ে সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা করেন।

মামলাসূত্রে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে, বিশ্বাস ভঙ্গ করে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে ঋণের নামে পদ্মা ব্যাংকের এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, যা চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সুদ-আসলে দাঁড়ায় দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা। দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) উদ্যোক্তা পরিচালক ও ক্রেডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী ও রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মো. ইব্রাহিম খলিল। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতালের এমআরআই মেশিন কেনার জন্য দুই কোটি টাকার ঋণের জন্য পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় আবেদন করেন ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ওই মেশিন কেনার জন্য সরবরাহকারী হিসেবে ‘আর্বটস মেডিকেল ইকুইপমেন্টের’ নামে দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। পে-অর্ডারটি একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেই হিসাব থেকেই দুই কোটি টাকা উত্তোলন করা হয় ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি।

এদিকে ওই দুই কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করার আগেই সাহেদ ঘুষ হিসেবে পদ্মা ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখায় বাবুল চিশতীর মালিকানাধীন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের নামে ০১১১১০০০০২৩৬৩ নং হিসাবে ৩৫ লাখ টাকা জমা করেন। জমা রশিদ নং-৩০। পরে জমা করা ওই টাকা ২০১৫ সালের ১৮ ও ২০ জানুয়ারি উত্তোলন করেন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের এমডি ও বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী।

জানা গেছে, ঘুষের ৩৫ লাখ টাকা বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল চিশতী বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের হিসাব থেকে উত্তোলন করলেও ঘুষ গ্রহণের পেছনে সব কলকাঠি নেড়েছেন বাবুল চিশতী। তিনি বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের চেয়ারম্যান।

সাহেদের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের টেস্ট নিয়ে জালিয়াতির বিস্তর অভিযোগ ওঠার পর ২০২০ সালের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে। ওই বছরের ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

ওই ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনে।

জনপ্রিয়

কুবিতে ফিল্ম সোসাইটির কর্তৃক চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও নবীনবরণ

অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন পেলেন রিজেন্ট সাহেদ

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০২২

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে একটি মামলায় জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জালিয়াতির মাধ্যমে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এই আদেশ দেন আদালত।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সাহেদ করিম ও বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে কমিশন।

কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান মিরাজ বাদী হয়ে সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা করেন।

মামলাসূত্রে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে, বিশ্বাস ভঙ্গ করে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে ঋণের নামে পদ্মা ব্যাংকের এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, যা চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সুদ-আসলে দাঁড়ায় দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা। দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) উদ্যোক্তা পরিচালক ও ক্রেডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী ও রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মো. ইব্রাহিম খলিল। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাহেদ রিজেন্ট হাসপাতালের এমআরআই মেশিন কেনার জন্য দুই কোটি টাকার ঋণের জন্য পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় আবেদন করেন ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ওই মেশিন কেনার জন্য সরবরাহকারী হিসেবে ‘আর্বটস মেডিকেল ইকুইপমেন্টের’ নামে দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। পে-অর্ডারটি একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেই হিসাব থেকেই দুই কোটি টাকা উত্তোলন করা হয় ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি।

এদিকে ওই দুই কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করার আগেই সাহেদ ঘুষ হিসেবে পদ্মা ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখায় বাবুল চিশতীর মালিকানাধীন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের নামে ০১১১১০০০০২৩৬৩ নং হিসাবে ৩৫ লাখ টাকা জমা করেন। জমা রশিদ নং-৩০। পরে জমা করা ওই টাকা ২০১৫ সালের ১৮ ও ২০ জানুয়ারি উত্তোলন করেন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের এমডি ও বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী।

জানা গেছে, ঘুষের ৩৫ লাখ টাকা বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল চিশতী বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের হিসাব থেকে উত্তোলন করলেও ঘুষ গ্রহণের পেছনে সব কলকাঠি নেড়েছেন বাবুল চিশতী। তিনি বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের চেয়ারম্যান।

সাহেদের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসের টেস্ট নিয়ে জালিয়াতির বিস্তর অভিযোগ ওঠার পর ২০২০ সালের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে। ওই বছরের ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

ওই ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনে।