বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহকে গার্ড অব অনার দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১০ টায় নিজ গ্রাম যশোরের বেলাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়ায় পৌঁছায় আব্দুল্লাহর লাশ। লাশ আসার পর নিহতের কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাকে একনজর দেখতে ছুটে আসে গ্রামের শতশত লোকজন।
বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় শহীদ আব্দুল্লাহর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে তাকে পুলিশের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে মরহুমের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিব হাসান। তার নামাজে জানাজায় বিএনপি জামায়াত সহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের কয়েক হাজার মানুষ অংশ গ্রহন করেন। জানাজা শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবর স্থানে নানা-নানীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যান। মেধাবী ছাত্র আব্দুল্লাহ যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া টার্মিনাল পাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জব্বাবের ছেলে। মা মাবিয়া বেগম। তারা তিন ভাই ও এক বোন। আব্দুল্লাহ ছিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন।
প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এরপর তাকে বেনাপোলের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।

বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

জনপ্রিয়

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে বিএনপি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শতাধিক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

প্রকাশের সময় : ০৫:১২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহকে গার্ড অব অনার দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ১০ টায় নিজ গ্রাম যশোরের বেলাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়ায় পৌঁছায় আব্দুল্লাহর লাশ। লাশ আসার পর নিহতের কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাকে একনজর দেখতে ছুটে আসে গ্রামের শতশত লোকজন।
বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় শহীদ আব্দুল্লাহর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে তাকে পুলিশের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে মরহুমের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিব হাসান। তার নামাজে জানাজায় বিএনপি জামায়াত সহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের কয়েক হাজার মানুষ অংশ গ্রহন করেন। জানাজা শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবর স্থানে নানা-নানীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যান। মেধাবী ছাত্র আব্দুল্লাহ যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া টার্মিনাল পাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জব্বাবের ছেলে। মা মাবিয়া বেগম। তারা তিন ভাই ও এক বোন। আব্দুল্লাহ ছিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন।
প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এরপর তাকে বেনাপোলের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।

বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।