শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিজার্ভ কমছে ,বাড়ছে ডলার বিক্রি

  • ঢাকা ব্যুরো।।
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
  • ৩৭৪

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট ডলার সংকট ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসাবে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ এবং এলসি খোলা কমায় সম্প্রতি ডলার সাশ্রয় হয়েছে। একই সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডলার নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে কোনো ব্যাংকের কাছে সস্তায় কিংবা স্বাভাবিক দরেও ডলার বিক্রি করা হবে না। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টের ২৩ দিনে (১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ১৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর গত বছর একই সময়ে ডলার বিক্রির পরিমাণ ছিল মাত্র ১৭৭ কোটি ৮০ লাখ (১ দশমিক ৭৭ বিলয়ন) ডলার। আর বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ডলার বিক্রির চিত্র পালটে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানিসহ নিত্যপণ্য আমদানি বিল পরিশোধ বাবদ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। এই রেট বাজারের তুলনায় সস্তা। কেননা, বাজারে প্রতি ডলার ১১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে অবৈধ চ্যানেলে ডলার লেনদেন হবে। এ জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ার পরেও ডলার সংকট সহসাই কাটছে না। এই ডলার পাচার হয় কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রিজার্ভ থেকে চলতি অর্থবছরের জুলাইতে বিক্রি করা হয় ১১৪ কোটি ৭০ ডলার বা ১ হাজার ১৪৭ মিলিয়ন ডলার। আর চলতি মাস আগস্টের প্রথম ২৩ দিনে বিক্রি করা হয় ৮১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর আগে সদ্য বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

এদিকে আমদানির দায় মেটাতে ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভে নিুমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। বুধবার আইএমএফ’র হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে, রিজার্ভ রয়েছে ২৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল রিজার্ভ। পরের বছর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে কমতে কমতে ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। যা দেশের স্বার্থেই করা হয়। আর ডলার পর্যাপ্ত থাকায় বিক্রি হচ্ছে। রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে। কেননা, বর্তমানে যে পরিমাণ ডলার রয়েছে তা দিয়ে ৫ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশের রিজার্ভের অর্থ দিয়ে ৩ মাসের আমদানি মেটানোকে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়।

জনপ্রিয়

রাণীশংকৈলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে মারধর, থানায় মামলা 

রিজার্ভ কমছে ,বাড়ছে ডলার বিক্রি

প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট ডলার সংকট ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসাবে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ এবং এলসি খোলা কমায় সম্প্রতি ডলার সাশ্রয় হয়েছে। একই সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডলার নিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে কোনো ব্যাংকের কাছে সস্তায় কিংবা স্বাভাবিক দরেও ডলার বিক্রি করা হবে না। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টের ২৩ দিনে (১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ১৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর গত বছর একই সময়ে ডলার বিক্রির পরিমাণ ছিল মাত্র ১৭৭ কোটি ৮০ লাখ (১ দশমিক ৭৭ বিলয়ন) ডলার। আর বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ডলার বিক্রির চিত্র পালটে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানিসহ নিত্যপণ্য আমদানি বিল পরিশোধ বাবদ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। এই রেট বাজারের তুলনায় সস্তা। কেননা, বাজারে প্রতি ডলার ১১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে অবৈধ চ্যানেলে ডলার লেনদেন হবে। এ জন্য রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ার পরেও ডলার সংকট সহসাই কাটছে না। এই ডলার পাচার হয় কিনা তা ভেবে দেখা দরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রিজার্ভ থেকে চলতি অর্থবছরের জুলাইতে বিক্রি করা হয় ১১৪ কোটি ৭০ ডলার বা ১ হাজার ১৪৭ মিলিয়ন ডলার। আর চলতি মাস আগস্টের প্রথম ২৩ দিনে বিক্রি করা হয় ৮১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর আগে সদ্য বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল।

এদিকে আমদানির দায় মেটাতে ডলার বিক্রির ফলে রিজার্ভে নিুমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। বুধবার আইএমএফ’র হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে, রিজার্ভ রয়েছে ২৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল রিজার্ভ। পরের বছর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে কমতে কমতে ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। যা দেশের স্বার্থেই করা হয়। আর ডলার পর্যাপ্ত থাকায় বিক্রি হচ্ছে। রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে। কেননা, বর্তমানে যে পরিমাণ ডলার রয়েছে তা দিয়ে ৫ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশের রিজার্ভের অর্থ দিয়ে ৩ মাসের আমদানি মেটানোকে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়।