
ঢাকা ব্যুরো।। বিএনপি রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে চায় । বিকল্প কোনো স্থান না চেয়ে শুধু এখানের জন্যই পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছে দলটি। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে বাধা আসবে-এমনটা ধরে নিয়েই তারা প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
তাই এক্ষেত্রে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ককেই তারা নিরাপদ মনে করছেন। পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হলে কয়েকদিন আগ থেকেই নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসতে হবে।
টানা অবস্থান নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও টানা তিন দিন তাদের সেখানেই থাকতে হবে। নয়াপল্টনে সমাবেশ হলে সেক্ষেত্রে তাদের থাকা ও খাওয়া এমনকি কোনো বাধা এলে তা মোকাবিলা করা সহজ হবে।
কারণ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের অলিগলি সবই পরিচিত। গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতার বাসাও রয়েছে সেখানে। সবকিছু বিবেচনা করে নয়াপল্টনেই কর্মসূচি পালনে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। সেভাবেই নেওয়া হচ্ছে প্রস্তুতি।
১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারবে না। এ দুটি বিষয় নিশ্চয়তা পেলে শেষ মুহূর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিএনপি।
তবে সোওরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন হবে যুব মহিলা লীগের সম্মেলন। তাই একদিনে সেখানে গণসমাবেশের মঞ্চ তৈরিসহ সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছি। আপাতত আমরা বিকল্প কোনো প্রস্তাব দেইনি।
গণসমাবেশের অনুমতি ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়টি অবহিত করতে মঙ্গলবার বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে যান।
বিএনপির এক নেতা যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে নয়াপল্টন বাদে বিকল্প কোনো স্থানে সমাবেশ করা যায় কিনা জানতে চাওয়া হয়। তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাহলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কিংবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ দেন।
তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সমাবেশ করবে বলে শোনা যাচ্ছে। আর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংসদ ভবন এলাকা। সেখানে রাজনৈতিক সমাবেশ হয় না।
এ সময় বিএনপি নেতারা বলেন, তাহলে নয়াপল্টনের সামনের সড়কে অনুমতি দিলে সমস্যা কী। এর আগে এখানে বড় দুটি সমাবেশ হয়েছে। আপনারাই অনুমতি দিয়েছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। ১০ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সংঘাত বা সংঘর্ষ হবে না-এমন নিশ্চয়তা দিতে পারি। বিএনপি নেতাদের কথা শুনে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সবকিছু বিবেচনা করে কোথায় অনুমতি দেওয়া যায় তা পরে জানানো হবে। নয়াপল্টন ছাড়া অন্য কোথাও সমাবেশ করা যায় কিনা তা হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান বিএনপির প্রতিনিধি দল।
এমন কোনো আশঙ্কা থাকলে সেক্ষেত্রে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা কম। যদিও বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত, ওইদিন তারা শুধু গণসমাবেশই করবে। ব্যাপক গণজমায়েত করা হলেও টানা অবস্থান নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
মঙ্গলবার বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপি উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা লিখিত দরখাস্ত পেয়েছি, এখন সেটি বিবেচনা করে দেখব অনুমতি দেওয়া যায় কিনা। আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে তাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখব কোনো ধরনের ঝুঁকি রয়েছে কিনা। গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যের ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, আমরা আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছি।
বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই আমরা পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করতে চেয়েছি। সরকারি দল যেভাবে ফ্যাসিবাদের দিকে যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করছে। তাই আমরা যদি আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করি, তবে সরকারি দল তেমন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবে না। আপাতত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে এমনটা ধরে নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তারা জানতে চেয়েছেন আর কোনো বিকল্প প্রস্তাব আছে কিনা। আমরা বলেছি, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানাব।
নিজস্ব সংবাদদাতা 







































