মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনাপোলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন, দুর্ভোগে যাত্রীরা

বেনাপোলে অনিদৃষ্টকালের জন্য দুরপাল্লার পরিবহণ ধর্মঘটের আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন চলছে। ফলে ভারত গমনাগমন পাসপোর্ট  যাত্রীদের দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বেনাপোল পৌরসভা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট থেকে দিবা ও নৈশ পরিবহনগুলো ২ কি. মি. দূরে নিয়ে যাওয়ায়। গতকাল শনিবার থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো অনিদৃষ্টকালের এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। সরকার পাসপোর্ট  যাত্রীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য বেনাপোল চেকপোস্টে ৩০ কোটি ব্যায়ে বিশাল পরিবহন টারইমনাল নির্মাণ করে। ফলে যাত্রীরা দ্রুততম সময়ে পায়ে হেটে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ভারতে যাতায়াত করতো। হঠাৎ কওে পৌরসভার এ সীদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে পাসপোর্ট যাত্রীসহ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।

পরিবহণ বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বেনাপোলের বিভিন্ন  স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে নারী শিশু, বৃদ্ধ, রোগীরা সবচেয়ে বেশী কস্ট পাচ্ছে।  অনেকে বেনাপোল থেকে ইজিবাইক ও লোকাল বাসে করে যশোর যাচেছ। সেখান থেকে ট্রেনে করে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে  যাচ্ছে।

বেনাপোলে যানজট নিরসনের নামে গত সপ্তাহে যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে স্থানীয় লোকজন ও পরিবহন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বেনাপোল চেকপোস্টে বন্দরের নিজস্ব পরিবহন টার্মিনাল থাকা সত্বেও চেকপোস্ট থেকে ২ কি: মি: দূরে ভারতগামী যাত্রীদের পৌরসভার টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হচেছ রাত ৩ টায়। যা পাসপোর্ট  যাত্রীদের জন্য খুবই কস্টকর। ফলে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পরিবহন টার্মিনালটি অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বন্দরের পরিবহন টার্মিনাল থকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় বন্ধ রয়েছে।

পাসপোর্ট  যাত্রীরা এ ধরনের হয়রানিমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না। গত ২০ বছর ধরে ঢাকা চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নৈশ ও দিবা পরিবহন  গুলো যাত্রীদের সরাসরি চেকপোস্টে বন্দরের টার্মিনালে নামিয়ে দিয়ে আসছে। পরে খালি পরিবহন গুলো বন্দরের টার্মিনালে রাখা হতো।

ফলে বন্দরে যেমন রাজস্ব আয় হতো তেমনি যাত্রীরাও পায়ে হেটে ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করতে পারতো।

অনেক পাসপোর্ট যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী ভারতীয় চেকপোস্টে  পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী পরিবহন টার্মিনাল। বাংলাদেশে বর্ডারে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট  যাত্রীদের।

পাসপোর্ট যাত্রী তুহিন হোসেন জানান,  ঢাকা থেকে পরিবহনে এসে বর্ডার থেকে ২ কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে বাস থেকে রাত ৩ টা নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২ ঘন্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর একটা ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি। একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীর নিকট থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর পোর্ট ব্যবহারের জন্য টাকা নিয়ে থাকেন।তাহলে পোর্ট আমাদের কি সেবা দিলো।আমরা চাই স্থলবন্দরে চেকপোস্টে অবস্থিত পরিবহন টার্মিনাল থেকে বাস গুলো চালু হোক।

এ ব্যাপারে  পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সাথে আমাদের এবং স্থানীয়  সুধী সমাজের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।বৈঠকে যানজটের কথা বলে সকল পরিবহন বাস গুলি চেকপোস্টের টার্মিনাল  থেকে সরিয়ে নিয়ে বেনাপোল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে কাগজপুকুর টার্মিনাল নিয়ে যায় এবং গাড়ি সেখান থেকেই ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলি যাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে কাগজপুকুর চলে যাচ্ছিল।

হঠাৎ করে গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত তিনটার দিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দুরপাল্লার  পরিবহন বাসগুলো আসার পর যাত্রীদের জোরপূর্ব টার্মিনালে নামিয়ে দেয়। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং নানা ধরনের হয়রানি শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীগুলো লোকাল বাসে করে চেকপোষ্টে পাঠান টার্মিনালের থাকা পৌর সভার লোকজন ।

প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে কোন গাড়ি ছাড়িনি এবং বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন বাস এবং দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি।

বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক কাজী নাজিব হাসান বলেন, রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে সকল দুর পাল্লার পরিবহন বেনাপোল চেকপোস্টে যেতে পারবে। বন্দরে যানজট নিরসনের জন্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। তবে বন্দরের যে পরিবহন টার্মিনাল বর্তমানে খালি অবস্থায় পড়ে আছে। কেন টার্মিনাল খালি পড়ে আছে এটা তাদের বিষয়, এটা আমাদের বিষয় নয়।

জনপ্রিয়

কুবিতে বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত

বেনাপোলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন, দুর্ভোগে যাত্রীরা

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

বেনাপোলে অনিদৃষ্টকালের জন্য দুরপাল্লার পরিবহণ ধর্মঘটের আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন চলছে। ফলে ভারত গমনাগমন পাসপোর্ট  যাত্রীদের দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বেনাপোল পৌরসভা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট থেকে দিবা ও নৈশ পরিবহনগুলো ২ কি. মি. দূরে নিয়ে যাওয়ায়। গতকাল শনিবার থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো অনিদৃষ্টকালের এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। সরকার পাসপোর্ট  যাত্রীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য বেনাপোল চেকপোস্টে ৩০ কোটি ব্যায়ে বিশাল পরিবহন টারইমনাল নির্মাণ করে। ফলে যাত্রীরা দ্রুততম সময়ে পায়ে হেটে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ভারতে যাতায়াত করতো। হঠাৎ কওে পৌরসভার এ সীদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে পাসপোর্ট যাত্রীসহ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো।

পরিবহণ বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বেনাপোলের বিভিন্ন  স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে নারী শিশু, বৃদ্ধ, রোগীরা সবচেয়ে বেশী কস্ট পাচ্ছে।  অনেকে বেনাপোল থেকে ইজিবাইক ও লোকাল বাসে করে যশোর যাচেছ। সেখান থেকে ট্রেনে করে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে  যাচ্ছে।

বেনাপোলে যানজট নিরসনের নামে গত সপ্তাহে যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে স্থানীয় লোকজন ও পরিবহন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বেনাপোল চেকপোস্টে বন্দরের নিজস্ব পরিবহন টার্মিনাল থাকা সত্বেও চেকপোস্ট থেকে ২ কি: মি: দূরে ভারতগামী যাত্রীদের পৌরসভার টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হচেছ রাত ৩ টায়। যা পাসপোর্ট  যাত্রীদের জন্য খুবই কস্টকর। ফলে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পরিবহন টার্মিনালটি অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বন্দরের পরিবহন টার্মিনাল থকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় বন্ধ রয়েছে।

পাসপোর্ট  যাত্রীরা এ ধরনের হয়রানিমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না। গত ২০ বছর ধরে ঢাকা চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নৈশ ও দিবা পরিবহন  গুলো যাত্রীদের সরাসরি চেকপোস্টে বন্দরের টার্মিনালে নামিয়ে দিয়ে আসছে। পরে খালি পরিবহন গুলো বন্দরের টার্মিনালে রাখা হতো।

ফলে বন্দরে যেমন রাজস্ব আয় হতো তেমনি যাত্রীরাও পায়ে হেটে ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করতে পারতো।

অনেক পাসপোর্ট যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী ভারতীয় চেকপোস্টে  পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী পরিবহন টার্মিনাল। বাংলাদেশে বর্ডারে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট  যাত্রীদের।

পাসপোর্ট যাত্রী তুহিন হোসেন জানান,  ঢাকা থেকে পরিবহনে এসে বর্ডার থেকে ২ কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে বাস থেকে রাত ৩ টা নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২ ঘন্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর একটা ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি। একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীর নিকট থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর পোর্ট ব্যবহারের জন্য টাকা নিয়ে থাকেন।তাহলে পোর্ট আমাদের কি সেবা দিলো।আমরা চাই স্থলবন্দরে চেকপোস্টে অবস্থিত পরিবহন টার্মিনাল থেকে বাস গুলো চালু হোক।

এ ব্যাপারে  পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সাথে আমাদের এবং স্থানীয়  সুধী সমাজের সাথে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।বৈঠকে যানজটের কথা বলে সকল পরিবহন বাস গুলি চেকপোস্টের টার্মিনাল  থেকে সরিয়ে নিয়ে বেনাপোল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে কাগজপুকুর টার্মিনাল নিয়ে যায় এবং গাড়ি সেখান থেকেই ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলি যাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে কাগজপুকুর চলে যাচ্ছিল।

হঠাৎ করে গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত তিনটার দিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দুরপাল্লার  পরিবহন বাসগুলো আসার পর যাত্রীদের জোরপূর্ব টার্মিনালে নামিয়ে দেয়। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং নানা ধরনের হয়রানি শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীগুলো লোকাল বাসে করে চেকপোষ্টে পাঠান টার্মিনালের থাকা পৌর সভার লোকজন ।

প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে কোন গাড়ি ছাড়িনি এবং বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন বাস এবং দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি।

বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক কাজী নাজিব হাসান বলেন, রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে সকল দুর পাল্লার পরিবহন বেনাপোল চেকপোস্টে যেতে পারবে। বন্দরে যানজট নিরসনের জন্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। তবে বন্দরের যে পরিবহন টার্মিনাল বর্তমানে খালি অবস্থায় পড়ে আছে। কেন টার্মিনাল খালি পড়ে আছে এটা তাদের বিষয়, এটা আমাদের বিষয় নয়।