
যশোরে স্বামীর দাবিকৃত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে মারপিট ও মাথার চুল কেটে দিয়েছে তার পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করে ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দিয়েছেন এক নারী। মঙ্গলবার দুপুরে স্বামী, দেবর ও শাশুড়ির নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা করেছেন তিনি। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য বাঘারপাড়া থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নারীর আইনজীবী।
মামলার আসামিরা হলো মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম,তৌহিদুল ইসলাম ও হাফিজা খাতুন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৫ মে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সিলুমপুর গ্রামের জামসের আলীর মেয়ে আনোয়ারা খাতুনের সাথে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে তরিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালংকারসহ ২ লাখ টাকার মালামাল উপহার হিসেবে দেয়া হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ব্যবসার জন্য তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তরিকুল ইসলাম। আনোয়ারা খাতুন টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় তরিকুল ইসলাম, তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম ও মা হাফিজা খাতুন তার উপর নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সহ্য করে সংসারে টিকে থাকার চেষ্টা করলেও সর্বশেষ গত ২৭ জুন একমাত্র ছেলে সন্তানকেসহ আনোয়ারা খাতুনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর তিনি তার পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্বামীর সাথে মীমাংশার চেষ্টা চালান। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই আনোয়ারা খাতুনের পিতার বাড়িতে মীমাংশায় বসে দুই পরিবারের লোকজন। এরপর আনোয়ারা খাতুন ও তার সন্তানকে নিয়ে মাইক্রোবাসাযোগে মেহেরপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন তরিকুল ইসলাম, তার ভাই ও মা। পথিমধ্যে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুরের বিপুল ফারাজির ইটভাটার সামনে পৌছুলে আনোয়ারা খাতুনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট করা হয় এবং তার মাথার চুল কেটে দেয়। এসময় তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে তার ছেলেকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তরিকুল ইসলাম ও তার স্বজনরা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সুস্থ হয়ে থানায় গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। যে কারণে তিনি গতকাল মঙ্গলবার আদালতে এ মামলা দায়ের করে ন্যায় বিচার প্রার্থণা করেছেন।
আনোয়ারা খাতুনের আইনজীবী মোস্তাফা হুমায়ুন কবির জানান, আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য বাঘারপাড়া থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
যশোরে আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় অভিযান, ফেনসিডিলসহ স্ত্রী আটক
আজ মঙ্গলবার সকালে যশোর শহরতলীর বিরামপুর এলাকার এক আওয়ামী লীগের নেতার বাড়ি থেকে ১৭৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার ও আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী সুলতানা বেগমকে (৫৩) আটক করেছে যশোর মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সদস্যরা। এ সময় আওয়ামী লীগ ওই নেতা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা জানিয়েছেন মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে যশোর শহরতলীর বিরামপুর ফকিরার মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭৫ বোতল ফেনসিডিলসহ এলাকার কেরামত আলী মোল্লার স্ত্রী সুলতানা বেগমকে আটক করা হয়। এ সময় কেরামত আলী মোল্লা মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরে সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
ফেনসিডিলসহ আটক সুলতানা বেগমের স্বামী কেরামত আলী মোল্লা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট যশোর জেলা শাখার সভাপতি,ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের কার্যকরী সদস্য। কেরামত আলীর বিরুদ্ধে যশোর জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম অস্ত্রসহ বহু মামলা রয়েছে ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের যশোরের উপপরিচালক আসলাম হোসেন সাংবাদিকদের আরো জানিয়েছেন, কেরামত আলী মোল্লা (৬০) ও তার স্ত্রী এলাকায় মাদক ব্যবসা করেন। গোপন এই খবরের ভিত্তিতে আমরা ছদ্মবেশে বেশ কয়েকদিন এলাকায় তদারকি করি। অনুসন্ধানে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আমরা কেরামত আলী মোল্লার বাড়িতে অভিযান চালাই। অভিযানের খবর জানতে পেরে কেরামত আলী মোল্লা পালিয়ে যান। আমরা তার বসতঘরে অভিযান চালিয়ে ৭টি বান্ডিলে ২৫ করে মোট ১৭৫ ফেনসিডিল উদ্ধার করি। ফেনসিডিল তার শোয়ার ঘরে খাটের নিচে সাজানো ছিল। একইসাথে কেরামত আলী মোল্লার স্ত্রী সুলতানা বেগমকে আটক করি।
এই ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিদর্শক শাহীন পারভেজ, সুলতানা বেগম ও তার স্বামী কেরামত আলী মোল্লাকে আসামি করে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ৮৬।
বাঘারপাড়া নারিকেলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন
যশোরের বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়ীয়া বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল দুপুরে সচেতন নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয় বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির-বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ এতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যক্তিরা বলেন, নারিকেলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে নিজ স্বার্থের কারণে পকেট কমিটি গঠন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে এমদাদ হোসেন। ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে মিহির কুমার সাহাকে নারিকেলবাড়ীয়া বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। যিনি একসময় বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। একসময় তিনি স্থানীয় বিএনপির-জামাতের অর্থের যোগানদাতাও ছিলেন। এমন একজন ব্যক্তিকে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত করায় ফুঁসে উঠেছে নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নবাসী।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গফুর, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন হীরা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন মানিক প্রমুখ
বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের পাশ থেকে বার্মিজ চাকুসহ দুই কিশোর গ্রেফতার
যশোর শহরের গরিব শাহ রোড এলাকা থেকে নাশকতা মূলক কর্মকান্ড ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এহসান তালুকদার রিফাত ও তানজিম রহমান বাঁধন নামে দুই উঠতি বয়স্ক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা দু’জন কিশোর গ্যায়ের সাথে জড়িত। রিফাত যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়া (মাঠপাড়া) গ্রামের ইমরান তালুকদারের ও তানজিম রহমান বাঁধন যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি (আদর্শপাড়া) এলাকার মিজানুর রহমান বকুলের ছেলে। গ্রেফতারকৃত দু’জনকে মঙ্গলবার ৩০ জুলাই দুপুরে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
যশোর ডিবি পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় শহরের গরিবশাহ এলাকা থেকে এহসান তালুকদার রিফাত ও তানজিম রহমান বাধনকে হাতে নাতে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশী করে এহসান তালুকদার রিফাতের পরিহিত পাজামার ডান পকেটের মধ্যে ১টি বার্মিজ চাকু সুইচ গিয়ার জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য তারা। পরে তাদেরকে কোতয়ালি থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দিয়ে মঙ্গলবার ৩০ জুলাই দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।#
যশোরে বিধবার অটো রিক্সা ভাড়ায় চালানোর কথা বলে চম্পট চালককে গণধোলাই,মামলা
যশোরে এক বিধবা নারীর ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের অটো রিকশা চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। বিধবার মেয়ে যশোর শহরের বেজপাড়া আজিমাবাদ কলোনীর নুর ইসলামের স্ত্রী ও মৃত আসলামের মেয়ে শারমিন আক্তার মুক্তা বাদি হয়ে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।মামলায় আসামী করেন, নড়াইল জেলার সদর থানার বগুড়া গ্রামে বর্তমানে যশোর শহরের বেজপাড়া আজিমাবাদ রাজুর বাসার ভাড়াটিয়া ইরাদ আলী শেখ এর ছেলে আব্দুস সামাদ, বেজপাড়া আজিমাবাদ কলোনীর হামজা ও নড়াইল জেলার সদর থানার বাঁশগ্রাম ইউপি’র বগুড়া গ্রামের মোশারেফ হোসেনের ছেলে টুটুল শেখ ওরফে রনি। স্থানীয় জনগণ আব্দুস সামাদকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
এমালায় বাদি উল্লেখ করেন,তার বিধবা মাতা আনোয়ারা বেগম (৬০) তার নিজ নামীয় একটি চার ব্যাটারী বিশিষ্ট হলুদ রংয়ের নতুন অটো রিকশা ৭৫ হাজার টাকায় কিনে ভাড়ায় চালাতেন। আব্দুস সামাদ বিধবার অটো রিকশা বিগত ২মাস যাবত ভাড়ায় চালাতো। প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৩ জুলাই সকাল ৮ টায় বিধবার বাড়ির গ্যারেজ থেকে অটো রিকশা উক্ত যুবক চালানোর কথা বলে সহযোগী হামজার সাথে বের হয়ে যায়। ওই দিন ফিরে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন তালবাহনা করতে থাকে। হামজা তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এলাকার স্থানীয় লোকজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে বাদি বুঝতে পারেন আব্দুস সামাদ ও হামজা রিকশাটি ভাড়া চালানোর কথা বলে নিয়ে কৌশলে চুরি করে অজ্ঞাতস্থানে বিক্রি করে দিয়েছে। বিষয়টি থানা ও ডিবি পুলিশকে অবহিত করে খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখা হয়। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৮ টায় আব্দুস সামাদকে শংকরপুর বাসটার্মিনাল এলাকায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় রাজু ও করিমুজ্জামানসহ আরো অনেকেই আটক করে। সে সময় উত্তেজিত জনতা আব্দুস সামাদকে উত্তম মাধ্যম দেয়। এক পর্যায় সে স্বীকার করে রিকশাটি খুলনা ফুলতলায় নিয়ে টুটুল শেখ ওরফে রনির কাছে ব্যাটারী বিক্রি করে রিক্সার বডিটি ফুলতলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে যশোর টু খুলনা মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখেছে। বিষয়টি ডিবি পুলিশকে অবহিত করলে রাজু ও করিমুজ্জামান ও বাদির স্বামী নুর ইসলামসহ আটক আব্দুস সামাদকে নিয়ে ডিবি পুলিশ রাত সাড়ে ১০ টার সময় উক্ত স্থান থেকে রিক্সার বডি উদ্ধার করে। পরে সহযোগী আসামী ও ব্যাটারী উদ্ধারের চেষ্টা করে ও সম্ভব হয়নি। পরে আব্দুস সামাদকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার ৩০ জুলাই দুপুরে চোর আব্দুস সামাদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।#
যশোর অফিস।। 







































