ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ১৬ দিন ও ২ মাসের সন্তান নিয়ে এসএসসি (ভোকেশনাল) ২০২৪ পরীক্ষায় অংশ নেয় শান্তনা আক্তার স্মৃতি ও মহসিনা আক্তার নামের দুই মা। গত রবিবার (১২ মে) সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে।
ফলাফলে মহসিনা আক্তার পেয়েছেন জিপিএ-৫ এবং শান্তনা আক্তার স্মৃতি জিপিএ- ৪.৬১।
তাদের ফলাফলে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসীরা। নবজাতক শিশুকে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এমন সাফল্যমণ্ডিত ফলাফল করায় শিক্ষকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন ওই দুই মা পরিক্ষার্থীকে।
জানা গেছে, ২ মাস বয়সী শিশুর মা মহসিনা আক্তার আখলাস শিবপুর শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। সে উপজেলার শিবপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা মন্ডলের মেয়ে।
অন্যদিকে ১৬ দিন বয়সী শিশুটির মা শান্তনা আক্তার স্মৃতি ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। সে পার্শ্ববর্তী কালাই উপজেলার চক গাদুকা গ্রামের সানাউল ইসলামের মেয়ে।
এ বিষয়ে শান্তনা আক্তার স্মৃতি বলেন, পরীক্ষার ১৬ দিন আগে আমার বাচ্চা হয়েছে। বাচ্চাকে কেন্দ্রের পাশে আমার বাবার বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা দিয়েছিলাম। এমন ফলাফল করতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। আমার পরিবারও অনেক খুশি। আমার পড়াশোনা চলমান রাখব ইনশাআল্লাহ।
এ বিষয়ে মহসিনা আক্তার বলেন, ছোট শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। একদিকে নবজাতক কষ্ট পায় অন্যদিকে সন্তানের চিন্তায় আমিও পরীক্ষায় মন দিতে পারিনা। এরপরও যা ফলাফল হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল হয়েছে।
কেন্দ্র সচিব ও ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এ্যামেলি আক্তার বানু বলেন, আমার কেন্দ্রে শান্তনা আক্তার স্মৃতি ও মহসিনা আক্তার নামের দুই পরিক্ষার্থী ২ জন শিশু সন্তান নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের একজন জিপিএ ৫ পেয়েছে আর অন্যজন ৪.৮১। এরকম প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এমন ফলাফল সত্যিই প্রসংশনীয়।
উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার বাবুল কুমার মন্ডল বলেন, কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে ঘটনাটি আমি শুনেছিলাম। ১৬ দিন ও দুই মাসের ২ জন শিশুকে রেখেও ২ জন মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ফলাফলের কথা আপনার থেকে শুনলাম। যদিও অনেকে তাদের বাল্যবিবাহ ভাবতে পারে, তবে প্রকৃতপক্ষে তাদের বয়স ১৯ প্লাস। তারা ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
