শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৭ ইসরায়েলি গুপ্তচর গ্রেপ্তার ইরানে

ইসরায়েলে দেশটির সাত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের অংশ। তারা ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার জন্য ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও জ্বালানি অবকাঠামোর তথ্য সংগ্রহ করছিল। ইসরায়েলি পুলিশ সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুসারে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ও পুলিশ একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে ‘ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে কাজ করা সাত ইসরায়েলি নাগরিকের একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সফলভাবে ধ্বংস করেছে’ এবং সাতজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই সাতজন ইসরায়েলের হাইফা শহর ও দেশের উত্তরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘এই নেটওয়ার্কটি আইডিএফ (ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী) ঘাঁটি ও জ্বালানি অবকাঠামোর সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।’ইসরায়েলি তদন্তে দেখা গেছে, এই গোষ্ঠীটি দুই বছর ধরে ‘আলখান ও ওরখান’ নামে পরিচিত দুই ইরানি এজেন্টের নির্দেশে বিভিন্ন মিশন পরিচালনা করেছে। পুলিশ বলেছে, ‘নেটওয়ার্কের সদস্যরা জানতেন, তাদের দেওয়া গোয়েন্দা তথ্য জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে এবং শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাহায্য করতে পারে। নেটওয়ার্কটি সারা দেশে আইডিএফ ঘাঁটিতে ব্যাপক নজরদারি মিশন পরিচালনা করেছে, বিশেষ করে বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর ঘাঁটি, বন্দর, আয়রন ডোম সিস্টেমের অবস্থান এবং হাদেরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো জ্বালানি অবকাঠামোতে।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, এই গোষ্ঠীটি এসব কাজের বিনিময়ে কয়েক লাখ ডলার পেয়েছে, যার বেশির ভাগই ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এই কাজে প্রায়ই কৌশলগত স্থানগুলোর ছবি তোলা ও নথি তৈরি করা হতো, যা পরে ইরানি এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করা হতো। পাশাপাশি ইরানি এজেন্টদের নির্দেশে নেটওয়ার্কের সদস্যদের কয়েকজন ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজও দেওয়া হয়েছিল।পুলিশ বিবৃতিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘তদন্তের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের সদস্যদের সংগৃহীত উল্লেখযোগ্য তথ্য জব্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ইসরায়েলের বিভিন্ন আইডিএফ ঘাঁটি, বন্দর ও জ্বালানি অবকাঠামোর অনেক ছবি ও ভিডিও রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই কার্যক্রমগুলো দেশের নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’এই ঘোষণাটি এমন এক সময় এলো, যখন কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছিল, তারা এক ইরানের নিয়োগকৃত এক ইসরায়েলিকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে আশকেলনের বাসিন্দা মোর্দেচাই মামান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, যিনি তুরস্কে বাস করতেন এবং ইরানে সফর করেছিলেন।

এদিকে ইসরায়েল বর্তমানে হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মতো ইরান সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে বহুমুখী সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। ১ অক্টোবর তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছে দেশটি।
জনপ্রিয়

টাঙ্গাইলের শাড়ি পরে বড়দিন উদযাপন করলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার

৭ ইসরায়েলি গুপ্তচর গ্রেপ্তার ইরানে

প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

ইসরায়েলে দেশটির সাত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের অংশ। তারা ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার জন্য ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও জ্বালানি অবকাঠামোর তথ্য সংগ্রহ করছিল। ইসরায়েলি পুলিশ সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুসারে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা ও পুলিশ একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে ‘ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে কাজ করা সাত ইসরায়েলি নাগরিকের একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সফলভাবে ধ্বংস করেছে’ এবং সাতজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই সাতজন ইসরায়েলের হাইফা শহর ও দেশের উত্তরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘এই নেটওয়ার্কটি আইডিএফ (ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী) ঘাঁটি ও জ্বালানি অবকাঠামোর সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।’ইসরায়েলি তদন্তে দেখা গেছে, এই গোষ্ঠীটি দুই বছর ধরে ‘আলখান ও ওরখান’ নামে পরিচিত দুই ইরানি এজেন্টের নির্দেশে বিভিন্ন মিশন পরিচালনা করেছে। পুলিশ বলেছে, ‘নেটওয়ার্কের সদস্যরা জানতেন, তাদের দেওয়া গোয়েন্দা তথ্য জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে এবং শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাহায্য করতে পারে। নেটওয়ার্কটি সারা দেশে আইডিএফ ঘাঁটিতে ব্যাপক নজরদারি মিশন পরিচালনা করেছে, বিশেষ করে বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর ঘাঁটি, বন্দর, আয়রন ডোম সিস্টেমের অবস্থান এবং হাদেরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো জ্বালানি অবকাঠামোতে।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, এই গোষ্ঠীটি এসব কাজের বিনিময়ে কয়েক লাখ ডলার পেয়েছে, যার বেশির ভাগই ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এই কাজে প্রায়ই কৌশলগত স্থানগুলোর ছবি তোলা ও নথি তৈরি করা হতো, যা পরে ইরানি এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করা হতো। পাশাপাশি ইরানি এজেন্টদের নির্দেশে নেটওয়ার্কের সদস্যদের কয়েকজন ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজও দেওয়া হয়েছিল।পুলিশ বিবৃতিতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘তদন্তের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের সদস্যদের সংগৃহীত উল্লেখযোগ্য তথ্য জব্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ইসরায়েলের বিভিন্ন আইডিএফ ঘাঁটি, বন্দর ও জ্বালানি অবকাঠামোর অনেক ছবি ও ভিডিও রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই কার্যক্রমগুলো দেশের নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’এই ঘোষণাটি এমন এক সময় এলো, যখন কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছিল, তারা এক ইরানের নিয়োগকৃত এক ইসরায়েলিকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে আশকেলনের বাসিন্দা মোর্দেচাই মামান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, যিনি তুরস্কে বাস করতেন এবং ইরানে সফর করেছিলেন।

এদিকে ইসরায়েল বর্তমানে হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মতো ইরান সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে বহুমুখী সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। ১ অক্টোবর তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছে দেশটি।