
ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য চীনা কোম্পানির কাছ থেকে বেসামরিক ড্রোন কিনছে রাশিয়া। রুশ কোম্পানিগুলো মার্চ ২০২২ থেকে মে ২০২৩ পর্যন্ত রাশিয়ায় কমপক্ষে ৩০ হাজার ড্রোন কিনেছে। যার মূল্য ৩২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ডিসেম্বর ২০২২ থেকে এপ্রিল ২০২৩-এর মধ্যে কমপক্ষে ৩৭টি চীনা চালকবিহীন আকাশযান কিনেছে। যার মূল্য ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ডলার। রোববার জাপানের শীর্ষস্থানীয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রুশরা চীনা প্রতিপক্ষকে ২২টি ডিভাইসের জন্য ১.২ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ প্রদান করেছে। আরও ১০টি পোর্টেবল ব্যক্তিগত কম্পিউটারের জন্য ব্যয় করে প্রায় ৩৬ হাজার ৭৭ ডলার। কাস্টমস রেকর্ডগুলো আরও দেখায়, ডিজেআই দ্বারা নির্মিত ৩৪টি ড্রোন রাশিয়ায় পাঠানো হয়। যার মূল্য ছিল ৭৫ হাজার ১০০ ডলার। প্রতিটির টেক অফ ওজন ২৫০ কেজি থেকে ৭ কেজির মধ্যে ছিল। নিক্কেইকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডিজেআই বলে, কোম্পানি এই বছর ডিজেআইয়ে জড়িত কাস্টমস রেকর্ড যাচাই করতে পারেনি। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে ডিজেআই। গত বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনে সব চালান ও কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। আবার রুশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্ট্যাটাস কমপ্লায়েন্স’ তিনটি ড্রোন আমদানি করেছে বলে জানায় নিক্কেই। যেগুলোর ওজন ২৫ থেকে ১৫৯ কেজির মধ্যে। ড্রোনগুলোকে বেসামরিক মডেল হিসাবে রেকর্ডে বর্ণনা করা হয়। ২৫ কেজি ওজনের ড্রোনগুলো পুনরুদ্ধার অথবা আক্রমণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চালকবিহীন বিমানের বিশেষজ্ঞ তোমোয়ুকি ফুরুতানি। এই ড্রোনগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে স্ট্যাটাস কমপ্লায়েন্স প্রাথমিকভাবে নিক্কেই কে জানায়, তারা এ ব্যাপারে অবগত নন। পরে নিক্কেই কোম্পানির লেনদেন দেখালে তারা এটিকে অস্বীকার করে। হংকংভিত্তিক দুটি কোম্পানি ‘এপিআইও’ এবং ‘সেনওয়েই টেকনোলজি এইচকে’ সম্পৃক্ত ছিল বলে জানা যায়। দুই কোম্পানির কোনোটিই নিক্কেইর সাক্ষাৎকারের জন্য সাড়া দেয়নি।
ড্রোন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পাওয়ার পর জাপানের রুশ ও চীনা রাষ্ট্রদূতকে সাক্ষাৎকারের অনুরোধ করেছিল। কিন্তু সাড়া দেয়নি কেউই।
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী বিশেষজ্ঞরা বলেন, রুশ আক্রমণের শুরু থেকেই লজিস্টিক সমস্যা ও সরবরাহের ঘাটতিতে ভুগছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রকাশ্যে বলেন, যুদ্ধ ইউনিট, প্লাটুন, কোম্পানি ও ব্যাটালিয়নের জন্য অবশ্যই ড্রোন থাকা জরুরি।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলেন, ইউক্রেনের ওপর নজরদারি ও হামলা চালাতে ড্রোন ব্যবহার করছে রুশরা। নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র। তিনি এপ্রিল মাসে এ কথা জানালেও অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত থাকে।
এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক তদন্তকারী সংস্থা, অপারেশনস অ্যাট কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চের ডেপুটি ডিরেক্টর ড্যামিয়েন স্পিটার্স বলেন, ‘রুশ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রমণের আগে থেকেই তাদের অস্ত্র ব্যবস্থায় বেসামরিক পণ্য ও উপাদানগুলোর উপর নির্ভর করছে।’ টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজুতো সুজুকি বলেন, ‘যদি চীন রুশ যুদ্ধের অংশ হতে না চায় তবে তাদের ড্রোন বিক্রি করা উচিত নয়।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। 







































