সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনাপোল চেকপোস্টে প্রতারকদের ৮ টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিল পুলিশ 

বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় প্রতিনিয়ত। প্রতারণা করে পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ টাকা নিচ্ছে প্রতারকচক্র। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে প্রতারকচক্রের ৮ টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

গত সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ৮ জন পাসপোর্টধারী যাত্রীর কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা প্রতারণা করে নিয়ে নেয়।  এ ঘটনায় বেনাপোল চেকপোস্টের একটি মার্কেটের গলি থেকে দুজনের ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিয়েছেন স্থানীয় বিজিবি, বন্দর ও বাজার কমিটি। প্রতারকচক্রের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় বাকি  টাকা উদ্ধার  করা সম্ভব হয়নি।

 প্রতিদিন  হাজার হাজার দেশি, বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। যাত্রীরা রাত ৩টার দিকে বাস থেকে নামার পর বন্দরের বাস টার্মিনাল ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থেকে পাসপোর্ট ফরম ও ভ্রমণ কর কেটে দেয়ার কথা বলে কিছু চিহ্নিত ছিনতাইকারী বিভিন্ন অলি গলিতে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার নাম্বার এন্টির কথা বলে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে এসব ঘটনা ঘটলেও মিলছে না কোন প্রতিকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের আশপাশে গোপনে বসে থাকে দালাল পরিচয়ের প্রতারকচক্রের সদস্যরা। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের এরা টার্গেট করে। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলে তারা বিভিন্ন মার্কেটের গলিতে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকা ছিনতাই করছে। এসব ছিনতাইকারীদের ভয়ে স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ এরা দলে অনেক ভারী।

গত সোমবার প্রতারকের কবলে পড়া খুলনার সাগর হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি ভারতে গমনের উদ্দেশ্যে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে কয়েকজন লোক তাকে বলে অনলাইনে ভ্রমণ ট্যাক্স জমা দিলে তারা বন্দরের লম্বা লাইনের আগে ইমিগ্রেশনে পৌঁছে দিবে। পরে তাকে পাশের একটি মার্কেটের গলিতে কম্পিউটারের দোকানে বসায়। সেখানে ট্যাক্স জমা দেয়ার পর তার কাছে থাকা টাকার নাম্বার লিখতে হবে জানিয়ে ঐ ঘরের পাশের রুমে বসায় ছিনতাইকারীরা। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ৫২ হাজার টাকা নিয়ে আবার ফেরত দেয়। পরে সন্দেহ হলে গুনে দেখেন সেখান থেকে ২৩ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলেছে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে বন্দর ও বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় ৭ হাজার টাকা প্রতারকচক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে পাশেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘুরাফেরা করলেও তারা কিছুই দেখে না।

বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, প্রতারণার অভিযোগে অনেকবার প্রতারকচক্রের দোকানে তালা ঝুলিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে আটকও করা হয়েছে। তবে তারা জেল থেকে ফিরে এসে আবারও সেই অপরাধ করছে। প্রতারণা পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে পুলিশকে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা করতে হবে।আর যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতারণা মাধ্যমে নেওয়া টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জনপ্রিয়

যশোরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবক জখম

বেনাপোল চেকপোস্টে প্রতারকদের ৮ টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিল পুলিশ 

প্রকাশের সময় : ০৯:০৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় প্রতিনিয়ত। প্রতারণা করে পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ টাকা নিচ্ছে প্রতারকচক্র। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে প্রতারকচক্রের ৮ টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

গত সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ৮ জন পাসপোর্টধারী যাত্রীর কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা প্রতারণা করে নিয়ে নেয়।  এ ঘটনায় বেনাপোল চেকপোস্টের একটি মার্কেটের গলি থেকে দুজনের ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিয়েছেন স্থানীয় বিজিবি, বন্দর ও বাজার কমিটি। প্রতারকচক্রের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় বাকি  টাকা উদ্ধার  করা সম্ভব হয়নি।

 প্রতিদিন  হাজার হাজার দেশি, বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। যাত্রীরা রাত ৩টার দিকে বাস থেকে নামার পর বন্দরের বাস টার্মিনাল ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থেকে পাসপোর্ট ফরম ও ভ্রমণ কর কেটে দেয়ার কথা বলে কিছু চিহ্নিত ছিনতাইকারী বিভিন্ন অলি গলিতে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার নাম্বার এন্টির কথা বলে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে এসব ঘটনা ঘটলেও মিলছে না কোন প্রতিকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের আশপাশে গোপনে বসে থাকে দালাল পরিচয়ের প্রতারকচক্রের সদস্যরা। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের এরা টার্গেট করে। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলে তারা বিভিন্ন মার্কেটের গলিতে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকা ছিনতাই করছে। এসব ছিনতাইকারীদের ভয়ে স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ এরা দলে অনেক ভারী।

গত সোমবার প্রতারকের কবলে পড়া খুলনার সাগর হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি ভারতে গমনের উদ্দেশ্যে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে কয়েকজন লোক তাকে বলে অনলাইনে ভ্রমণ ট্যাক্স জমা দিলে তারা বন্দরের লম্বা লাইনের আগে ইমিগ্রেশনে পৌঁছে দিবে। পরে তাকে পাশের একটি মার্কেটের গলিতে কম্পিউটারের দোকানে বসায়। সেখানে ট্যাক্স জমা দেয়ার পর তার কাছে থাকা টাকার নাম্বার লিখতে হবে জানিয়ে ঐ ঘরের পাশের রুমে বসায় ছিনতাইকারীরা। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ৫২ হাজার টাকা নিয়ে আবার ফেরত দেয়। পরে সন্দেহ হলে গুনে দেখেন সেখান থেকে ২৩ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলেছে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে বন্দর ও বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় ৭ হাজার টাকা প্রতারকচক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে পাশেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘুরাফেরা করলেও তারা কিছুই দেখে না।

বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, প্রতারণার অভিযোগে অনেকবার প্রতারকচক্রের দোকানে তালা ঝুলিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে আটকও করা হয়েছে। তবে তারা জেল থেকে ফিরে এসে আবারও সেই অপরাধ করছে। প্রতারণা পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে পুলিশকে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা করতে হবে।আর যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতারণা মাধ্যমে নেওয়া টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।