বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ২২ সিনেটরের চিঠি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেনকে চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাস্ট্রের ২২ জন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান। তারা উল্লেখ করেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার ছাত্রদের বিক্ষোভ দমনে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করেছে এবং সহিংসতা ও সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এডওয়ার্ড মার্কির ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত চিঠির সূত্রমতে।

চিঠিতে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির ২০২৪ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, সরকারি চাকরির কোটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সহিংসতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পুলিশ, বিক্ষোভকারী, বিরোধী কর্মী ও সরকারপন্থি সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ১৭০জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

এছাড়াও, বিক্ষোভের জবাবে বাংলাদেশ সরকার নিষেধাজ্ঞায় থাকা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ব্যবহার করেছে এবং টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কঠোর কারফিউ ও ‘দেখামাত্রই গুলি করার’ নির্দেশ দিয়েছে এবং ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রকে সকল সহিংসতার নিন্দা করতে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা চেয়েছেন, বিক্ষোভ দমনে যেসব সরকারি কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক।

বাংলাদেশের এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চিঠিটিতে। তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশীদার হতে হবে, যারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকারের অধিকারের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।

চিঠিতে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে, মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানরা বলেছেন, আটককৃতদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তি পেলেও, এখনো অনেকেই কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া, গণমাধ্যমকর্মী ও সরকার-বিরোধী সমালোচকদের অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে হয়রানি, নজরদারি এবং শারীরিক আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি কঠোর ডিজিটাল সেন্সরশিপও অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইন ব্যবস্থার উন্নতি করতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী মার্কিন সিনেটরদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাডওয়ার্ড জে মার্কি, ক্রিস ভ্যান হোলান, টাম্মি বাল্ডউইন, জেফ্রি এ মার্কলে, ক্রিস্টোফার এস. মারফি, টিম কাইন এবং রিচার্ড জে ডারবিন। এছাড়াও, কংগ্রেসম্যানদের মধ্যে স্বাক্ষর করেছেন জেমস পি ম্যাকগভার্ন, উইলিয়াম আর কিয়েটিং, গ্রেস মেঞ্জ, সেথ মল্টন, লরি ট্রাহান, জো উইলসন, জেমস সি মোলান, ডিনা টিটাস, জিরাল্ড ই কনলি, গাবে আমো, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ইলহান ওমর, নাইডিয়া ভেলাজকুয়েজ, ডেনিয়েল টি কিলডি এবং বারবারা লি।

জনপ্রিয়

নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ২২ সিনেটরের চিঠি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেনকে চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাস্ট্রের ২২ জন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান। তারা উল্লেখ করেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার ছাত্রদের বিক্ষোভ দমনে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করেছে এবং সহিংসতা ও সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এডওয়ার্ড মার্কির ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত চিঠির সূত্রমতে।

চিঠিতে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির ২০২৪ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, সরকারি চাকরির কোটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সহিংসতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পুলিশ, বিক্ষোভকারী, বিরোধী কর্মী ও সরকারপন্থি সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ১৭০জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

এছাড়াও, বিক্ষোভের জবাবে বাংলাদেশ সরকার নিষেধাজ্ঞায় থাকা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ব্যবহার করেছে এবং টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কঠোর কারফিউ ও ‘দেখামাত্রই গুলি করার’ নির্দেশ দিয়েছে এবং ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রকে সকল সহিংসতার নিন্দা করতে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা চেয়েছেন, বিক্ষোভ দমনে যেসব সরকারি কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক।

বাংলাদেশের এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চিঠিটিতে। তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশীদার হতে হবে, যারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকারের অধিকারের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।

চিঠিতে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে, মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানরা বলেছেন, আটককৃতদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তি পেলেও, এখনো অনেকেই কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া, গণমাধ্যমকর্মী ও সরকার-বিরোধী সমালোচকদের অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে হয়রানি, নজরদারি এবং শারীরিক আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি কঠোর ডিজিটাল সেন্সরশিপও অব্যাহত রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইন ব্যবস্থার উন্নতি করতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী মার্কিন সিনেটরদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাডওয়ার্ড জে মার্কি, ক্রিস ভ্যান হোলান, টাম্মি বাল্ডউইন, জেফ্রি এ মার্কলে, ক্রিস্টোফার এস. মারফি, টিম কাইন এবং রিচার্ড জে ডারবিন। এছাড়াও, কংগ্রেসম্যানদের মধ্যে স্বাক্ষর করেছেন জেমস পি ম্যাকগভার্ন, উইলিয়াম আর কিয়েটিং, গ্রেস মেঞ্জ, সেথ মল্টন, লরি ট্রাহান, জো উইলসন, জেমস সি মোলান, ডিনা টিটাস, জিরাল্ড ই কনলি, গাবে আমো, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ইলহান ওমর, নাইডিয়া ভেলাজকুয়েজ, ডেনিয়েল টি কিলডি এবং বারবারা লি।