মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে শাহীন চাকলাদারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ড, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

  • যশোর অফিস।।
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৮৪

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জন হয়েছে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে শহরের চিত্রার মোড়ে অবস্থিত ১৪ তলা ওই হোটেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

যশোর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক এএম মামুন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে, জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. প্রার্থ প্রতীম চক্রবর্তী গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে জানান পর্যন্ত জাবির হোটেলে অগ্নিকান্ডের ঘটনায়  প্রায় দেড়শোর বেশি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। নিহতদের মরদেহ মর্গে রয়েছে।

এদিকে গতকাল সোমবার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বিকেল ৫টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা সমন্বয়ক রাশেদ খান জানান, বিজয় মিছিল নিয়ে আমরা চিত্রার মোড় অতিক্রম করার সময় আমাদের মিছিলের পেছন থেকে কিছু দুর্বৃত্ত এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। আমাদের ছাত্র সমাজের কেউ এমন নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয় এবং এর আগেও তারা কোনো নাশকতা করেনি।

যশোরে জামায়াতের শোকরানা নফল নামাজ আদায় ,শান্তি শৃংখলা বজায়ের আহবান

যশোরে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে রাজপথে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করেছে জামায়াতে ইসলামীর কয়েক হাজার হাজার নেতা-কর্মী।

৬ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মোড়ে সড়কে শোকরানা নামাজ আদায় করেন। ইমামতি করেন জামায়াতের ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আজিজুর রহমান।

নামাজ আদায়ের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতা-কর্মী এবং জনগণের উদ্দেশ্যে দিক-নিদের্শনা মূলক বক্তৃতা করেন জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।

সব জায়গায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার আহবান জানিয়ে তারা বলেন, আওয়ামী দু:শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের পর দেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান ঘটেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন। এই আন্দোলনের বিজয়ের কৃতিত্ব ছাত্রদের।

বক্তারা বলেন, এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এখন নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কোন প্রকার হামলা, ভাংচুর সহিংসতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না।

আরও উল্লেখ করেন, দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নাই। সবাই আমরা বাংলাদেশী। সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের কাধে তুলে নিতে হবে।

সমাবেশ বক্তব্য রাখেন মাওলানা আজিজুর রহমান, শহর সাংগঠনিক জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল, সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মোস্তফা কামাল। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহবুদ্দিন বিশ্বাস।

নামাজ শেষে ঈদগাহ মোড় থেকে বিশাল বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ করে যশোরের আন্দোলনের প্রধান জমায়েত স্থান যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের চাঁচড়া চেকপোস্টে গিয়ে শেষ। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের সাথে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচি শেষ করা হয়।

এসময় ছাত্ররা অবস্থান কর্মসূচিতে কোন প্রকার দলীয় স্লোগান না দিতে অনুরোধ করেন। সমন্বয়কারীরা সাধারণ ছাত্র এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের বাড়ি-ঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তৃতাকালে আন্দোলনে সারাদেশে নিহত ছাত্রদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করা হয়। নিহত এবং আহত ছাত্রদের ক্ষতিপূরণ দেবার দাবিও জানান বক্তারা। #

যশোরে গণবিক্ষোভের পর থমথমে অবস্থা  

জনবিক্ষোভে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে। সর্বত্র বিরাজ করছে ভয় ও আতঙ্ক। বিশেষ করে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মী ও ক্যাডারদের মনে বিরাজ করছে এক অজানা শংকা। বিগত দিনে যে সব নেতাকর্মী অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি করেছিলেন তারাই আজকের এই গণবিক্ষোভে জনরোষের শিকার হচ্ছেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এদিকে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট প্রতিরোধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াত তার নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে পালাক্রমে ডিউটি করছেন বিএনপি, জামায়াত-শিবির, মাদ্রাসার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। এদিকে গতকাল বিক্ষুব্ধ জনতার ক্রোধের শিকার হয়ে যশোর শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা বিকেলে পরিস্কারে নামেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় গোটা শহরে আন্দোলনকারীদের তান্ডব চললেও কোথায় দেখা মেলেনি আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্যকে। তবে বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গতকাল রাত থেকে যশোরের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী অফিস, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পাহারা দিয়েছেন।

এদিকে যশোরের সীমান্ত দিয়ে যাতে কোন অপরাধী পালিয়ে ভারতে চলে যেতে না পারে সেই জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে বেনাপোল, পুটখালী, গোগা, মাসিলা, আন্দুলিয়া, বেলতা, কাশিপুরসহ গোটা এলাকায় পালাক্রমে পাহারা বসানো হয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন প্রবেশ মুখে বিজিবিকে রাখা হয়েছে সতর্কাবস্থায়। তবে জেলা শহরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলাতে কমবেশী হামলা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনার যেন পুনুরাবৃত্তি না ঘটে সেই জন্য এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকিংয়ে সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানানো হচ্ছে।

এদিকে কয়েকদিন বিরত থাকার পর আজ থেকে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরেছে বেনাপোল স্থল বন্দর ও নওয়াপাড়া নৌবন্দরে। সকাল থেকে বন্দরে ভারতীয় পন্যবাহী শত শত ট্রাক বেনাপোল বন্দর ইয়ার্ডে প্রবেশ করে। বেনাপোল বন্দর থেকে কয়েকশ’ বাংলাদেশী পন্যবাহী ট্রাকও ভারতের পেট্রাপোলে প্রবেশ করে। বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের মধ্যে জন চলাচল শুরু হয়েছ্ েতবে ভারতগামী যাত্রীদের কে কঠোরভাবে তল্লাসী করা হচ্ছে। ডগ স্কোয়ার্ড দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের তল্লাসীর পাশাপাশি তাদেরকে বিশেষ ভাবে নজরদারি করছে ইমিগ্রেশন কতৃপক্ষ।

এদিকে গত রাতের সহিংসতায় যশোরের ৮টি উপজেলা বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আক্রান্ত হয়ে ১৫৬ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডাক্তার হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন। যাদের অধিকাংশই মারপিটের ও হামলার শিকার।এদের মধ্যে ২জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। #

যশোরে ১৪ বছর পর আজান দিয়ে জেলা কার্যালয়ে ঢুকলেন জামায়াত নেতারা

যশোরে দীর্ঘ ১৪ বছর পর দলের কার্যালয় খুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দরা। আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার(৬আগস্ট) বিকাল ৫.৩০মিনিটে দলটির নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এ সময় যশোর জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক  গোলাম রসুল নেতা-কর্মী এবং জনগণের উদ্দেশ্যে দিক-নিদের্শনা মূলক বক্তব্য দেন । তিনি বলেন  সব জায়গায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে হবে । আওয়ামী দু:শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের পর দেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান ঘটেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন। এই আন্দোলনের বিজয়ের কৃতিত্ব ছাত্রদের। এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এখন নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কোন প্রকার হামলা, ভাংচুর সহিংসতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না।

সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের কাধে তুলে নিতে হবে।   আরো বক্তব্য রাখেন  জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কূদ্দুস। এসময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন । আজানের মধ্যদিয়ে  কার্যালয়টি খোলা হয়। নেতারা দীর্ঘদিন পর কার্যালয়ে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বিশেষ মোনাজাত করেন।

২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর  যশোর জেলা অফিস বন্ধ  করে বলে জানান  জামায়াতে ইসলামীর যশোরের নেতৃবৃন্দরা

জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বাগেরহাটে ‎যুবদলের কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল

যশোরে শাহীন চাকলাদারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ড, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জন হয়েছে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে শহরের চিত্রার মোড়ে অবস্থিত ১৪ তলা ওই হোটেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

যশোর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক এএম মামুন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে, জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. প্রার্থ প্রতীম চক্রবর্তী গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে জানান পর্যন্ত জাবির হোটেলে অগ্নিকান্ডের ঘটনায়  প্রায় দেড়শোর বেশি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। নিহতদের মরদেহ মর্গে রয়েছে।

এদিকে গতকাল সোমবার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বিকেল ৫টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা সমন্বয়ক রাশেদ খান জানান, বিজয় মিছিল নিয়ে আমরা চিত্রার মোড় অতিক্রম করার সময় আমাদের মিছিলের পেছন থেকে কিছু দুর্বৃত্ত এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। আমাদের ছাত্র সমাজের কেউ এমন নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয় এবং এর আগেও তারা কোনো নাশকতা করেনি।

যশোরে জামায়াতের শোকরানা নফল নামাজ আদায় ,শান্তি শৃংখলা বজায়ের আহবান

যশোরে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করে রাজপথে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করেছে জামায়াতে ইসলামীর কয়েক হাজার হাজার নেতা-কর্মী।

৬ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মোড়ে সড়কে শোকরানা নামাজ আদায় করেন। ইমামতি করেন জামায়াতের ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আজিজুর রহমান।

নামাজ আদায়ের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতা-কর্মী এবং জনগণের উদ্দেশ্যে দিক-নিদের্শনা মূলক বক্তৃতা করেন জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।

সব জায়গায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার আহবান জানিয়ে তারা বলেন, আওয়ামী দু:শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের পর দেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান ঘটেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন। এই আন্দোলনের বিজয়ের কৃতিত্ব ছাত্রদের।

বক্তারা বলেন, এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এখন নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কোন প্রকার হামলা, ভাংচুর সহিংসতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না।

আরও উল্লেখ করেন, দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নাই। সবাই আমরা বাংলাদেশী। সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের কাধে তুলে নিতে হবে।

সমাবেশ বক্তব্য রাখেন মাওলানা আজিজুর রহমান, শহর সাংগঠনিক জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল, সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর সভাপতি মোস্তফা কামাল। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহবুদ্দিন বিশ্বাস।

নামাজ শেষে ঈদগাহ মোড় থেকে বিশাল বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ করে যশোরের আন্দোলনের প্রধান জমায়েত স্থান যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের চাঁচড়া চেকপোস্টে গিয়ে শেষ। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের সাথে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচি শেষ করা হয়।

এসময় ছাত্ররা অবস্থান কর্মসূচিতে কোন প্রকার দলীয় স্লোগান না দিতে অনুরোধ করেন। সমন্বয়কারীরা সাধারণ ছাত্র এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের বাড়ি-ঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তৃতাকালে আন্দোলনে সারাদেশে নিহত ছাত্রদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করা হয়। নিহত এবং আহত ছাত্রদের ক্ষতিপূরণ দেবার দাবিও জানান বক্তারা। #

যশোরে গণবিক্ষোভের পর থমথমে অবস্থা  

জনবিক্ষোভে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে। সর্বত্র বিরাজ করছে ভয় ও আতঙ্ক। বিশেষ করে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেতাকর্মী ও ক্যাডারদের মনে বিরাজ করছে এক অজানা শংকা। বিগত দিনে যে সব নেতাকর্মী অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি করেছিলেন তারাই আজকের এই গণবিক্ষোভে জনরোষের শিকার হচ্ছেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এদিকে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট প্রতিরোধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াত তার নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে পালাক্রমে ডিউটি করছেন বিএনপি, জামায়াত-শিবির, মাদ্রাসার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। এদিকে গতকাল বিক্ষুব্ধ জনতার ক্রোধের শিকার হয়ে যশোর শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আবর্জনা বিকেলে পরিস্কারে নামেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় গোটা শহরে আন্দোলনকারীদের তান্ডব চললেও কোথায় দেখা মেলেনি আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্যকে। তবে বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গতকাল রাত থেকে যশোরের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী অফিস, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পাহারা দিয়েছেন।

এদিকে যশোরের সীমান্ত দিয়ে যাতে কোন অপরাধী পালিয়ে ভারতে চলে যেতে না পারে সেই জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে বেনাপোল, পুটখালী, গোগা, মাসিলা, আন্দুলিয়া, বেলতা, কাশিপুরসহ গোটা এলাকায় পালাক্রমে পাহারা বসানো হয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন প্রবেশ মুখে বিজিবিকে রাখা হয়েছে সতর্কাবস্থায়। তবে জেলা শহরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলাতে কমবেশী হামলা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনার যেন পুনুরাবৃত্তি না ঘটে সেই জন্য এলাকায় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকিংয়ে সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানানো হচ্ছে।

এদিকে কয়েকদিন বিরত থাকার পর আজ থেকে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরেছে বেনাপোল স্থল বন্দর ও নওয়াপাড়া নৌবন্দরে। সকাল থেকে বন্দরে ভারতীয় পন্যবাহী শত শত ট্রাক বেনাপোল বন্দর ইয়ার্ডে প্রবেশ করে। বেনাপোল বন্দর থেকে কয়েকশ’ বাংলাদেশী পন্যবাহী ট্রাকও ভারতের পেট্রাপোলে প্রবেশ করে। বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের মধ্যে জন চলাচল শুরু হয়েছ্ েতবে ভারতগামী যাত্রীদের কে কঠোরভাবে তল্লাসী করা হচ্ছে। ডগ স্কোয়ার্ড দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের তল্লাসীর পাশাপাশি তাদেরকে বিশেষ ভাবে নজরদারি করছে ইমিগ্রেশন কতৃপক্ষ।

এদিকে গত রাতের সহিংসতায় যশোরের ৮টি উপজেলা বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আক্রান্ত হয়ে ১৫৬ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডাক্তার হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন। যাদের অধিকাংশই মারপিটের ও হামলার শিকার।এদের মধ্যে ২জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। #

যশোরে ১৪ বছর পর আজান দিয়ে জেলা কার্যালয়ে ঢুকলেন জামায়াত নেতারা

যশোরে দীর্ঘ ১৪ বছর পর দলের কার্যালয় খুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দরা। আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার(৬আগস্ট) বিকাল ৫.৩০মিনিটে দলটির নেতা-কর্মীরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এ সময় যশোর জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক  গোলাম রসুল নেতা-কর্মী এবং জনগণের উদ্দেশ্যে দিক-নিদের্শনা মূলক বক্তব্য দেন । তিনি বলেন  সব জায়গায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে হবে । আওয়ামী দু:শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের অত্যাচার-নির্যাতনের পর দেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান ঘটেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়েছেন। এই আন্দোলনের বিজয়ের কৃতিত্ব ছাত্রদের। এটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। এখন নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কোন প্রকার হামলা, ভাংচুর সহিংসতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না।

সবার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের কাধে তুলে নিতে হবে।   আরো বক্তব্য রাখেন  জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কূদ্দুস। এসময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন । আজানের মধ্যদিয়ে  কার্যালয়টি খোলা হয়। নেতারা দীর্ঘদিন পর কার্যালয়ে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বিশেষ মোনাজাত করেন।

২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর  যশোর জেলা অফিস বন্ধ  করে বলে জানান  জামায়াতে ইসলামীর যশোরের নেতৃবৃন্দরা